ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীনিবাসন ও ডালমিয়ার প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে

বাংলাদেশ-ভারত সিরিজের পথ দেখাবে আইপিএল

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ৬ এপ্রিল ২০১৫

বাংলাদেশ-ভারত সিরিজের পথ দেখাবে আইপিএল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আইপিএল শুরু হতে আর দুইদিন বাকি। এখনও এ লীগের চেয়ারম্যান পদে কে বসবেন, তা নির্ধারণ হয়নি। এ পদটি নিয়ে ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি জগমোহল ডালমিয়া ও আইসিসি চেয়ারম্যান নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের মধ্যে চলছে দ্বন্দ্ব। ডালমিয়া ও শ্রীনিবাসন পন্থী নিজেদের লোককে এ পদে বসাতে চাচ্ছেন। ডালমিয়া চাচ্ছেন অজয় শিরকে হোক চেয়ারম্যান। আর শ্রীনিবাসন চাচ্ছেন রঞ্জিব বিসওয়ালকে। এই আইপিএলের চেয়ারম্যান নির্ধারণেই জুনে বাংলাদেশ-ভারত সিরিজের পথ মিলে যেতে পারে। আইপিএলের চেয়ারম্যান পদে যদি ডালমিয়া পন্থীর লোক বসতে পারেন, তাহলে বোঝা যাবে শ্রীনিবাসনের কোন দাপটই এখন আর বিসিসিআইয়ে নেই। তখন বাংলাদেশ-ভারত সিরিজও যে হবে, তাও বোঝা যাবে। আর যদি শ্রীনিবাসন পন্থীর জয় হয়, তাহলে বোঝাই যাবে বাংলাদেশ-ভারত সিরিজটি হুমকির মধ্যেই পড়ে যাবে। দ্রুতই এ পথ মিলে যাবে। আইপিএল শুরু হতে সময় খুব বেশি নেই। দুই একদিনের মধ্যেই আইপিএল চেয়ারম্যান পদে কে বসছেন, তা নিশ্চিত হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ কোন দিকে মোড় নিচ্ছে, তারও একটা আলামত মিলবে। আইসিসির সাবেক সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল যে শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে বিষদগার করেছেন, এরপর শ্রীনিবাসন প্রতিশোধ নিতে চাইবে স্বাভাবিক। সেই প্রতিশোধ নিতে এরইমধ্যে বিসিসিআইয়ে যে তার লোকজন আছেন, তাদের উস্কাচ্ছেনও। যেন বাংলাদেশ-ভারত সিরিজটি বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি হিসেবে আইসিসিতে শ্রীনিবাসন থাকলেও, বিসিসিআইয়ে মূলত তার কোন স্থান নেই। আইপিএল ফিক্সিং কেলেঙ্কারি তার কপালে এখনও তিলক একে দিয়েই রেখেছে। সেই তিলকে বিসিসিআই থেকে শ্রীনিবাসনকে বের করে দেয়া হয়েছে। এখন বিসিসিআইয়ের সভাপতি জগমোহন ডালমিয়া। ডালমিয়ার সঙ্গে শ্রীনিবাসনের আগে ভাল সম্পর্ক থাকলেও এখন আইপিএল নিয়ে সম্পর্ক তিক্ত হচ্ছে। সেই সম্পর্কের ফসল পেতে পারে বাংলাদেশ। এমনই ধারণা করা হচ্ছে ভারতের পত্রিকাগুলোতে। ডালমিয়া এমন একজনকে চেয়ারম্যান করতে চাইছেন, যিনি এর আগে শ্রীনিবাসন বিসিসিআইয়ে থাকতে প্রতিবাদ করে পদত্যাগ করেছিলেন। তিনিই সেই অজয় শিরকে। এতে করেই বোঝা যাচ্ছে, শ্রীনিবাসনকে এখন আর পাত্তা দিচ্ছেন না ডালমিয়া। রাজনৈতিক পটভূমি পরিবর্তনের সঙ্গে নাকি সবক্ষেত্রেই পরিবর্তন ঘটে। সেই পরিবর্তন দেখাও গেছে। শ্রীনিবাসনকে বিসিসিআই থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এমনও আশঙ্কা করা হচ্ছে, শ্রীনিবাসন যদি বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ নিয়ে খুব বেশি উচ্চবাচ্য করার চেষ্টা করেন, তা রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়; আইসিসির চেয়ারম্যান পদই হারাতে পারেন! শ্রীনিবাসন পন্থীর লোকজন নাকি এ নিয়ে খানিকটা চিন্তাতেও আছেন। আর তাই শ্রীনিবাসন পন্থীরা হয়ত বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ বাতিলের প্রস্তাবটি সভায় আনবেন ঠিক। কিন্তু যেই ডালমিয়া পন্থী লোকজন বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাবে, তখন আর এ নিয়ে জল ঘোলা করবেন না। এমনই ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিসিসিআইয়ে ডালমিয়া না শ্রীনিবাসন পন্থীরা বেশি শক্তিশালী, তা বোঝা যাবে আইপিএল চেয়ারম্যান পদে কে বসছেন তার ওপরই। আর এ আইপিএলই বাংলাদেশ-ভারত সিরিজের পথ দেখিয়ে দেবে। অবশ্য এর আগেই বোঝা যাচ্ছে, ডালমিয়া বাংলাদেশের পক্ষই নেবেন। নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের সঙ্গে মুস্তফা কামালের সম্পর্ক যখন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে, তখন বাংলাদেশ জুনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া। শনিবার অনুর্ধ-১৭ বাংলাদেশ টিমের জন্য নৈশভোজের ব্যবস্থা করা হলো। সেই নৈশভোজে হাজির ডালমিয়া। এটাও জানা গেল যে, বাংলাদেশ জুনিয়র টিমের সঙ্গে একটা সিরিজও খেলবে সিএবির জুনিয়র ক্রিকেটাররা। সিএবির টিমও বাংলাদেশ যাবে। যার পরপরই জল্পনা শুরু হয়ে যায়, এ সবের মাধ্যমে বোর্ড প্রেসিডেন্ট কোন বার্তা দিতে চাইলেন কি না? বোঝাতে চাইলেন কি না যে, আইসিসি চেয়ারম্যান শ্রীনির সঙ্গে বাংলাদেশ বোর্ডের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকলেও তিনি ডালমিয়া তাতে খুব প্রভাবিত নন? গত কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ জুনিয়র টিম কলকাতা গেলেও তাদের জন্য ডিনারের বন্দোবস্ত অনেক দিন হয়নি সিএবির পক্ষ থেকে। কিন্তু এবার হলো। আর সেই অনুষ্ঠানে স্বয়ং ডালমিয়ার উপস্থিতি বাংলাদেশ-ভারত সিরিজের জন্য সুখের খবরই।
×