ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অভিযোগ দুদকে

রাজশাহীতে দলিল জালিয়াতী করে রাজস্ব ফাঁকি

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৩ এপ্রিল ২০১৫

রাজশাহীতে দলিল জালিয়াতী করে রাজস্ব ফাঁকি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ সার্টিফাইড কপিতে ‘বেশি’ ও মূল দলিলে দাম ‘কম’ উল্লেখ করে দুই লাখ টাকার বেশি অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে রাজশাহীর একটি সংঘবদ্ধ দলিল জালিয়াতি চক্রের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিচারপ্রার্থী হয়ে এ অভিযোগের অনুলিপি রাজশাহী সদর দলিল লেখক সমিতির কাছেও দিয়েছে ভুক্তভোগীরা। দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ২৮ জুন রাজশাহী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে মুসরইল মৌজার কিছু জমি রেজিস্ট্রি করেন নগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকার সাদরুজ্জামান, কামরুজ্জামান ও শহিদুল ইসলাম। দলিল লেখক মনিরুজ্জামান মনিরের (আইডি নম্বর ৩৬৩) কাছ থেকে তারা মোট ৬টি দলিল করেন। দলিলগুলোর সার্টিফাইড কপিতে জমির যে মূল্য উল্লেখ করে দলিল লেখক যে অর্থ তাদের কাছে নিয়েছেন, মূল দলিলে সেই দাম উল্লেখ নেই। দলিলগুলোর মধ্যে ১০০৪০/২০১০ নম্বর দলিলে সার্টিফাইড কপিতে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা উল্লেখ থাকলেও মূল দলিলে জমির মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১০০৩৯/২০১০ নম্বর দলিলের সার্টিফাইড কপিতে ৪ লাখ টাকা জমির মূল্য ধরা হলেও মূল দলিলে ২ লাখ টাকা, ১০০৩৭/২০১০ নম্বর দলিলের সার্টিফাইড কপিতে ১১ লাখ টাকা উল্লেখ করা হলেও মূল দলিলে ৫ লাখ টাকা এভাবে আরও একাধিক দলিলে একইভাবে জালিয়াতি করা হয়েছে। মোট ৬টি দলিলের সার্টিফাইড কপিতে জমির মূল্য ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা উল্লেখ করা হলেও মূল দলিলে জমির মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে মাত্র ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। জমি রেজিস্ট্রি করার সময় ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা হিসেবে রেজিস্ট্রি খরচ আদায় করে নেয়া হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, চক্রটি এভাবে তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ২ লাখ ৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এতে একদিকে যেমন তারা প্রতারিত হয়েছেন, অপরদিকে সরকার রাজস্ব হারিয়েছে। অভিযোগটিতে চক্রটির সঙ্গে শুধু দলিল লেখক মনিরুজ্জামান মনিরের নামই উল্লেখ নেই। এর সঙ্গে জড়িত কপিড বাই মিলন, আশরাফুল, যাচাইকারী মিতা, লেখক আফরোজা, শেখ ফরিদ আওয়াল, মুসলিমা ও তৎকালীন সাব রেজিস্ট্রার সাইদুল ইসলামের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম জানান, জমি রেজিস্ট্রি করার সময় ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমির মূল্য দেখিয়ে শতকরা সাড়ে ১২ ভাগ হারে তাদের কাছে রেজিস্ট্রি ফি আদায় করলেও মূল দলিল করেছে মাত্র সাড়ে ১২ লাখ টাকা মূল্যের। এ বিষয়ে দলিল লেখক মনিরকে টাকা ফেরত দেয়ার কথা জানালে তিনি কালক্ষেপণ শুরু করেছেন। যোগাযোগ করা হলে দলিল লেখক মনিরুজ্জামান মনির সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগকারীর অভিযোগ ঠিক নয়। আমাকে যে মূল্যে দলিল করতে বলা হয়েছে, সেই মূল্যেই দলিল করা হয়েছে সবার সামনে। মূল দলিল রেজিস্ট্রি করা আমার কাজ। সার্টিফাইড দলিল তিনি দেননি বলে দাবি করেন।
×