ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাংবাদিকদের সঙ্গে উপাচার্য ডাঃ কামরুল হাসান খানের মতবিনিময়

বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে দ্রুত মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসা সেল গঠন করা হবে

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২২ এপ্রিল ২০১৫

বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে দ্রুত মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসা সেল গঠন করা হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সত্বর মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসা সেল গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান। তিনি বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল শিক্ষা, গবেষণা ও চিকিৎসাসেবা আন্তর্জাতিক মানের হয়ে উঠছে। দেশীয় চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি জনগণকে আরও আস্থাশীল করে তুলতে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রসারিত করার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনস্বীকার্য। চিকিৎসাসেবা, চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেÑ যা দেশ ও বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হয়েছে। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ব্লকের শহীদ ডাঃ মিল্টন হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে উপাচার্য এসব কথা বলেন। এতে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল, রেডিও, অনলাইন দৈনিক ও সংবাদ সংস্থার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডাঃ আলী আজগড় মোড়ল, প্রিভেনটিভ এ্যান্ড সোস্যাল মেডিসিন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আসাদুল ইসলাম, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) ও মোঃ আব্দুল মজিদ ভূঁইয়া। উপাচার্য বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইতোমধ্যে ‘মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসা সেল’ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। যা কিছুদিনের মধ্যেই উদ্বোধন করা হবে। এতে করে কোন মুক্তিযোদ্ধা এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলে শুধুমাত্র ওই সেলে গিয়ে নিজের সমস্যার কথা বললেই হবে। তার চিকিৎসার পরবর্তী সব দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পালন করবে। দায়িত্ব নেয়ার পর উপাচার্য প্রথম গণমাধ্যমের সামনে নিজের পরিচয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরার প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। উপাচার্য বলেন, বিএসএমএমইউ সম্পূর্ণ পাবলিক একটি বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই এখানে রয়েছে নিজস্ব নীতিমালা। এখানে উন্নত চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম সমানভাবে চলে আসছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে। রোগীদের উন্নত চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে তার পরিকল্পনা কি সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি ইতোমধ্যে প্রত্যেক বিভাগের চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বলে দিয়েছি যে কোন মূল্যে রোগীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। নিজেদের ব্যক্তিগত যতো সমস্যাই থাকুক কেন রোগীর সঙ্গেই যেন কেউ খারাপ ব্যবহার না করে। এতে করে রোগী এখান থেকে উন্নত চিকিৎসা লাভে সক্ষম হবে বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, দেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা আইসিইউ সমস্যা। দেশের অন্যান্য জায়গায় যেখানে সাধারণের জন্য আইসিইউ সেবা গ্রহণ করা প্রায় অসম্ভব, সেখানে আমরা নামমাত্র মূল্যে রোগীদের আইসিইউ সেবা প্রদান করছি। ভবিষ্যতেও আমাদের এ ধারা অব্যাহত থাকবে। অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান আরও বলেন, বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয় এবং বিএনপি-জামায়াত আমলের অনিয়ম দূরীকরণে জোরালো পদক্ষেপ নেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি সাধারণ মানুষ ও রোগীদের আস্থা অতীতের তুলনায় বর্তমানে অনেক বেড়েছে। বর্তমানে ১৫শ’ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালটিতে বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজারের বেশি রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। রোগীদের সেবার পরিধি বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে হাসপাতালের শয্যা ও কেবিন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আইসিইউ সম্বলিত অত্যাধুনিক সিসিইউ, এনআইসিইউ চালু করা হয়েছে। একটি আধুনিক আইসিইউ কমপ্লেক্স ও অপারেশন থিয়েটার কমপেক্ষ নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে গ্রাজুয়েট নার্সিং বিভাগ, রিউমাটোলজি মেডিসিন বিভাগ, এন্ডোক্রাইনোলজি মেডিসিন বিভাগ, সেন্টার ফর প্যালিয়াটিভ কেয়ার, সেন্টার ফর নিউরোডেভেলপমেন্ট অটিজম ইন চিলড্রেন চালু করা হয়েছ।
×