ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দিলু রোডে সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলি, রিক্সাচালক নিহত

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৬ এপ্রিল ২০১৫

দিলু রোডে সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলি, রিক্সাচালক নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত ১৩ মে সোমবার দিবাগত গভীর রাতে রাজধানীর রমনা মডেল থানাধীন দিলু রোডে সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে দৈনিক জনকণ্ঠের পরিবহন পুলের এক সিএনজিচালক ও দুই রিক্সাচালক আহত হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সিএনজিচালকসহ দুইজনের মধ্যে বুধবার বিকেলে রিক্সাচালক হাকিমের মৃত্যু হয়েছে। আর ঘটনার রাতেই আহত অজ্ঞাত আরেক রিক্সাচালক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। সিএনজি চালক প্রাথমিকভাবে আশঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। গুলিবর্ষণের প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত কেউ আটক বা গ্রেফতার হয়নি। সোমবার দিবাগত রাত দুটোর দিকে দিলু রোড মোড়ে ঘটনাটি ঘটে। সিএনজিযোগে চালক ইয়াকুব দৈনিক জনকণ্ঠের সিনিয়র সাব এডিটর আল আমিনকে দিলু রোডের বাসায় পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি নোয়া গাড়ির জানালা খুলে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে সন্ত্রাসীরা। ইয়াকুব আলীর (৪৫) ডান বুকে, রিক্সাচালক হাকিমের বাম বুকে ও অজ্ঞাত আরেক রিক্সাচালকের ডান পায়ে হাঁটুর উপরে গুলি লাগে। ইয়াকুব আলী ও রিক্সাচালক হাকিমকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় রিক্সাচালক হাকিমের (৩০) মৃত্যু হয়। হাকিমের বাম বুকে দুটি বুলেট বিদ্ধ হয়েছিল। অপারেশন থিয়েটারেই হাকিমের মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে হাকিমের মৃত্যু হয়েছে। বুলেট দুটি বুক ভেদ করে ব্যাপক ক্ষত সৃষ্টি করায় তাকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি। হাকিমের পিতার নাম দুদু মিয়া। বাড়ি জয়পুরহাট জেলার কালাই থানাধীন দেওগ্রামে। হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম (৫০) জনকণ্ঠকে জানান, তার দুই ছেলে এক মেয়ে। হাকিম সবার বড়। বছরখানেক আগে হাকিম বিয়ে করেছিল। মাসখানেক আগে হাকিমের স্ত্রীর মৃত্যু হয়। হাকিম রাজধানীর রমনা মডেল থানাধীন মগবাজারের মধুবাগে বসবাস করত। আহত সিএনজি চালক ইয়াকুবের পিতার নাম আরব আলী শেখ। বাড়ি বাগেরহাট সদর জেলার কাঁটাবনিয়া গ্রামে। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে ইয়াকুব সবার বড়। ইয়াকুব আলীর স্ত্রী সালমা বেগম জনকণ্ঠকে জানান, তারা রাজধানীর খিলগাঁও নন্দীপাড়ার বটতলার মোয়াজ্জেম কলোনীর ক্যাম্প গলির জব্বারের বাড়ির ভাড়াটিয়া। মাসিক ১৮শ’ টাকায় এক বছর ধরে ওই বাড়ির একটি কক্ষে ভাড়ায় থাকছেন। বড় মেয়ে লোনা বিবাহিত। দুই ছেলে জামাল (১৫) আর ছোট ছেলে বাবুকে (১৩) নিয়ে ওই বাড়িতে তাদের বসবাস। ঘটনার সময় ইয়াকুবের সিএনজিতে থাকা জনকণ্ঠের সিনিয়র সাব এডিটর আল আমিন এ প্রতিবেদককে বলেন, গুলিবর্ষণের ধরনে মনে হয়, সন্ত্রাসীদের টার্গেট তারা ছিলেন না। তারা পরিস্থিতির স্বীকার। সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়েই চলে যায়। এ ব্যাপারে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার আবদুল বাতেন জনকণ্ঠকে বলেন, গুলি চালানোর সুনির্দিষ্ট কারণ জানায় যায়নি। এমনকি বুধবার সন্ধ্যায় সাড়ে ছয়টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগও করেননি। আধিপত্য বিস্তার বা অন্য কোন কারণে গুলি চালানোর ঘটনাটি ঘটতে পারে। গুলিবর্ষণকারীদের টার্গেট অন্য কেউ হতে পারে। অনাকাক্সিক্ষতভাবে আহতরা পরিস্থিতির স্বীকার হতে পারে। আবার গুলিবর্ষণের ঘটনাটি সুপরিকল্পিত কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
×