ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শাপলা চত্বরের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে জামায়াত শিবিরের সঙ্গে গোপন আঁতাত হেফাজতের

বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে মসজিদ মাদ্রাসায় সংঘবদ্ধ প্রচার

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২৭ এপ্রিল ২০১৫

বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে মসজিদ মাদ্রাসায় সংঘবদ্ধ প্রচার

শংকর কুমার দে ॥ জঙ্গী কায়দায় মসজিদ ও মাদ্রাসা ব্যবহার করে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে ছক তৈরি করে প্রচারের জন্য মাঠে নেমেছে হেফাজতে ইসলাম ও জামায়াত শিবির। ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম-এই তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মসজিদ ও মাদ্রাসায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের নামে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের কাছে ধর্মীয় উন্মাদনার সৃষ্টি করে চলেছে তারা। মসজিদ ও মাদ্রাসাকে ব্যবহার করে তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে সাম্প্রদায়িক বিষপাপ ছড়ানোর মাধ্যমে নাশকতা ও নৈরাজ্যের আশঙ্কার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র জানায়, প্রায় দুই বছর আগে ’১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরের হেফাজতের সমাবেশে পুলিশী অভিযানের বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলাম এবং জামায়াতী যুদ্ধাপরাধীর বিচারের বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবির প্রতিশোধ নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে দাবার ঘুঁটি হিসেবে বেছে নিয়েছে। নির্বাচনের সময়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিতে সরকারের থাকে অনেকটাই হাত-পা বাঁধা। আইনশৃঙ্খলার নির্বাচনের দায়িত্বে নির্বাচন কমিশন থাকার সুযোগ সুবিধা নিয়ে উগ্র মৌলবাদী ধর্মান্ধতার অপপ্রচারে মাঠে নেমেছে হেফাজত ও জামায়াত-শিবির। বিএনপির সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারের মাঠে নামার জন্য গোপন বৈঠক করেছে তারা। বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে মসজিদ ও মাদ্রাসায় গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে তারা ছক কষছেন। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক কট্টরপন্থী ইসলামী সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। সরকারকে একটি উপযুক্ত শিক্ষা দিতেই সংগঠনটি বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠক করেছে গোপনে। তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে মসজিদ ও মাদ্রাসাকে ব্যবহার করছে কৌশলে। ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরের পুুলিশী অভিযানের প্রতিশোধ হিসেবেই শীর্ষ হেফাজত নেতারা তিন সিটি নির্বাচনে সরকার সমর্থিত মেয়র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রার্থীর বিজয় দেখতে তারা আগ্রহী। রবিবার বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনেও হেফাজতের দুই বছরের আগের সমাবেশের পুলিশী অভিযানে হতাহতের ঘটনাটির উল্লেখ করার মধ্য দিয়ে গোপন বৈঠক, হাত মিলানোসহ ছক কষার বিষয়গুলো পরিষ্কার করেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের দাবিতে ২০১৩ সালে শাহবাগে ঐতিহাসিক গণজাগরণ শুরু হলে হঠাৎই প্রকাশ্যে আসে কট্টরপন্থী হেফাজতে ইসলাম। ২০১০ সালে কট্টরপন্থী এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা হয়। এই সংগঠনটির প্রধান আহমেদ শফী এবং তার অধস্তন জুনায়েদ বাবুনগরী। হেফাজতে ইসলামে এ দু’জন ছাড়া বাকি নেতাদের প্রায় সবাই এসেছেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে। তখনও তাদেরকে সরকারের বিরুদ্ধে নাশকতা ও নৈরাজ্যের পক্ষে সকল ধরনের ইন্ধন দিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট। অপরদিকে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় ও রায় কার্যকরের প্রতিশোধ নিতে ছক তৈরি করে মসজিদ ও মাদ্রাসাভিত্তিক অপপ্রচারের জন্য মাঠে নেমেছে তারা। জামায়াত-শিবিরের মহিলা শাখার মহিলারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোরান শপথ করিয়ে টাকা দিয়ে ভোট কেনার জন্য মাঠে নেমেছে। সরকারকে উপযুক্ত জবাব দিতে গোপনে প্রচারের নামে মসজিদ ও মাদ্রাসায় গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে উগ্র ধর্মান্ধতার অপ-প্রচার চালিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের বিভ্রান্ত করার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা।
×