ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর পক্ষে তাদের স্ত্রীরা মাঠে

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২১ এপ্রিল ২০১৫

দক্ষিণে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর পক্ষে তাদের স্ত্রীরা মাঠে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর পক্ষে তাদের স্ত্রীরা এবার নির্বাচনী প্রচারের সক্রিয়ভাবে মাঠে নেমেছেন। স্বামীর পক্ষ হয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছেন। এ সিটিতে বিএনপির সমর্থিত মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজ আব্বাস স্বামীর অনুপস্থিততে প্রথম থেকেই প্রচারে সক্রিয় রয়েছেন। দীর্ঘদিন পরে হলেও এবার স্বামীর পক্ষে প্রচারে নেমেছেন সাঈদ খোকনের স্ত্রী ফারহানা সাঈদ। তিনি গত রবিবার থেকে স্বামীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। সোমবার আফরোজা আব্বাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালান। অপরদিকে সাঈদ খোকনের স্ত্রী ফারহানা সাঈদ কাকরাইলের উইলস্ ফ্লাওয়ার স্কুল ও এর আশপাশের এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তারা স্বামীর পক্ষে লিফলেট বিতরণ করেন। ভোট দিয়ে তাদের জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ২০ জন মেয়র প্রার্থী অংশ নিলেও ভোটারদের কাছে মির্জা আব্বাস ও সাঈদ খোকনের গ্রহণযোগ্যতা অন্য প্রার্থীর চেয়ে অনেক বেশি। এর পাশাপাশি এ সিটিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাজী মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন মিলন নির্বাচনী প্রচারের সক্রিয় থাকলেও অন্য প্রার্থীদের খুব একটা দেখা মেলে না। তাদের পরিচয় সম্পর্কে ভোটাররা এখনও ওয়াকিবহাল নয়। কিন্তু দলীয় পরিচিতি থাকার কারণে ভোটাররা মির্জা আব্বাস এবং সাঈদ খোকনের যে কোন একজনকে মেয়র হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাদের নির্বাচনী প্রচারেরও লোক সমাগম হচ্ছে প্রচুর। কিন্তু এ সিটিতে মামলার কারণে এখন পর্যন্ত নির্বচনী প্রচারে আসতে পারেনি মির্জা আব্বাস। কিন্তু তার পক্ষে স্ত্রী আফরোজা আব্বাস একাই স্বামীর পক্ষে জনসংযোগ করে যাচ্ছেন। অপরদিকে সাঈদ খোকন গত ৭ এপ্রিল থেকেই নির্বাচনের মঠে সক্রিয় রয়েছেন। প্রতিদিনই তিনি তার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন জায়গায় জনসংযোগ করছেন। কিন্তু এতদিন চুপ থাকলেও হঠাৎ করে ফারহানা সাঈদ স্বামীর পক্ষে প্রচারের নেমে পড়েন। সোমবার সকালে স্বামী মির্জা আব্বাসের পক্ষে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন আফরোজা আব্বাস। এরপর দুপুরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে বের হন। তিনি টিএসসি দিয়ে প্রবেশ করে শিববাড়ী আবাসিক এলাকা হয়ে শহীদ মিনারের দিকে প্রচার চালান। ওইসব এলাকায় হেঁটে হেঁটে রাস্তায় গণমানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের হাতে আব্বাসের মগ মার্কার প্রতীক সম্বলিত লিফলেট তুলে দেন। মগ মার্কা প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য ভোটাদের প্রতি আহ্বান জানান। ঢাকা দক্ষিণের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মির্জা আব্বাস মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এখনও নির্বাচনের মাঠে আসতে পারেনি। ফলে প্রথম থেকে তার পক্ষে সক্রিয় রয়েছেন আফরোজা আব্বাস। গত ৮ এপ্রিল থেকে তিনি মির্জা আব্বাসের পক্ষে প্রচার শুরু করেন। এদিকে গত রবিবারই প্রথম স্বামীর পক্ষে ভোট চাইতে মাঠে নামেন সাঈদ খোকনের স্ত্রী ফারহানা সাঈদ। প্রথম দিন তিনি রাজধানীর ধানম-ি ৩২ নম্বর থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রচার শুরু করেন। দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল ও আশপাশের এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, আমার শ্বশুর ঢাকার প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ঢাকাবাসীর জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমার স্বামী সেই পদে লড়ছেন। তার জন্য ঢাকাবাসীর কাছে দোয়া ও ভোট চাই। ঢাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, আমার স্বামী সাঈদ খোকনকে একবারের জন্য ইলিশ মাছ মার্কায় ভোট দিয়ে ঢাকাবাসীর সেবা করার সুযোগ দিন। তিনি আপনাদের পাশে থাকবেন। এদিকে ঢাকা উত্তরের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল সোমবার রাজধানীর কাওরান বাজার থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। এ সময় তিনি তার প্রচারের অংশগ্রহণ করায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে বাধা দেয়া এবং কালো প্রতাকা প্রদর্শনের নিন্দা জানান। তিনি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক বিষয়। আপনারা দেখেছেন গতকাল আমাদের দেশনেত্রী ২০ দলীয় নেত্রীর গাড়িবহরকে বাধা দেয়া হয়েছিল এবং অশ্লীল পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছিল। এটা কোনভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাম্য নয়। বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নির্বাচনের জন্য সহায়ক নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। এ পরিস্থিতিতে সেনা মোতায়েন করার দাবি জানান তিনি। সোমবার তাবিথ আউয়ালের পক্ষে তার মা নাসরিন আউয়াল প্রচারের অংশ নেন। তিনি রাজধনীর পল্লবী এলাকায় নিজ সন্তানের বাস মার্কা প্রতীকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানন। বিকল্পধারা সমর্থিত প্রার্থী সোমবার দুপুরের মিরপুর বিআরটিএর সামনে থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। এ সময় তিনি বলেন, ঢাকার মানুষ পরিবর্তন চায় পরিবর্তনের রাজনীতির মাধ্যমে। পরিচ্ছন্ন ঢাকা চাইলে রাজনীতিকে পরিচ্ছন্ন করতে হবে। এজন্য পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদদেরও এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া তিনি সোমবার রাজধানীর সেনপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর ১০ নম্বরও চৌরঙ্গি মার্কেট হয়ে এক নম্বরের অবস্থিত শাহ আলীর মাজার জিয়ারত করেন। সেখানে তিনি যোহরের নামাজ আদায় করেন। এদিকে ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী জোনায়েদ সাকিও নির্বাচনী প্রচারের সক্রিয় রয়েছেন। তিনি সোমবার রাজধানীর মনিপুরী পাড়া ইন্দিরা রোড এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ করেন। এ সময় তিনি বলেন, আজ ঢাকার নাগরিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত। মানুষের জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই। তিনি বলেন, নির্বাচনে জয়ী হলে নগরের জনগণের অংশগ্রহণমূলক ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির নগর গড়ে তোলা হবে। সিপিবির প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল ক্বাফি নির্বাচনী প্রচারের অংশ নিয়ে বলেন, বর্তমান ঢাকার মানুষ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। নির্বাচিত হলে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের ই-সেবা চালু করা হবে। সোমবার তিনি নাবিস্কো, তেজগাঁও রেলগেট, এলাকায় গণসংযোগ করেন।
×