ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চিলিতে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর অনুষ্ঠিত হবে ১১ জুন থেকে ৪ জুলাই

মেসি-নেইমারের কোপা আমেরিকা চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১১ এপ্রিল ২০১৫

মেসি-নেইমারের কোপা আমেরিকা চ্যালেঞ্জ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো আন্তর্জাতিক ফুটবল আসর কোপা আমেরিকা। চিলিতে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের এই আসর এবার অনুষ্ঠিত হবে ১১ জুন থেকে ৪ জুলাই। দক্ষিণ আমেরিকার ১০ দেশের সঙ্গে মেক্সিকো ও জ্যামাইকাকে নিয়ে আয়োজিত এ টুর্নামেন্টে লিওনেল মেসি ও নেইমারের দিকে তাকিয়ে আছে যথাক্রমে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। বার্সিলোনার এই দুই তারকার পারফর্মেন্সের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করছে দেশ দুটির সাফল্য। তবে সময়ের অন্যতম সফল দুই তারকার সাফল্য নিয়ে বেশ সন্দিহান সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার কিংবদন্তি পেলে। চিলির রাজধানী সান্টিয়াগোতে ঘরহারাদের সাহায্যার্থে এক প্রচারে অংশ নেয়ার সময় চ্যালেঞ্জের সুরে কথাগুলো বলেছেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি। পেলের মতে, মেসি-নেইমারের সাফল্য পাওয়া কঠিন হবে কোপা আমেরিকা ফুটবলে! মেসি ও নেইমারের প্রতিভা নিয়ে পেলের মনে কোন সন্দেহ নেই। তবে ব্রাজিলের ফুটবল কিংবদন্তি কোপা আমেরিকায় এ দু’জনের সাফল্য নিয়ে সন্দিহান। শুক্রবার সাক্ষাতকারে পেলে বলেন, সে (মেসি) স্পেনের বার্সিলোনায় পরিচিত দলের হয়ে খেলে। তখন সে ভালমতোই জানে, তার কাছ থেকে কী চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু মেসি আর্জেন্টাইন দলের হয়ে খেলার সময় বিষয়টা একই রকম থাকে না। তখন তার খেলার ধরন পাল্টে ফেলতে হয়। আর্জেন্টিনা দল বার্সিলোনার মতো সংগঠিত নয়। নেইমার আর ব্রাজিলের ক্ষেত্রেও ঠিক একই ঘটনা ঘটে। অবশ্য পেলের বিশ্বাস, মেসি-নেইমারের জন্যই কোপা আমেরিকার আকর্ষণ অনেক বেড়ে যাবে এবার। এ প্রসঙ্গে তার মতমত, বর্তমান সময়ে একটা দলের চেয়ে একজন খেলোয়াড়ের পরিচিতিই যেন বেশি। তাই সন্দেহ নেই, এটা হতে যাচ্ছে তারকাসমৃদ্ধ কোপা। কোন দল শিরোপা বাজিমাত করবে এ প্রসঙ্গে পেলে বলেন, ফুটবলে এখন অদ্ভুত এক সমতা। কে শিরোপা জিতবে, তা বলা সম্ভব নয়। কম্পিউটার আর টেলিভিশনের সৌজন্যে প্রত্যেকেই নিজেদের প্রতিপক্ষ সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারে। ফাইনালে কারা উঠবে আর শিরোপা জয় করবে কোন দল তা বলা খুব কঠিন। এবারের কোপা আমেরিকা কাপে ব্রাজিল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের পুনর্মঞ্চায়ন দেখার সুযোগ পাচ্ছে ফুটবলবিশ্ব। কেননা এবারের আসরে একই গ্রুপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ২০১৪ বিশ্বকাপের শেষ আটে মুখোমুখি হওয়া ব্রাজিল ও কলম্বিয়া। গত নবেম্বরে আসরের ড্র সম্পন্ন হওয়ার পর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। ৪৪তম আসরকে সামনে রেখে টুর্নামেন্টের নির্বাহী কমিটি ড্র সম্পন্ন করে। আগেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল আয়োজক দেশ হিসেবে চিলি থাকবে ‘এ’ গ্রুপে। আর ‘বি’ গ্রুপে আর্জেন্টিনা ও ‘সি’ গ্রুপে রাখা হয় ব্রাজিলকে। যে কারণে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর গ্রুপ পর্বে দেখা হচ্ছে না। ড্র অনুষ্ঠানে তিন গ্রুপে ১২ দলকে রাখা হয়েছে। ‘এ’ গ্রুপে স্বাগতিক চিলির সঙ্গে আছে মেক্সিকো, ইকুয়েডর ও বলিভিয়া। ‘বি’ গ্রুপে বিশ্বকাপের রানার্সআপ আর্জেন্টিনার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে ও জ্যামাইকরা। উরুগুয়ে ও প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের কোপা আমেরিকায়ও গ্রুপ পর্বে খেলেছিল আর্জেন্টিনা। ‘সি’ গ্রুপে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্ট ব্রাজিলের সঙ্গে আছে কলম্বিয়া, পেরু ও ভেনিজুয়েলা। প্রথম পর্ব শেষে তিন গ্রুপ থেকে দুটি করে শীর্ষ দল কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট পাবে। এই ছয় দলের সঙ্গে তিন গ্রুপের সেরা দুটি তৃতীয় হওয়া দল শেষ আটে খেলবে। ১২ জাতির এ আসরে এবার অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে জ্যামাইকার। বিশ্বকাপে ইতালিয়ান ডিফেন্ডার জিওর্জিও চিয়েল্লিনিকে কামড়ের দায়ে উরুগুয়ের হয়ে নয় ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়া লুইস সুয়ারেজকে কোপা আমরিকায় পাচ্ছে না উরুগুয়ে। বিশ্বকাপ ফুটবলের পর জনপ্রিয়তার বিচারে কোপা আমেরিকা কাপকেই এগিয়ে রাখেন ফুটবল বোদ্ধারা। ফুটবলের সবচেয়ে প্রাচীন এ আসরকে ঘিরে উন্মদনার মাত্রাটা বিশ্বকাপ ফুটবলের চেয়ে কোন অংশে কম থাকে না। কেননা এখানে অংশগ্রহণ করে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে সফল ও জনপ্রিয় দুটি দল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। এ দুটি দলের অংশগ্রহণ যে টুর্নামেন্টে রয়েছে সেই টুর্নামেন্টের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের চেষ্টা করাটা বাতুলতার পর্যায়েই পড়ে! আরও একবার শুরু হওয়ার অপেক্ষায় দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। ১৯১৬ সালে যাত্রা শুরুর পর এবার কোপা কাপের ৪৪তম আসর।
×