ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুই মেয়র প্রার্থীর প্রচারে ভোটারদের হিসেব নিকেষ

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২৭ এপ্রিল ২০১৫

দুই মেয়র প্রার্থীর প্রচারে ভোটারদের হিসেব  নিকেষ

ইউনুস মিয়া, ফটিকছড়ি ॥ আগামীকাল ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রথম থেকেই বেশ বেকায়দায় আছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। প্রার্থী নির্ধারণ নিয়ে এ জোট রীতিমতো হিমশিম খায়। তাদের প্রার্থীর তালিকায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক বাণিজ্য ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমানকে রেখে তার ছোট ভাই চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা ডাঃ মহসিন জিল্লুর রহমানের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠানো হলেও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির অধিকারী ড. হোসেন জিল্লুর রহমান তা নাকচ করে দেন। পরে ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করা মনজুরুল আলমকে ফের জোটের সমর্থন জানানো হয়। যদিও এ সমর্থনে সমর্থন নেই দীর্ঘদিন ধরে বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে মাঠে থাকা নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শাহাদাত হোসেনের। শীর্ষ নেতাদের চাপের মুখে ডাঃ শাহাদাত হোসেন মনজুর পক্ষে ভোট চাইলেও তার চোখে-মুখে অস্বস্তি ফুটে উঠেছে। এটি মনজুর জন্য অবশ্যই চিন্তার কারণ হতে পারে ব্যালেট বক্সে। শুধু তাই নয়, উত্তর চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ, মিরেরসরাই, সিতাকু-, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায় চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি মনোনীত, আওয়ামী লীগ সমর্থিত আ জ ম নাছির উদ্দীনের সমর্থনে বিভিন্ন কর্তা-প্রতিষ্ঠানের আহ্বানে লাগাতারভাবে সভা-সেমিনার, গণসংযোগ, ভোট প্রার্থনা চললেও চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলন ব্যানারের বিএনপির প্রার্থী মনজুরুল আলমকে নিয়ে কোন প্রকার মাতামাতি নেই। স্বয়ং নিজ দলের কাছে অপ্রিয় মনজু। বিগত সময়ে বিএনপির আন্দোলনে মাঠে না থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মনজুর সখ্যতা এ নির্বাচনে এবার তার পরাজয়ের কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞ মহল। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সহ-সভাপতি আ জ ম নাছির উদ্দীনের পক্ষে তার পৈতৃক বাড়ি ফটিকছড়ি, নানার বাড়ি রাউজানের এবং শ্বশুর বাড়ি রাঙ্গুনিয়ার যে সব বাসিন্দা নগরীতে ভোটার তাদের কাছে ছুটছেন ‘আমরা ফটিকছড়িবাসী’ এবং ‘ফটিকছড়ি নাগরিক কমিটি’র নেতারা। এ সব সংগঠনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ভোট প্রার্থনায় মাঠে নেমেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি, রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ও মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. মাহমুদ হাসানসহ অনেকেই। সাবেক চীপ হুইপ আব্দুল্লাহ আবুল হাসনাত, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা নাছিরের পক্ষে মাঠ চষে বেড়ালেও মনজুর পক্ষে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, নগর সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ্যাডভোটে মীর নাছির ছাড়া কেন্দ্রীয় কোন শীর্ষনেতা মাঠে নেই। বরং মেয়র মনজুর আলমের আপন ভাতিজা, সীতাকু-ের সরকারদলীয় সাংসদ দিদারুল আলম চাচার বিরুদ্ধে ভোট প্রার্থনা করায় বেশ বিপাকে বিএনপি। উত্তর চট্টগ্রামে আ জ ম নাছির উদ্দীনের সমর্থনে গণজোয়ার বইছে উল্লেখ করে হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও ধলই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ আবুল মনছুর বলেন, উত্তর চট্টগ্রামের বহু মানুষ পেশাগত কারণে নগরীতে অবস্থান করতে গিয়ে সেখানেই ভোটার হয়েছেন। আমরা তাদের ধারে ধারে ছুটছি এবং যোগ্য প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। চসিক নির্বাচনের একদিন বাকি থাকলেও উত্তর চট্টগ্রামের ৭ উপজেলার বাসিন্দারা যারা মহানগরীর ভোটার তারাই সম্মিলিতভাবে দলমত উপেক্ষা করে আ জ ম নাছির উদ্দীনকে বিজয়ী করার প্রত্যয় নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। উল্লিখিত উপজেলার বাসিন্দারা (যারা সিটির ভোটার) তারা নির্বাচনীর প্রাক মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়ালে নির্বাচনী প্রেক্ষাপট আ জ ম নাছিরের পক্ষে বদলে যেতে পারে বলে বিজ্ঞমহল ধারণা করছেন।
×