ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে ফের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ৮ এপ্রিল ২০১৫

কলাপাড়ায় হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে ফের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৫ এপ্রিল ॥ হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত এলাকায় ফের শত শত পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ ঝুপড়ি স্থাপনায় বসবাস করছে। ফলে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোপূর্বে এসব পরিবারকে বেড়িবাঁধের ভেতরে পুনর্বাসন করা হয়। কিন্তু প্রশাসনের উদাসীনতায় প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে ফের এসব পরিবার কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের শূন্যপয়েন্ট থেকে বেলাভূমে ও তার আশপাশে চরম ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের ঝাপটায় এসব স্থাপনা যে কোন সময় ভেসে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে সম্পদ ও প্রাণহানির আশঙ্কাও রয়েছে। আর বড় ধরনের ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে সব ল-ভ- হয়ে যাবে। সরেজমিনে দেখা গেছে, কুয়াকাটা সৈকতের শূন্য পয়েন্টের দুই দিকে এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা। সবচেয়ে বেশি স্থাপনা রয়েছে পশ্চিম দিকটায়। এখানে সরকারী উদ্যোগে ৫০টি জেলে পরিবারকে বহুপূর্বে পুনর্বাসন করা হয়েছিল। সিডরের সময় এসব পরিবার ল-ভ- হয়ে যায়। পরবর্তীতে ওইসব পরিবারকে বেড়িবাঁধের ভেতরে ঘর তুলে নিরাপদ পুনর্বাসন করা হয়। উপজেলা প্রশাসন সূত্রমতে, সৈকত এলাকার প্রায় ৬০টি পরিবারকে ডঙ্কুপাড়া গ্রামে এবং ফাঁসিপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে আরও প্রায় এক শ’ পরিবারকে ঘরসহ পুনর্বাসন করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের উদাসীনতায় ওইসব পরিবার ফের আশ্রয় নেয় সৈকত এলাকায়। অন্তত তিন শ’ পরিবার এখন বস্তি গেড়ে বসেছে। সাগরের ওয়াটার লেভেলের কাছাকাছি এসব পরিবারের বসবাস। ফলে জলোচ্ছ্বাসসহ কোন ধরনের ঝড়ো-হাওয়া আঘাত হানলে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক অমিতাভ সরকার জানান, ইতোপূর্বে এদের নিরাপদ স্থানে পুনর্বাসন করা হয়। কেউ আবার সমুদ্রসৈকত এলাকায় বসবাস করতে থাকলে আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখব। ২০১১ সালের ২ জুন পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত এলাকা থেকে সব ধরনের স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কুয়াকাটা সৈকতকে রক্ষা করতে ওই সময় দুটি রুলও জারি করা হয়। হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও গোবিন্দ ঠাকুরের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে ওই সময় দু’শতাধিক স্থাপনা ভেঙ্গে দেয় পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসন। কিন্তু এ আদেশ পালনে এবং মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় বেড়িবাঁধের বাইরে স্থাপনা তোলা কিংবা বস্তি নির্মাণ করে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস বন্ধ হয়নি।
×