ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মির্জা আব্বাসের আবেদনের শুনানি মঙ্গলবার

নাশকতার এক মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন, চার মামলায় রুল

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৭ এপ্রিল ২০১৫

নাশকতার এক মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন, চার মামলায় রুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নাশকতার এক মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি এ মামলাসহ নাশকতার চার মামলায় কেন তাকে জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছে আদালত। বিচারপতি মোঃ নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের দ্বৈত বেঞ্চ বৃহস্পতিবার পৃথক চারটি জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেয়। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা দুর্নীতি মামলায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদনের শুনানি আগামী মঙ্গলবার বিচারপতি মোঃ মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ তারিখ ধার্য করা হয়। এর আগে ১৫ এপ্রিল নাশকতার দুই মামলায় ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদনে বিভক্ত আদেশ দেয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি কোন বেঞ্চ নির্ধারণ করেননি। বুধবার বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ দ্বিধাবিভক্ত আদেশ প্রদান করে। বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতি মির্জা আব্বাসকে তিন সপ্তাহের জামিন দিলেও অপর বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর জামিন আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে আব্বাসকে অবিলম্বে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। এদিকে, পল্টন ও মতিঝিল থানায় গাড়ি পুড়িয়ে নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে দায়ের করা চার মামলার মধ্যে পল্টন থানার একটি মামলায় ছয় মাসের জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অন্য তিন মামলায় কেন মির্জা ফখরুলকে জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের উক্ত রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জামিন আবেদনের শুনানি করে হাইকোর্টের বিচারপতি মোঃ নুরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ আদেশ দেয়। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রেসিডেন্ট ও সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, এ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মাদ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির। এ সময় আদালতে আসামিপক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদলসহ বিএনপিপন্থী অন্য আইনজীবীরা। গত রবিবার সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন হাইকোর্টে মির্জা ফখরুলের পক্ষে জামিন আবেদনগুলো দায়ের করেন। জানা গেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পরিকল্পনা অনুযায়ী পল্টন এলাকায় হরতালের মাঝে গাড়ি ভাংচুর করে বিএনপির পিকেটাররা। এজন্য ফখরুল ইসলামসহ ২৪ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা করে পল্টন থানার পুলিশ। গত ৪ জানুয়ারি দায়ের করা মামলায় গতকাল তাঁকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছে আদালত। এছাড়াও নাশকতার কাজে উস্কানি, প্ররোচনা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী পল্টন এলাকায় হরতালের মাঝে গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে গত ৪ জানুয়ারি মতিঝিল ও পল্টন থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। একই ধরনের অভিযোগ এনে পল্টন থানায় ৬ জানুয়ারি এবং তার আগে ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর অপর দুটি মামলা করে পুলিশ। মির্জা আব্বাস ॥ মন্ত্রী থাকার সময় প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিএনপি নেতা ও ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন শুনানি মঙ্গলবার বিচারপতি মোঃ মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে বিচারপতি কামারুল ইসলাম সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হলেও আদালত তা শুনে মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেয়। পরে মির্জা আব্বাসের আইনজীবীরা এই বেঞ্চে শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন দাখিল করেন। তাই দুদকের মামলার শুনানির জন্য হাইকোর্টে নির্দিষ্ট করা বেঞ্চের বিচারপতি সৈয়দ মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান। এর আগে বুধবার নাশকতা ও দুর্নীতির অভিযোগে তিন মামলায় আগাম জামিন প্রার্থনা করেন মির্জা আব্বাস। ওই জামিন আবেদনের মধ্যে নাশকতার অভিযোগে পল্টন ও মতিঝিল থানার দুই মামলার শুনানি করে হাইকোর্ট দ্বিধাবিভক্ত আদেশ দিলেও দুদকের মামলার জামিন আবেদন ওই আদালত শুনানি না নিয়ে তা কার্যতালিকা থেকে বাতিল করে দেয়। বৃহস্পতিবার দুদকের মামলায় জামিন আবেদন শুনানি করতে কার্যতালিকায় আনার জন্য মির্জা আব্বাসের আইনজীবীরা আদালতে গিয়েছিলেন। ২০১৪ সালের ৬ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়, তিনি মন্ত্রী থাকার সময় প্লট বরাদ্দে অনিয়ম করেছিলেন।
×