ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির পথে

প্রকাশিত: ০৪:২২, ২৯ এপ্রিল ২০১৫

কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির পথে

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ভেটেরিনারি কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে একর পর এক বন্যপ্রাণী মারা যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পরিচর্যায় অবহেলা, বন্যপ্রাণী রক্ষণাবেক্ষণে খামখেয়ালি ও দায়সারাভাবে দায়িত্ব পালন করায় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে গত নয় বছরে শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী মারা গেছে। গত এক মাসের ব্যবধানে মারা গেছে ২টি হাতি। একই স্থানে একটানা নয় বছর ধরে ভেটেরিনারি সার্জন হিসেবে চাকরি করায় সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অন্য কর্মচারীরা সহজে কথা বলতে পারে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বন্যপ্রাণী,পশু-পাখিদের জন্য নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ হয়ে থাকে। সর্বশেষ কর্তব্যরত ভেটেরিনারি সার্জনের অবহেলার কারণে রবিবার ভোর রাতে মারা গেছে ৫বছর বয়সী একটি হাতির শাবক। ‘বনরাণী’ ও ‘শোভারাণী’ নামে দুটি হাতির শাবক বন্যপ্রাণী বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের দেশ সাইপ্রাইজের পাফোস বার্ড এ্যান্ড এ্যানিমেল পার্কে প্রেরণের জন্য রাখা হয়েছিল কক্সবাজারের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সরকারী দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে ‘শোভারাণী মারা গেছে। সূত্র জানায়, পার্কে গত এক মাসের ব্যবধানে ২টি হাতির মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন কানাঘুষা চলছে। পশুখাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার, ভেটেরিনারি সার্জন ও পার্ক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনেকে নিজেদের দোষ চাপাতে ঘন ঘন বৈঠক করে চলছে বলে জানা গেছে। পরপর দুইটি হাতি মারা যাওয়ার ঘটনায় পার্কে সৃষ্টি হয়েছে রহস্যজনক পরিস্থিতির। এদিকে পার্কের জীবজন্তু ও পশুপাখির জন্য প্রতিদিনের বরাদ্দ দেয়া খাদ্যও পরিমাণ মতো দেয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে পশুপাখি ও প্রাণীদের জন্য নিম্নমানের পশু খাদ্য সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। তবে ঠিকাদারের ওই অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করছেন। পার্কের বন্যপ্রাণী হাসপাতালে কর্মরত সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমানের অদক্ষতা এবং প্রাণী পরিচর্যায় অবহেলার কারণে পার্কে ৯ বছরে সুদূর আফ্রিকা থেকে সংগ্রহ ওয়াইবিস্ট, কুদুসহ বিলুপ্তপ্রায় অনেকগুলো তৃণভোজী প্রাণীসহ অন্তত শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী মারা গেছে। পার্কে কি কারণে হাতিটি মারা গেছে জানতে চাইলে সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঠিক কি কারণে মারা গেছেÑ তা এখন বলা যাচ্ছে না। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর বিষয়টি স্পষ্ট হবে। পার্কে বন্যপ্রাণী মারা যাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, মারা যাওয়া প্রাণীর পরিংসখ্যান রেজিস্ট্রার দেখে জানাতে হবে।
×