নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা, ৯ এপ্রিল ॥ আর মাত্র এক সপ্তাহ। এরপরই হাওড়াঞ্চলে পুরোদমে বোরো ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবে। গোটা হাওরজুড়ে দেখা দেবে এক অন্যরকম উৎসবের আমেজ। কিন্তু এরই মধ্যে দ্বিতীয় দফার সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও নেত্রকোনার হাওর জনপদ খালিয়াজুরি উপজেলার বেশিরভাগ ফসল রক্ষা বাঁধের মোরমতকাজ এখনও শেষ হয়নি। এর ফলে নানা আশঙ্কায় দিন কাটছে স্থানীয় কৃষকদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, এ বছর খালিয়াজুরি উপজেলায় ঠিকাদারের মাধ্যমে চারটি এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে ১৫টি ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামতের কাজ হাতে নেয়া হয়। প্রথম দফায় পিআইসির মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের সর্বশেষ সময়সীমা ধরা হয়েছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি। পরবর্তীতে তা ৩১ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পিআইসির অধিকাংশ বাঁধ মেরামত এখনও শেষ হয়নি। পিআইসির সদস্যদের অভিযোগ, তাদের চার কিস্তিতে প্রকল্পের সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও কেবল দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে। এ কারণে অনেকে কাজ শেষ করতে পারছেন না। নেত্রকোনার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী খুশিমোহন সরকারও তা স্বীকার করে জানান, বরাদ্দপ্রাপ্তিতে দেরি হওয়ায় কাজ কিছুটা পিছিয়ে গেছে। তবে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির আগেই যত দ্রুত সম্ভব সব প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে।
এদিকে, ঠিকাদারের মাধ্যমে খালিয়াজুরির সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ চারটি বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে। বাঁধগুলো হলোÑ ১নং ফোল্ডারের চৌতারা বাঁধ, ২নং ফোল্ডারের আতোয়ারের বাঁধ, ৩নং ফোল্ডারের রসুলপুরের (দক্ষিণ) বাঁধ এবং ৪নং ফোল্ডারের চৈতা বাঁধ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বাঁধগুলোতে মাটি কাটার কাজ শুরু হলেও শেষ হতে এখনও অনেক বাকি। পাউবোর স্থানীয় কর্মকর্তা শাহাবুদ্দিন আহমেদ জানান, ঠিকাদারের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন এসব প্রকল্পের সময়সীমা এখনও শেষ হয়নি। আশা করা যাচ্ছে, এপ্রিলের মধ্যেই সব কাজ শেষ হবে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, ইতোমধ্যে কয়েক দফা বৃষ্টির কারণে হাওড়েরর নদ-নদীগুলোর পানি বাড়তে শুরু করেছে। অতীতে দেখা গেছে, এপ্রিলের মাঝামাঝিতেই অকাল বন্যায় ব্যাপক ফসলহানি ঘটেছে। তাই আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বাঁধগুলোর মেরামত শেষ না হলে ফসলহানির আশঙ্কা থেকেই যাবে। জেলা প্রশাসক ড. তরুণ কান্তি শিকদার জানান, বাঁধগুলোর মেরামতকাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।