ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

এখনই ‘বাংলাওয়াশ’ নয়, জয়টা মুখ্য ॥ মাশরাফি

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৯ এপ্রিল ২০১৫

এখনই ‘বাংলাওয়াশ’ নয়, জয়টা মুখ্য ॥ মাশরাফি

মোঃ মামুন রশীদ ॥ এখন প্রত্যাশা অনেক বেড়ে গেছে বাংলাদেশ দলের ওপর। একটি ম্যাচ জিতে গেলেই প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বপ্ন দেখেন দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। দেশের ষোল কোটি মানুষের একজনও বাকি নেই যারা ক্রিকেটের প্রতি অন্তঃপ্রাণ নন। ক্রিকেটের প্রতি মহাআবেগী এ মানুষেরা তাই হোয়াইটওয়াশের নাম দিয়েছেন ‘বাংলাওয়াশ’। সফরকারী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতেই জয় তুলে নেয়ার পর এখন ওই স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন দেশের মানুষ। চারদিকে এখনই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে ‘বাংলাওয়াশ, বাংলাওয়াশ’। কিন্তু এই প্রত্যাশা দলের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তবে প্রথম ওয়ানডেতে নিখুঁত খেলা উপহার দিয়েছে দল। কোন ভুলত্রুটি না করে সেটা ধরে রাখতে পারলে সিরিজ জয় সম্ভব বলেই মনে করেন তিনি। এ কারণে আপাতত বাংলাওয়াশ নয়, মাশরাফি ভাবছেন আজকের দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করা নিয়ে। প্রথম ম্যাচ জিতে আগেভাগেই তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে চলে গেছে টাইগাররা। বিশ্বকাপে সেøা ওভার রেটের কারণে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ ছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। এবার ফিরছেন তিনি আজকের ম্যাচ দিয়ে। কিন্তু ‘উইনিং কম্বিনেশন’ ভাঙ্গাটা কি ঠিক হবে? এমন একটি কৌতুকও জমে ওঠেছিল সংবাদ সম্মেলনে। প্রথম ম্যাচের জয়ী একাদশে পরিবর্তন না আনলে অধিনায়ক মাশরাফিকে যে বাইরেই থাকতে হবে। তবে এমন প্রশ্ন শুনে মাশরাফিও হেসেছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এত ফুরফুরে মেজাজে আগে কখনও থাকতে পারেননি বাংলাদেশের কোন অধিনায়ক। আজ ফিরেই দলকে জেতাতে পারলে প্রথম গর্বিত অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি অন্য এক গৌরবের অধিকারী হয়ে যাবেন। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন,‘আমাদের সামনে দারুণ একটি সুযোগ এসেছে। গতকালের ম্যাচটি নিখুঁত ম্যাচ ছিল। কোথাও বড় কোন ত্রুটি ছিল না। তবে বোলিংটা আরও ভাল হতে পারতো। আমার মনে হয়, যে উইকেটে খেলা হয়েছে, সেখানে দু’দলই ৩০০-এর উপরে করতে পারতো। তবে এ রকম প্রতি ম্যাচেই খেলা সম্ভব না। এ রকম খেলতে পারলে যেকোন দলের বিপক্ষে যেকোন সময় জেতা সম্ভব, মানে জেতাই যায়।’ ১৬ বছর পর আরেকটি জয় পাকদের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে খেলতে পারেননি কিন্তু দল জেতায় আনন্দিত মাশরাফি। দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশের কাছে হারলো পাকরা। তবে কি দুর্বল হয়ে গেছে তারা? মাশরাফি এ বিষয়ে বলেন,‘এই পাকিস্তান দল আমার কাছে সাধারণ মানের মনে হয়নি; আমরা জিতেছি বলে নয়। ওদের যে বোলিং লাইন আমার কাছে মনে হয় বিশ্বকাপের চেয়ে বেশি ভাল। ব্যাটিংয়ে মিসবাহ বা আহেমদ শেহজাদ নেই, এ ছাড়া আফ্রিদি নেই; আফ্রিদি অনেকবার আমাদের সাথে খেলার মোড় ঘুরিয়েছে এটা ঠিক। আমার মনে হয় একটা দল যখন পরিবর্তন হয়, তখন সিনিয়রদের তো অবসর নিতেই হবে। আফ্রিদি বা মিসবাহ তো এক সময় অবসর নিতোই। এ কারণে ওদের দলে কয়েকজন নতুন খেলোয়াড় আছে। নতুন খেলোয়াড় অবশ্য আমাদের দলেও আছে।’ প্রথম ম্যাচে দুই সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মাশরাফি। একটি ম্যাচ জিতলেই দলকে নিয়ে প্রত্যাশা বেড়ে যাওয়াটাকে চাপ মনে করেন মাশরাফি। তবে প্রথম ম্যাচে ইতিবাচক শরীরি ভাষা ছিল সব ক্রিকেটারের মধ্যে। ব্যাটে-বলে যারা সুযোগ পাননি তাঁরা ফিল্ডিংয়ে কিছু একটা করে দেখিয়েছেন। এসব কাজে লাগাতে পারলে হয়তো পাকদের হোয়াইটওয়াশ করাও সম্ভব। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন,‘আসলে একটা জিনিস হয়ে গেছে যে, আমরা যখন দেশে খেলি এবং প্রথম ম্যাচ জিতে যাই, তখনই হোয়াইটওয়াশ বা বাংলাওয়াশ নিয়ে কথা ওঠে। এগুলো আমার কাছে মনে হয় অতিরিক্ত চাপ। আমরা কোন সিরিজ খেলতে নামলে প্রতিটি ম্যাচই জেতার চেষ্টা করি। এই মুহূর্তে আমাদের জন্য পরের ম্যাচটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং এটিই সত্য কথা; পরের ম্যাচটি আমরা জিততে চাই। এটা জিতলেই আমরা সিরিজ জিতে যাব। তারপরের ম্যাচেও নিশ্চয় আমরা হারের জন্য নামব না। আপাতত পরের ম্যাচ নিয়েই ভাবতে চাই।’ তবে বললেই তো হবে না। একটি ম্যাচে সহজে জয় এসেছে। পরের ম্যাচে নাও হতে পারে। তাই নিজেদের নৈপুণ্যে আরও উন্নতি ঘটানো জরুরী বলে মনে করেন মাশরাফি। তিনি বলেন,‘আমি আগেই বলেছি আমরা নিখুঁত একটি ম্যাচ খেলেছি। সামনে আমাদের বাজে সময় যেতে পারে। ভুলের সংখ্যা যতো কম হবে, সেটাই ভাল, দল খুব সহজেই জিততে পারবে। আমার চিন্তা এমন যে, কাল হয়তো আমাদের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।’
×