ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিটি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ২৩ এপ্রিল ২০১৫

সিটি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যে কোন উপায়ে সরকারদলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে নির্বাচনী আচরণবিধি ও আইন-কানুন লঙ্ঘন করে মন্ত্রী, সচিব, বিভিন্ন সরকারী দফতরের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের প্রকাশ্য-গোপন তৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলন। বুধবার এক বিবৃতিতে এসব অশুভ তৎপরতা বন্ধে নির্বাচন কমিশনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করে বলা হয়, স্থানীয় পেনিনসুলা হোটেলে মন্ত্রীদের-এমপিদের গোপন বৈঠকের পর কিছু কিছু মন্ত্রীর প্রকাশ্য-দৃশ্যমান তৎপরতা কিছুটা বন্ধ হলেও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ঘন ঘন চট্টগ্রাম সফর করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার কাজে লিপ্ত রয়েছেন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ মিলনায়তনে চিকিৎসক-নার্সসহ সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থীর সভার খবর মিডিয়ার প্রকাশিত হওয়ার পর এখন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন দফতর-অধিদফতরের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তি কর্তৃক সরকারী কর্মসূচীর আড়ালে তাদের অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গোপন সভা ডেকে নির্বাচনে সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশনা প্রদানের কাজ শুরু করেছেন। গত মঙ্গলবার সমবায় সচিব এম এ কাদের সরকার আন্দরকিল্লাস্থ সমবায় কার্যালয়ে সকালে সভা করেছেন এবং বিকেলে চান্দগাঁওস্থ বিআরডিবিতে সভা আহ্বান করেছেন। তিনি মঙ্গলবার রাতে পতেঙ্গা এবং নগরীর একটি তারকা হোটেলে গোপন সভা করে নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত সমবায় বিভাগের কর্মকর্তাদের সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষের কাজ করার জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি একই কায়দায় আগারগাঁওস্থ সমবায় অধিদফতরে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকার সমবায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠান করে রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনে সরকারদলীয় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার ও ভোট দেয়ার প্রকাশ্য আহ্বান জানিয়েছেন। ইতোপূর্বে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং সমাজকল্যাণ অধিদফতরের মহাপরিচালক চট্টগ্রাম সফরে এসে তাদের অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সরকারী বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচীর সুবিধাভোগীদের (বয়স্ক ভাতা, দুস্থ ভাতা গ্রহীতা, হেলথ টেকনলজিস্ট, নার্স, সমাজকল্যাণ অনুদান গ্রহীতা বিভিন্ন সংস্থাসমূহ) ডেকে প্রমোশন, পোস্টিং এবং জুন থেকে বেতন বৃদ্ধি করার প্রলোভন দেখিয়ে সরকারী দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কাজ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছেন। সরকারের নানা পদবিতে আসীন ও সুযোগ-সুবিধা ভোগকারী যেমন রেল মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফজলে করিম চৌধুরী এমপি ও বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদ, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম এবং চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এম এ সালাম সরাসরি সরকারী দলের প্রার্থীর পক্ষে সভা-সমাবেশ, প্রতিপক্ষের প্রতি আক্রমণাত্মক উক্তি করে নির্বাচনের পরিবেশ কলুষিত ও আচরণবিধি লঙ্গন করে চলছেন। নির্বাচনের বাকি কদিনে আরও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, দফতর-অধিদফতরের শীর্ষ ব্যক্তিরা সরকারী নামকাওয়াস্থে কর্মসূচীর আড়ালে চট্টগ্রামে এসে তাদের অধীনস্থ সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারী দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য প্রলোভন ও হুমকির মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করার কৌশল নিয়েছেন। সরকারের বিরোধিতা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনী নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় কতিপয় সরকারী কর্মকর্তা প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনী ফলাফল সরকারী দলের প্রার্থীর অনুকূলে নেয়ার চক্রান্ত করছেন। এমতাবস্থায় সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত পরিবেশে ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করার জন্য এসব অশুভ ও অনাকাক্সিক্ষত তৎপরতা বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্বাচন কমিশনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট এসইউএম নুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে।
×