ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হামলা ও সংঘর্ষে আহত ৭৪ বাড়ি, দোকান ভাংচুর

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ২৯ মার্চ ২০১৫

হামলা ও সংঘর্ষে আহত ৭৪ বাড়ি, দোকান ভাংচুর

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ শুক্রবার সন্ধ্যা ও শনিবারে নেত্রকোনায় তুচ্ছ ঘটনার জেরে সংঘর্ষে ত্রিশ, দৌলতপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় ১০, কলাপাড়ায় ৯ ও ভাঙ্গায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ২৫ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। খবর নিজস্ব সংবাদদাতা ও সংবাদাতাদের।- নেত্রকোনা ॥ জেলার খালিয়াজুরি উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের ইছাপুর গ্রামে শুক্রবার সন্ধ্যায় দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। এ সময় বেশ কিছু বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাংচুরসহ গুলি ছোড়ার ঘটনাও ঘটে। জানা গেছে, সপ্তাহ খানেক আগে মেন্দিপুর ইউনিয়নের বোয়ালী গ্রামে গাত্র শাহর মাজারের ওরস চলাকালে বোয়ালী গ্রামের মেনু মিয়ার ছেলে আরিফ ও সাতগাঁও গ্রামের আবু চানের ছেলে মামুনের মধ্যে বাগ্বিত-া হয়। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার মামুন ও তার লোকজন আরিফকে মারধর করে। শুক্রবার মামুনের পক্ষের লোকজন বোয়ালী গ্রামে গিয়ে ওই ঘটনার মীমাংসা করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এ সময় কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বোয়ালী গ্রামের দুলাল, আল-আমিন, সুজন, কাজল, আহাম্মদ, হাইজুদ্দিন, সাতগাঁও গ্রামের আলম, মামুন, আলমগীর, মঞ্জুরুল হক, শেখচান, আবাল মিয়া, সোহেলসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়। এ সময় ইছাপুর গ্রামের ৫-৬টি ঘরবাড়িও ভাংচুর করা হয়। খালিয়াজুরি ও মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। খালিয়াজুরি উপজেলার ইউএনও বদরুল হাসান লিটন এবং ওসি আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দৌলতপুর ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে হত্যা মামলা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৫ জনকে দৌলতপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার শিতলাইপাড়া মাঠে হামলার এ ঘটনা ঘটে। আহত তুহিন ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শিতলাইপাড়া গ্রামের এক গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে ঘটনার দিন সকালে মাঠে কাজ করা অবস্থায় প্রতিপক্ষ মকছেদ আলীর নেতৃত্বে আরিফ ও রানাসহ ১৫-১৬ জন নিহতের পরিবারের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীদের বাধা দিতে গিয়ে তাদের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে অন্তত ১০ জন আহত হলে তুহিন (২৪), খাইরুল ইসলাম (৪৫), আনারুল ইসলাম (৪৮), রিয়াজুল ইসলাম (৫০) ও আহসান হাবিবকে (৩৫) দৌলতপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকি আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসাধীন রয়েছে। কলাপাড়া ॥ কলাপাড়ার খ্রীস্টান পল্লী সদরপুর গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে মহিলাসহ এক পরিবারের চার খ্রীস্টান সদস্যসহ অন্তত নয় জন রক্তাক্ত জখম হয়েছে। এর মধ্যে শঙ্কাজনক অবস্থায় আট জনকে বরিশাল শেবাচিমে পাঠানো হয়েছে। আহতরা হচ্ছেন, খ্রীস্টান পল্লীর বাসীন্দা মনোজ বিশ্বাস, যুগান্ত বিশ্বাস টিটু, মিঠু, তাদের মা লতিকা এবং প্রতিপক্ষের লিটন, অহিদ মুন্সী, রাশিদা বেগম, নিজাম মুন্সী ও শহিদ মুন্সী। শনিবার সকাল আনুমানিক নয়টার দিকে সংঘাতের ঘটনা ঘটে। আহত মনোজ বিশ্বাস জানান, তাদের জমির মাটি কাটায় বাধা দেয়ায় স্থানীয় মুন্সী গ্রুপের ৭-৮ সদস্য হোন্ডাযোগে তাদের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র, রড নিয়ে ঘরে ঢুকে হামলা-তা-ব চালায়। মারধর ও কুপিয়ে ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ করে রাখে তাদের গোটা পরিবার। পুলিশ গিয়ে তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসে। এ ঘটনার জন্য মনোজ তাদের আত্মীয় শোভলন বিশ্বাসকে দায়ী করে জানান, তার ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিজাম মুন্সী গং অতর্কিত হামলা-তা-ব চালায়। নিজাম মুন্সী গং তাদের মারধর করে নিজেরা আহত সেজে আগেই হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হয় বলে মনোজের দাবি। শোভলন বিশ্বাস তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এসব বিষয় তিনি কিছুই জানেন না। কলাপাড়া থানার ওসি আজিজুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে আহত খ্রীস্টান সদস্যদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ভাঙ্গা ॥ ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা ঘারুয়া ইউনিয়নের রশিবপুরা গ্রামে শনিবার দুপুরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের ভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় এক দলের মামলা হয়েছে। জমি থেকে টমেটো খাওয়া নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। এলাকাবাসী জানায়, দেলোয়ার মেম্বার গ্রুপের মুকুল ফকির (২৮) ঘটনার দিন সকালে, আওলাদ মুন্সী গ্রুপের নজরুল মুন্সির টমেটো ক্ষেত থেকে টমেটো ছিঁড়লে মুকুলকে নজরুল ও আইয়ুবালী মারধর করে। তার জের ধরে উভয় গ্রুপের লোকজনেরা সংঘবদ্ধ হয়ে দুপুরে ঢাল, শড়কি, রামদা, টেঁটা, ইট-পাটকেল প্রভৃতি দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে ব্যাপক ধাওয়া,পাল্টা ধাওয়াসহ কয়েক দফা সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষ এলাকায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৫জন নারী-পুরুষ আহত হয়েছে ও তিনটি বাড়ি ভাংচুর সহ লুট-পাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
×