ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাড়ি দেবে গিয়ে করুণ মৃত্যু!

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ১৮ এপ্রিল ২০১৫

বাড়ি দেবে গিয়ে করুণ মৃত্যু!

জীবনধারণের জন্য নিরাপদ বাসস্থান অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু সেই বাসস্থানই যদি মানুষের জন্য প্রাণঘাতী হয় তাহলে তা সত্যিই বেদনাদায়ক। বুধবার রাজধানীর রামপুরার পূর্ব হাজীপাড়ার ঝিলের ওপর নির্মিত দোতলা টিনশেড বাড়ি দেবে গিয়ে ১২ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি মানুষকে একদিকে যেমন ব্যথিত ও হতবাক করেছে, অন্যদিকে স্বল্পজীবী, খেটেখাওয়া মানুষের নিরাপদ বাসস্থান সম্পর্কে বিশেষভাবে ভাবিয়ে তুলছে। প্রশ্ন জেগেছে, তাহলে জীবনের মূল্য কোথায়? এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভাগ্য বদলের আশায় হাজার হাজার মানুষ রাজধানীতে আশ্রয় নেয়। ভাসমান এসব মানুষ মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে স্বল্পমূল্যে থাকার আশ্রয় খুঁজে নেয়। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বৈধ, অবৈধভাবে গড়ে উঠছে ঘরবাড়ি। এসবের নেপথ্যে রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সুবিধাবাদী নেতাকর্মীরাও। মূলত স্থানীয় পর্যায়ের কিছু সুবিধাবাদী রাজনৈতিক ও প্রশাসনের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে রাজধানীর নিম্নাঞ্চলের অব্যবহৃত ভূমি, জলাশয়, বিল-ঝিলে গড়ে উঠেছে স্বল্পমূল্যের টিনশেড ও বাঁশ-বেড়ার ঘর। এসব ছোট ঘর বা ঝুপড়িতে জীবনধারণের কোন ন্যূনতম সুযোগ নেই। এসব ঘরবাড়িতে পয়ঃনিষ্কাশন, রান্নাবান্নার পরিকল্পিত কোন ব্যবস্থা না থাকায় মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। এসব বসতিতে অবৈধ বিদ্যুত, গ্যাস ব্যবস্থা চালু থাকে। ঢাকার ভাসমান ও নিম্ন আয়ের মানুষের মৌলিক বাসস্থানের মতো চাহিদা পূরণে ইতোপূর্বে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা শোনা গেলেও বিভিন্ন কারণে তা কার্যকর হয়নি। বর্তমান সরকার অবশ্য রাজধানীর নিম্ন আয়ের মানুষের বাসস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। আশ্রয়হীন মানুষের এমন করুণ মৃত্যু কারোরই কাম্য হতে পারে না। এই ধরনের ট্রাজেডি আর যাতে না ঘটে তার নিশ্চয়তা প্রয়োজন। সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের বাসগৃহ যাতে নিরাপদ হয় সেটা বিশেষভাবে নিশ্চিত হওয়া দরকার।
×