ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গৃহকর্মীর ভাই-ই ঘাতক;###;গৃহকর্মী কল্পনার ভাই সাঈদের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি

দশ হাজার টাকার জন্য রওশন ম্যাডামকে খুন করেছি

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৭ মার্চ ২০১৫

দশ হাজার টাকার জন্য রওশন ম্যাডামকে খুন করেছি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী ও গৃহকর্মীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় নিহত গৃহকর্মীর ভাই সাঈদ গ্রেফতার হয়েছে। সাঈদ মাত্র দশ হাজার টাকার জন্য পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীকে প্রথমে জবাই করে। বাধা দিলে নিজের বোনকেও সে একই ভাবে হত্যা করে। ঢাকার সিএমএম আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে এমন বর্ণনাই দিয়েছে গ্রেফতারকৃত সাঈদ। ৫৬ নম্বর উত্তর যাত্রাবাড়ীর কলাপট্টির বাবার প্রাসাদ নামক ফ্ল্যাটের দোতলায় অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল কুদ্দুসের স্ত্রী রওশন আরা (৬৩) তাঁর গৃহকর্মী কল্পনা আক্তারকে (১২) নিয়ে থাকতেন। ওই বাড়িতে দু’জনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ দু’জনের লাশ উদ্ধার করে। নিহত রওশন আরার স্বামী আব্দুল কুদ্দুস ১৯৯৪ সালে মারা যান। তাঁদের দুই মেয়ে ও তিন ছেলের সবাই প্রবাসী। বাড়িটির নিচতলায় দুই ভাড়াটিয়া পরিবার রয়েছে। এ ঘটনায় বুধবার যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন রওশন আরার ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন। বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি অবনী শংকর করের নেতৃত্বে রাজধানীর শাহজাহানপুরের একটি গ্যারেজ থেকে সাঈদ হাওলাদারকে (১৮) গ্রেফতার করে যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইমরানুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্মকমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, ঘটনার দিন বিকেল তিনটার দিকে সাঈদ তার বন্ধু রিয়াজকে নিয়ে ওই বাড়িতে যায়। ওই বাড়িতে তার মা ও বোন কাজ করে। মায়ের সঙ্গে দেখা করে সেখানে দুপুরের খাবার খায়। এরপর সাঈদ ও তার বন্ধুকে ওই বাসায় রেখে ডাক্তার দেখানোর জন্য সাঈদের মা বাইরে যায়। সাঈদ বন্ধুকে নিয়ে ড্রইংরুমে বসে টেলিভিশন দেখছিল। এ সময় বাড়ির মালিক রওশন আরা বেগমের কাছে সবজি ব্যবসা করার জন্য দশ হাজার টাকা ধার চায় সাঈদ। রওশন আরা টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রওশন আরা সাঈদ ও তার বন্ধুকে বকাঝকা করেন। এ সময় উত্তেজিত হয়ে ড্রইংরুমে থাকা ছুরি দিয়ে বন্ধু রিয়াজের সহায়তায় রওশন আরা বেগমের গলায় আঘাত করে সাঈদ। রওশন আরার চিৎকারে সাঈদের বোন কল্পনা ঘটনাটি দেখে চিৎকার করার চেষ্টা করে। এ সময় সাঈদ তার বন্ধু রিয়াজের সহায়তায় নিজের বোনকেও একই কায়দায় ড্রইংরুমে গলা কেটে হত্যা করে। এরপর তারা বাসা থেকে মোবাইল সেট ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যায়। সেগুলো গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেটের সামনে ফুটপাতে বিক্রি করে দেয়। রিয়াজকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। হত্যার দায় স্বীকার করে বৃহস্পতিবার ঢাকার সিএমএম আদালতে সাঈদ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় বলে জনকণ্ঠকে জানান যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবনী শংকর কর।
×