ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সেরা একাদশে অসি কিউই দাপট

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৩১ মার্চ ২০১৫

সেরা একাদশে অসি কিউই দাপট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপ ক্রিকেটজুড়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের দাপট। একদিকে সাতবারের চেষ্টায় ফাইনালে ওঠে কিউইরা। অন্যদিকে রেকর্ড পঞ্চম শিরোপা জিতে বিজয় কেতন ওড়ায় অসিরা। সদ্যসমাপ্ত ১১তম বিশ্বকাপে মাঠ মাতানো ক্রিকেটারদের মধ্য থেকে সেরা একাদশ বেছে নিতে তাই এই দুই দলের ওপরই নির্ভরশীল হয়ে পড়ল ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল)! সোমবার মিলমেলা ভাঙ্গার পরদিন রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড তারকা ব্রেন্ডন ম্যাককুলামকে অধিনায়ক করে আসরের ‘ড্রিম টিম’ ঘোষণা করে আইসিসি। মজার বিষয়, মাঠের মতো এখানেও ভরাডুবি হয়েছে ক্রিকেট মোড়ল ভারতীয়দের। গতবারের চ্যাম্পিয়ন দল থেকে এবার একজনেরও সুযোগ হয়নি তাতে! দক্ষিণ আফ্রিকার দুইজন, শ্রীলঙ্কার একজন ও জিম্বাবুইয়ের মাত্র একজন করে ক্রিকেটারই সেরা একাদশে সুযোগ পেয়েছেন। ম্যাককুলামের দলের অপর সদস্যরা হচ্ছেনÑ অস্ট্রেলিয়ার স্টিভেন স্মিথ, ম্যাক্সওয়েল, মিচেল স্টার্ক, নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল, কোরি এ্যান্ডারসন, ট্রেন্ড বোল্ট, ড্যানিয়েল ভেট্টোরি, দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স, মরনে মরকেল ও জিম্বাবুইয়ের ব্রেন্ডন টেইলর (দ্বাদশ ব্যক্তি)। দেড় মাসব্যাপী বিশ্বকাপে আক্রমণাত্মক, উদ্ভাবনী ও উজ্জীবিত নেতৃত্বের জন্য অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেয়া হয় ব্রেন্ডন ম্যাককুলামকে। ‘লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট’ নেতৃত্বগুণে মাইকেল ক্লার্ক ও এবি ডি ভিলিয়ার্সকে পেছনে ফেলেন তিনি। দলকে প্রথমবারের মতো ফাইনালে তুলে নেয়ার পথে ব্যাট হাতেও ম্যাককুলাম ছিলেন দারুণ সফল। ৯ ম্যাচে চার হাফ সেঞ্চুরির সমন্বয়ে করেছেন ৩২৮ রান। স্ট্রাইক রেট রেকর্ড ১৮৮.৫০! ওপেনিংয়ে ম্যাককুলামের সঙ্গী হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে তারই সতীর্থ মার্টিন গাপটিলকে। দুই সেঞ্চুরি ও এক হাফ সেঞ্চুরির সাহায্যে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ৫৪৭ রান স্টাইলিশ এই কিউই ওপেনারের। আইসিসির ‘ড্রিম টিমে’ গুরুত্বপূর্ণ তিন নম্বর পজিশনে দেখা যাবে কুমার সাঙ্গাকারাকে। দল সেমিতে উঠতে ব্যর্থ হলেও রেকর্ড টানা চার সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৪১ রান লঙ্কান ক্রিকেটের চলমান কিংবদন্তির। আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন বিশ্বকাপই রঙিন পোশাকে তার শেষ টুর্নামেন্ট। বিদায় বেলায় ব্যাট হাতে রানের ফল্গুধারা বইয়ে দিয়ে একমাত্র এশিয়ান হিসেবে সেরা একাদশে জায়গা করে নেন সাঙ্গাকারা। ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী তার পরের জায়গাটি স্টিভেন স্মিথের। এক সেঞ্চুরি ও চার হাফ সেঞ্চুরিতে ৪০২ রান করে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান দলটির আগামীর অধিনায়ক বলে বিবেচিত এই ব্যাটসম্যানের। মারকাটারি প্রোটিয়া উইলোবাজ এবি ডি ভিলিয়ার্স আছেন পাঁচ নম্বরে। আসরে ৯৬.৪০ গড় ও ১৪৪.৩১ স্ট্রাইক রেটে মোট ৪৮২ রান করে দলকে সেমিতে তুলে নিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সেনাপতি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৩২৪ রান, ৬ উইকেট) ও কোরি এ্যান্ডারসন (২৩১ রান, ১৪ উইকেট) আছেন দারুণ অলরাউন্ড পারফর্মেন্সের গুণে। একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে জায়গা হয়েছে ড্যানিয়েল ভেট্টোরির। ওভারপ্রতি মাত্র ৪.০৪ রান দিয়ে বুড়ো বয়সেও ১৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন বাঁহাতি ঘূর্ণি তারকা। একাদশের তিন পেসার মিচেল স্টার্ক, ট্রেন্ট বোল্ট ও মরনে মরকেল। দুই বাঁহাতি স্টার্ক ও বোল্ট দুজনেই নিয়েছেন টুর্নামেন্টের সর্বাধিক ২২টি করে উইকেট। এর মধ্যে অবিশ্বাস্য নৈপুণ্যে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার পকেটে নিয়েছেন স্টার্ক। প্রোটিয়া পেসার মরকেলের শিকার ১৭ উইকেট। আইসিসির একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল এই একাদশ নির্বাচন করে। প্যানেলের প্রধান ও আইসিসির মহাব্যবস্থাপক জিওফ এ্যালাইডাস জানিয়েছেন, সেরা একাদশ নির্বাচনের বাছাইয়ে বাংলাদেশের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আরব আমিরাতের ব্যাটসম্যান শাইমান আনোয়ার, ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামি, উমেষ যাদব, পাকিস্তানের ওয়াহাব রিয়াজ, স্পিনার হিসেবে ইমরান তাহির ও রবিচন্দ্রন আশ্বিনের নামও বিবেচনায় এসেছিল। দল নির্বাচনে জিওফের সঙ্গে ছিলেন নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের সাংবাদিক এ্যান্ড্রু এ্যান্ডারসন, ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে, আম্পায়ার রিচার্ড কেলেটবরো, দ্য এজের সাংবাদিক ক্লোর স্যালটাও, সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভন। বিশ্বকাপের সেরা একাদশ ॥ ম্যাককুলাম (অধিনায়ক), গাপটিল, সাঙ্গাকারা, স্টিভেন স্মিথ, ডি ভিলিয়ার্স, ম্যাক্সওয়েল, কোরি এ্যান্ডারসন, ভেট্টোরি, স্টার্ক, বোল্ট, মরনে মরকেল ও ব্রেন্ডন টেইলর (দ্বাদশ)।
×