ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রতিবাদ সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ

আগুন সন্ত্রাসীদের নেত্রীকে নগরবাসী আর সমর্থন দেবে না

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৯ এপ্রিল ২০১৫

আগুন সন্ত্রাসীদের নেত্রীকে নগরবাসী আর সমর্থন দেবে না

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ‘খুনী’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, জামায়াত-বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়াসহ খুনীদের রাস্তায় নামার সুযোগ দেয়া হবে না। শূন্যহাতে পরাজিত সৈনিকদের মতো বিএনপি নেত্রী চুপিসারে ঘরে ফিরে গেছেন। আন্দোলনের নামে নির্বিচারে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার জন্য দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়াকে জবাবদিহি করতেই হবে। যারা আগুন সন্ত্রাসীদের দিয়ে মানুষ হত্যা ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তাদের সিটি নির্বাচনে নগরবাসী সমর্থন দেবে না। বুধবার রাজধানীতে জামায়াতের ডাকা হরতালবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের মিছিল, সমাবেশ ও আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রীরা এসব কথা বলেন। খুনীদের রাস্তায় নামার সুযোগ দেয়া হবে না- শাজাহান খান ॥ নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, কার্যালয় ছেড়ে বাসায় গিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া আপোসহীন নেত্রীর ভাবমূর্তি খুইয়েছেন। অনেকে বলেন, খালেদা জিয়া সিটির নির্বাচনী প্রচারে নামবেন। কিন্তু কোন্ মুখে উনি নামবেন? বাংলার মানুষ এত বোকা নয়। আমার ভাই মরেছে। জামায়াত-বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া ‘খুনী’। এই খুনীদের রাস্তায় নামার সুযোগ দেয়া হবে না। বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিশিষ্ট অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, কবি রবীন্দ্র গোপ, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ। তৈরি পোশাক খাতে বিভিন্ন সময়ে অস্থিরতার জন্য ‘কিছু বামপন্থী’কে দায়ী করে পরিবহন শ্রমিক নেতা শাজাহান খান বলেন, গার্মেন্টস খাতে কিছু বামপন্থী ফাউল খেলে পা ভেঙ্গে ঘরে বসে আছে। আর রাজনীতিতে ফাউল খেলে খালেদা জিয়া পা ভেঙ্গে ঘরে বসে আছেন। শূন্যহাতে পরাজিত সৈনিকদের মতো চুপিসারে ঘরে ফিরে গেছেন। গত তিন মাসের অবরোধ-হরতালের নামে মানুষ খুন করে বিএনপির ক্ষতি ছাড়া লাভ হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ৯২ দিনের আন্দোলনে ‘ঘোড়ার ডিম’ অর্জন করেছেন। এই ঘোড়ার ডিম নিয়ে ঘরে বসে আছেন। খালেদা জিয়া এখন নিজের দলের কর্মীদের ওপরও আস্থা রাখতে পারবেন না। এটাই উনার জন্য ভয়ঙ্কর পরিণতি। খালেদা জিয়ার উদ্দেশে শাজাহান খান আরও বলেন, সরকারের বিরোধিতার নামে মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি তৈরি করবেন? বাংলার মানুষ তা হতে দেবে না। ঘষেটি বেগমের ইতিহাস টেনে তিনি বলেন, ঘষেটি বেগমের কবর জোটেনি। খালেদা জিয়া মিথ্যাচারিণী খলনায়িকা, আপোসহীনের বদলে পাপোশ হয়ে গেছেন। এই পাপোশের কোথায় জায়গা হয় তা দেখার জন্য বাংলার মানুষ অপেক্ষা করছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সাংস্কৃতিককর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের রেহাই নেই- ত্রাণমন্ত্রী মায়া ॥ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেছেন, সহিংসতা করে কোন লাভ হবে না। সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় বাংলাদেশে কার্যকর হবে। জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধী কাউকেই রেহাই দেয়া হবে না। আর হরতাল দিয়েও ফাঁসি বন্ধ করা যাবে না। একাত্তরের ঘাতক কামারুজ্জামানের ফাঁসি হবেই। ফাঁসি কার্যকর করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। বুধবার গুলিস্তানের এক নম্বর স্টেডিয়াম গেটে বঙ্গবন্ধু স্কোয়ারে জামায়াতের হরতালের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। নৌকা সমর্থক গোষ্ঠী এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে মায়া আরও বলেন, অনেক করেছেন, আর ষড়যন্ত্র বা নৈরাজ্য সৃষ্টি করবেন না। আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যার জন্য আপনাকে জবাবদিহি করতেই হবে। আর ২০১৯ সালের আগে কোন নির্বাচন হবে না। এরমধ্যে কোন ষড়যন্ত্র করা হলে তা সহ্য করা হবে না। তাই এখনও সময় আছে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসুন। জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ করুন। নিয়াজ মোহাম্মদ খানের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেনÑ নগর আওয়ামী লীগ নেতা ফয়েজ উদ্দিন মিয়া, সহিদুল ইসলাম মিলন, আবদুল হক সবুজ, অভিনেতা মিজু আহমেদ প্রমুখ। মানুষ হত্যাকারীদের নগরবাসী সমর্থন দেবে না- ড. হাছান মাহমুদ ॥ যারা মানুষ হত্যা ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তাদের নগরবাসী সমর্থন দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত হরতালবিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, ব্যারিস্টার জাকির হোসেন, হাসিবুর রহমান মানিক, এমএ করিম প্রমুখ। হাছান মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জন্য বিএনপি জঙ্গীদের অর্থায়নকারী আবদুল আউয়াল মিন্টুকে সমর্থন দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তার মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পর এখন শুনছি তারা জঙ্গীদের পরামর্শদাতা মাহী বি চৌধুরীকে সমর্থন দেবে। তিনি বলেন, দক্ষিণে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মির্জা আব্বাসতো একজন জঙ্গীনেতা। খালেদা জিয়া সিটি নির্বাচনে প্রচারে অংশ নেবেন বলে শুনেছি। তিনি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াবেন আর আমাদের মন্ত্রীরা প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না- এটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হতে পারে না। খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে তাদের সন্ত্রাসীদের আগাম জামিনের চেষ্টা করছেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। আদালতকে প্রভাবিত করার তাঁর চেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক। আর বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খানও নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চাইছেন। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরাও কোনভাবে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চাই না। তিনি বলেন, হরতাল একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের হাতিয়ার। কিন্তু জামায়াত এখন আদালতের বিরুদ্ধেও তা ব্যবহার করছে।
×