ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বোল্ট-স্টার্ক যুদ্ধ আবার

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ২৮ মার্চ ২০১৫

বোল্ট-স্টার্ক যুদ্ধ আবার

মোঃ মামুন রশীদ ॥ শেষ পর্যন্ত এবার বিশ্বকাপের ট্রফিটা আয়োজকদের ঘরেই থাকছে তা নিশ্চিত হয়ে গেছে। দুই ট্রান্স-তাসমান চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড লড়াই এবার শিরোপা দখলের। এখন পরস্পরকে মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে দু’দল। কার ঘরে শিরোপা উঠবে তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। শক্তিমত্তায় এগিয়ে কারা তা নিয়েও চলছে গবেষণা। নিউজিল্যান্ড এখন পর্যন্ত একদিক থেকে এগিয়ে। সবগুলো ম্যাচই জিতেছে তারা। তবে ধারাবাহিকভাবে বোলিং বিভাগে পেসার ট্রেন্ট বোল্ট ছাড়া আর কেউ কিংবা ব্যাটিংয়ে নিয়মিত ভাল করতে পারেননি কেউ। দলগত পারফরম্যান্সই মূল শক্তি তাদের। তবে অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের ব্যাটিং তা-ব আর পেস অলরাউন্ডার কোরি এ্যান্ডারসন অনেক বড় শক্তি দলটির জন্য। অপরদিকে, অসিরা গ্রুপপর্বে এক ম্যাচ হারলেও বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের ধারাবাহিক সাফল্যই অন্যতম অনুপ্রেরণা। বিশেষ করে টপঅর্ডারে স্টিভেন স্মিথের দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্য, পেসার মিচেল স্টার্কের বিধ্বংসী বোলিং এবং অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল অসিরা। ফাইনালে দু’দলের এ কয়েকজন ক্রিকেটারের ওপর থাকবে সবার বাড়তি আগ্রহ এবং দারুণ কিছু দেখার প্রত্যাশা। দু’দলের বেশ কয়েকজন তারকার দিকে নিবদ্ধ থাকছে দৃষ্টি। দু’দলের থিঙ্ক ট্যাঙ্করাও ব্যতিব্যস্ত ওই তারকাদের সামাল দেয়ার জন্য পরিকল্পনা তৈরিতে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টপঅর্ডারের দুশ্চিন্তাটা আপাতত লাঘব করেছেন ২৫ বছর বয়সী তরুণ স্মিথ। দুর্দান্ত ফর্মে আছেন তিনি। দলের তিন নম্বর পজিশনে এতদিন নিয়মিত শেন ওয়াটসন তেমন সুবিধা করতে পারছিলেন না। বিশ্বকাপের টানা দুই ম্যাচেও ওয়াটসন ব্যর্থ হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত স্মিথকে তিন নম্বর পজিশনে উঠিয়ে এনেছে অসি শিবির। আর সে সুযোগটা পেয়েই বাজিমাত করে ফেলেছেন স্মিথ। টানা চার ম্যাচে তিনি করেছেন ৯৫, ৭২, ৬৫ ও ১০৫। সে কারণে তাঁকে নিয়ে বাড়তি পরিকল্পনা করতেই হবে কিউই শিবিরকে। এরপর ব্ল্যাক ক্যাপসদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হিসেবে আছেন অলরাউন্ডার ম্যাক্সওয়েল। যদিও বল হাতে তেমন কিছু করতে পারেননি অফস্পিন করতে সক্ষম এ অলরাউন্ডার। তবে ব্যাট হাতে বিধ্বংসী হয়ে ওঠার ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। সেটা তিনি করে দেখিয়েছেন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪০ বলে ৬৬, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৩৯ বলে ৮৮ ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৫৩ বলে ১০২ রানের ইনিংসগুলো খেলেই। তাই তাঁর বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে কিউইদের। কিউই ব্যাটিংয়ের জন্য সবচেয়ে বিপদ পেসার স্টার্ক। এ পেসার এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ২০ উইকেট শিকার করেছেন মাত্র ১০.২০ গড়ে। এর পাশপাশি বেশ মিতব্যয়িতারও প্রমাণ দিয়েছেন ওভারপ্রতি মাত্র ৩.৬৫ রান দিয়ে। এ কারণে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবেন স্টার্ক। গ্রুপপর্বে দু’দলের মুখোমুখিতে মাত্র ২৮ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ভীতির নাম তিনি কিউই শিবিরের জন্য। অস্ট্রেলিয়ার শক্তিমত্তা নিয়ে যেমন প্রথমবার ফাইনালে ওঠা কিউই শিবির ব্যস্ত, তেমনি অসি শিবিরেও ঘুমহীন রজনী কাটছে চিরশত্রুদের ঠেকানোর মন্ত্র জপে। যে কোন প্রতিপক্ষের জন্যই দারুণ ভয়ঙ্কর অধিনায়ক ওপেনার ম্যাককুলাম। গ্রুপপর্বেও অসি বোলিংকে তছনছ করে দিয়েছিলেন তিনি মাত্র ২৪ বলে ৫০ রান করে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৪৯ বলে ৬৫ এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাত্র ২৫ বলে ৭৭ রানের মহাতা-ব চালানো ইনিংস খেলেছেন তিনি। এবারও তাই তাঁকে নিয়ে ভাবতে হবে অসি শিবিরকে। ব্যাটে-বলে দারুণ করে যাচ্ছেন এ্যান্ডারসন। ওয়ানডের দ্বিতীয় দ্রুততম শতকের মালিক ৮ ম্যাচে ২৩১ রান করেছেন ১০৯.৪৭ স্ট্রাইকরেটে। এছাড়া বল হাতেও নিয়েছেন ১৪ উইকেট মাত্র ১৬.২১ গড়ে। বোলিংয়ে কিউইদের ভরসার নাম বোল্ট। গ্রুপপর্বে ত্রাস সৃষ্টি করেছেন তিনি প্রতিপক্ষদের শিবিরে। অসিদের বিরুদ্ধে ম্যাচেও মাত্র ২৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ধসে দিয়েছিলেন। ৮ ম্যাচে ১৫.৭৬ গড়ে ২১ উইকেট নিয়ে চলতি আসরের সর্বোচ্চ উইকেটধারী দারুণ গতিধর এ বোলার। তাই বোল্টের বিরুদ্ধে খেলার জন্য বেশ সূক্ষ্ম পরিকল্পনাই আঁটতে হবে অসি শিবিরকে।
×