ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জয়পুরহাটে জামায়াতের তাণ্ডব, অগ্নিসংযোগ পুলিশের ওপর হামলা

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১২ এপ্রিল ২০১৫

জয়পুরহাটে জামায়াতের তাণ্ডব, অগ্নিসংযোগ পুলিশের ওপর হামলা

নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট, ১১ এপ্রিল ॥ জয়পুরহাট সদরের জামায়াত নেতা শাহ আলমকে পুলিশের হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনার ২০ ঘণ্টা পরও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। উপরন্তু জামায়াত-শিবিরের কয়েকশ’ অস্ত্রধারী ক্যাডার শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার পাটের পুকুর গ্রামে ককটেল ফাটিয়ে ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে ঐ গ্রামের বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয় ও ব্যাপক ভাংচুর করে। তাদের তা-বে আশপাশের বাড়িঘরের লোকজন প্রাণভয়ে পালাতে থাকে। জামায়াত-শিবিরের তা-বে ৬ জন গুরুতর আহত গ্রামবাসীকে জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতারে ভর্তি করা হয়। আহতরা হলো মোঃ সুলতান (৪২), ইসাহাক আলী (৪২), মোফেলা বেগম (৫৫), তানজিলা বেগম (২৫), রওশন আরা (৫০) এবং কুলসুম বেগম (২৫)। এই তা-বের পর গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে খুঁজে না পাওয়ায় গ্রামজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে হামলা ঘটনার ৪ ঘণ্টা পরই জামায়াত-শিবিরের অস্ত্রধারীরা মিটনা নামক স্থানে পুলিশের ওপর হামলা চালালে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এ সময় দুই শিবির ক্যাডার গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পুলিশের হাতে ধরা পরে। গুলিবিদ্ধ ২ শিবির ক্যাডার হলো পাঁচবিবি থানার রহমতপুর (নাবা বাঁশখুর) গ্রামের আহসান হাবিব (২২) এবং সদর উপজেলার মিটনা গ্রামের নজরুল ইসলাম (২৮)। তারা বর্তমানে জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালে পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন। ঘটনাস্থলে শনিবার পুলিশ ও র্যাব অবস্থান নিলেও এলাকায় এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে। জয়পুরহটের হিচমী থেকে চৌমহনী বাজার পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার রাস্তা জনশূন্য হয়ে পড়েছে। চৌমহনী বাজারের শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাটের পুকুর গ্রামের তবিবর রহমান, শাহাদাৎ, রফিকুল ইসলাম, ইসাহাক আলী, বাবলু, ইসমাইল হোসেনসহ কয়েকজনের বাড়িতে বিভীষিকাময় অবস্থা বিরাজমান। বাড়িগুলোতে নারী-শিশুদের আহাজারি এলাকার বাতাস ভারী করে তুলেছে। পুলিশ ও অন্যান্য সূত্র জানায়, নাশকতা অগ্নিসংযোগ ও সন্ত্রাসী ঘটনার নায়ক জামায়াতের জয়পুরহাট সদর থানার এ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হাঁটুভাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসার সুপার শাহ আলমকে শুক্রবার গ্রেফতার করে নিয়ে আসার সময় চৌমহনী নামক স্থানে কয়েকশ’ জামায়াত-শিবির কর্মীরা ডিবি পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে শাহ আলমকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় ডিবি পুলিশকে রক্ষা করতে যাওয়ার অপরাধে ঐ রাতেই মোঃ সুলতান নামে এক ব্যক্তিকে বেধড়ক পিটিয়ে এক ধানের জমিতে ফেলে রাখে। পরে তাকে এলাকাবাসীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই ঘটনার জেরে শনিবার দুপুরে পাটের পুকুর গ্রামে জামায়াত-শিবির হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশ সুপার জানান, পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া জামায়াতের শাহ আলমকে উদ্ধারে এবং শনিবারে পাটের পুকুর গ্রামে তা-বলীলার নায়কদের গ্রেফতার করতে পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
×