ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এবার ভাল খেলার সেরা সুযোগ, আমরা সিরিজ জয়ের ক্ষমতা রাখি

জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছি না ॥ সাকিব

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ১৭ এপ্রিল ২০১৫

জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছি না ॥ সাকিব

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ষোলো বছর আগে একবার পাকিস্তান দলকে হারাতে পেরেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সেটা ছিল ১৯৯৯ সালে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ। ওই অবিস্মরণীয় জয়ের পর আর পাকদের হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার ঘরের মাঠে আরেকটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। দারুণ সাফল্যম-িত একটি বিশ্বকাপ শেষ করে বেশ উজ্জীবিত বাংলাদেশ। তাছাড়া প্রস্তুতি ম্যাচে সফরকারীদের বিসিবি একাদশ হারিয়ে দেয়ার পর এখন বেশ আত্মবিশ্বাসও কাজ করছে। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই সে কারণে জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে টাইগাররা। প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন দেশসেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা এক ম্যাচ নিষিদ্ধ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে সেøা ওভার রেটের কারণে। প্রথম ম্যাচের অধিনায়ক সাকিব দৃঢ়কণ্ঠেই জানালেন জয় পাওয়াটাই অন্যতম লক্ষ্য। নিজেদেরই ফেবারিট দাবি করে সাকিব বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের ক্ষমতা আছে বাংলাদেশের। বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে এসব কথা বলেন তিনি। সর্বশেষ ২০১১ সালের ডিসেম্বরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে যাওয়া দলটিও শতভাগ জয় তুলে নিয়ে গেছে। গত ১৬ বছরে বাংলাদেশ দল ওয়ানডে ক্রিকেটে শক্তিধর দলে পরিণত হয়েছে, হারিয়েছে সব টেস্ট খেলুড়ে দলকেই। কিন্তু আর হারেনি পাকিস্তান। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘আমরা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নামব। আমরা যদি আগেই চিন্তা করি আমরা কখনও জিতি নাই তাহলে জিতব না। এমন চিন্তা করলে আমার মনে হয় না কারও পক্ষে জেতা সম্ভব। আমাদের তো এটা পরিবর্তন করতে হবে। ১৬ বছর হয়নি বলে কখনই হবে না এমন হতে পারে না।’ তবে দীর্ঘদিন পাকদের বিরুদ্ধে জয় না পাওয়া এবং বিশ্বকাপে ভাল করার কারণে ঘরের মাটিতে প্রত্যাশার একটা বাড়তি চাপ থাকবে বাংলাদেশ দলের ওপর। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘আমরা সব সময় চাপে থাকি বিশেষ করে ঘরের মাঠে। আমরা মনে করি আমরা ফেবারিট, আমাদের দলটি পাকিস্তানকে হারানোর মতো দল। আমাদের ক্ষমতা আছে সিরিজ জেতার।’ অনুশীলন ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছে বিসিবি একাদশ। এ কারণে এখন জাতীয় দলকে নিয়ে বাড়তি প্রত্যাশা। সাকিব এক্ষেত্রে একটু ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দিলেন, ‘অনুশীলন ম্যাচ আসলে কাদের কতটা প্রভাব ফেলে এটা বলা কঠিন। ভাল দিক হচ্ছে আমাদের জাতীয় দলের কিছু খেলোয়াড় ভাল খেলেছে। তাদের আত্মবিশ্বাসটা ভাল থাকবে। সবমিলিয়ে পুরো দলটা ভাল অবস্থায় আছে এখন।’ বিশ্বকাপে তরুণ ক্রিকেটারদের ভাল পারফর্মেন্স দেখানোটা বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলেও মনে করেন তিনি। সাকিব বলেন, ‘বিশ্বকাপে তরুণ খেলোয়াড় যারা ছিল তাদের পারফর্মেন্স করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাদের যে কারণে নির্বাচন করা হয়েছ সবাই যার যার কাজটুকু ঠিকঠাক ভাবে করতে পেরেছে।’ সাকিব মনে করছেন দল উজ্জীবিত থাকার কারণে এখন পাকিস্তানকে হারানোর সেরা সুযোগ এসেছে। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এটা আমাদের জন্য সেরা সুযোগ, পাকিস্তানের সঙ্গে ভাল করার। পাকিস্তান অবশ্যই ভাল দল। তাদের সঙ্গে জিততে হলে আমাদের ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে। আমরা বিশ্বকাপে ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলছিলাম। এখন আমরা যদি এটা ধরে রাখতে পারি, আমাদের বিশ্বাস আমাদের পক্ষে ফলাটা আনতে পারব। পাকিস্তান দলে এমন অনেক খেলোয়াড় আছে যারা এখনও ম্যাচ জেতাতে পারে। ওইদিক থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’ সম্প্রতিই বিশ্বকাপে গতি ও বাউন্সে ভরপুর উইকেটে খেলে এসেছে বাংলাদেশ দল। এবার উইকেট থাকবে নিশ্চিতভাবেই ভিন্নতর। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘উইকেটটা দেখে ভাল মনে হয়েছে। আশা করছি স্পোর্টিং উইকেট হবে। ওখানে পেস বোলাররা ভাল বোলিং করেছে, স্পিনাররাও সাপোর্ট করেছে। এখানে পেস বোলারদের ভাল করা গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে স্পিনারদের দায়িত্বটা একটু বেশি। আমাদের যদি জিততে হয় তাহলে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগেই ভাল করতে হবে।’ বোলিং এ্যাকশন শুধরে পাকিস্তান দলে ফিরে এসেছেন ভয়ঙ্কর স্পিনার সাঈদ আজমল। তার বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘আমাদের আসলে ধারণা নেই যাকে আমরা আগে দেখেছি সেই সাঈদ আজমল এবার আসছে কিনা। এ রকম একটা ঘটনার পর আর আগের প্রভাবটা থাকে না। কিন্তু এর থেকে আরও ভাল ফর্মেও সে আসতে পারে। খারাপও করতে পারে।’ বিশ্বকাপে তিন পেসার নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ যা সচরাচর খুব কমই দেখা গেছে। সাধারণত দুই পেসার নিয়েই খেলেছে দল। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘আমরা উইকেট দেখে ঠিক করব সমন্বয়টা। এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। তবে দুই পেসার না তিন পেসার- এগুলো এখন আমরা আয়ত্তে আনতে পেরেছি।’ বিশ্বকাপে পাক পেসার ওয়াহাব রিয়াজ ঝড় তুলেছেন। তার সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছেন ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা জুনাইদ খান। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘আসলে ওদের বিশ্বসেরা বোলার আছে সেটা নিয়ে কারও কোন দ্বিমত নেই। কিন্তু আমরা এটা বিশ্বাস করি যে আমাদের এখন বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যান আছে। ভাল ব্যাট-বলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এটা আমি বিশ্বাস করি। এটা আমাদে ঘর, আমরা সারাজীবন এখানেই খেলছি। দুই-তিন মাস অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ছিলাম বলে খুব একটা সমস্যা হবে না।’
×