ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজাকার কমান্ডার ফোরকান মল্লিকের পক্ষে সাফাই সাক্ষী শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৭ এপ্রিল ২০১৫

রাজাকার কমান্ডার ফোরকান মল্লিকের পক্ষে সাফাই সাক্ষী শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত পটুয়াখালীর রাজাকার কমান্ডার মোঃ ফোরকান মল্লিকের পক্ষে সাফাই সাক্ষী শুরু হয়েছে। রবিবার প্রথম সাফাই সাক্ষী ইসহাক আলী খান জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দী শেষে প্রসিকিউশন পক্ষ সাক্ষীকে জেরা করেছেন। পরবর্তী সাফাই সাক্ষীর জন্য ৪ মে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ রবিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মোঃ মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মোঃ শাহিনুল ইসলাম। জবানবন্দী শেষে সাফাই সাক্ষীকে জেরা করেন প্রসিকিউটর মোঃ মোখলেসুর রহমান বাদল। সাফাই সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম ইসহাক আলী খান। পিতাÑ ইস্কান্দার আলী খান , গ্রাম- কলাগাছিয়া, থানাÑ মির্জাগঞ্জ, জেলাÑ পটুয়াখালী। আমার জন্ম ১৯৫০ সালের ১০ অক্টোবর। আমি ১৯৮৭ সালে সেনাবাহিনীর কর্পোরাল হিসেবে অবসর গ্রহণ করি। এরপর আমি বিসিআইসিতে চাকরি করি। স্বাধীনতা যুদ্ধের কিছু সময় পূর্বে আমি সেনাবাহিনীর রিক্রুট হিসেবে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সেন্টারে যোগ দেই। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর আমরা যখন চট্টগ্রামে ট্রেনিংরত ছিলাম তখন একদিন আমাদের ট্রেনিং সেন্টার চারদিক থেকে ঘেরাও করে পাহাড়ের উপর থেকে পাকিস্তানী সৈন্যরা আমাদের ওপর ব্রাশফায়ার করতে থাকে। ট্রেনিং ফিল্ড থেকে যে সব লোক পালিয়ে যেতে পেরেছিল তাদের মধ্যে আমি একজন। অন্যরা প্রায় সবাই নিহত হয়। এক পর্যায়ে আমি আমার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছি। সেখান থেকে আমি ও আরও কিছু ইপিআর সদস্য মঠবাড়িয়া থানার বোকাবুনিয়া ক্যাপ্টেন মেহেদি ইমামের নেতৃত্বে স্থাপিত মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে যোগদান করি। এরই এক পর্যায়ে আমি বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়ি চলে যাই। আমি সুস্থ হবার পর ফোরকান মল্লিককে আমি আমার সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পে যোগদান করি। ফোরকান মল্লিককে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করার জন্য তাকে নিয়ে গিয়েছিলাম। ওই সময় ফোরকান মল্লিক কোন এক মাস্টারের বাড়িতে কাজ করত বলে শুনেছি। সাফাই সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, ফোরকান মল্লিক সোর্স হিসেবে বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজাকার ও পাকিস্তান সেনাদের গতিবিধি ও ক্যাম্পসমূহের খবর ছদ্মবেশে সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জানাত। বাবুর্চি হিসেবেও সে যোগীবাড়ি মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে কাজ করত। তখন তার বয়স ছিল আনুমানিক ১০-১২ বছর। ১৯৭১ সালে বাংলা ভাদ্র মাস থেকে ফোরকান মল্লিক দেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই ছিল।
×