ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচী পরিবর্তন হবে না

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৪ মার্চ ২০১৫

এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচী পরিবর্তন হবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি-জামায়াত জোটের হরতাল-অবরোধে এসএসসি পরীক্ষা বার বার পিছিয়ে দেয়া হলেও আসন্ন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সময়সূচীতে কোন পরিবর্তন আসবে না। জনমনে ব্যপক ক্ষোভের পরেও হরতাল-অবরোধ অব্যাহত রাখলে দেশের শিক্ষার স্বার্থে পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচী অনুসারেই ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে এসএসসি পরীক্ষা বার বার পিছিয়ে দেয়া হলেও আসন্ন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সূচীতে কোন পরিবর্তন আসছে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্ধারিত রুটিন অনুযায়ীই পরীক্ষা হবে, এর কোন ব্যত্যয় হবে না। আগামী ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এতে অংশ নেবে প্রায় ১২ লাখ শিক্ষার্থী। কিন্তু গেল জানুয়ারি থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের চলা হরতাল-অবরোধ বন্ধের কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। জনগণ হরতার প্রত্যাখ্যান করলেও হরতাল-অবরোধ দিয়েই যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোট। তাই সময়মতো আসন্ন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে কিÑনা তা নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় আছে ১২ লাখ পরীক্ষার্থী ও তাদের ২৪ লাখ অভিভাবকরা। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরীক্ষা শুরু হলেও তা কবে শেষ হবে জানা নেই। নির্ধারিত পরীক্ষা এলোমেলো হয়ে পড়ার সম্ভাবনায় শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটছে। লাগাতার হরতাল-অবরোধের কারণে নির্ধারিত পরীক্ষাসূচী অনুযায়ী একদিনও এসএসসি পরীক্ষা হয়নি। ১৬ দিনে ৩৬৮টি তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষা পিছিয়ে যায়। এছাড়া ব্যবহারিক পরীক্ষারও নতুন সূচী ঘোষণা করা হয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবারে নেয়া হচ্ছে এ পরীক্ষা। অবরোধের মধ্যেই শুক্র ও শনিবার আতঙ্ক, ভয়, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যেই ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৬ শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এভাবে হরতাল-অবরোধ চলতে থাকলে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কি হবেÑতা নিয়েই চলছে আলোচনা। তবে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ঘোষিত রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা হবে, এর কোন ব্যত্যয় হবে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শুরুতে হরতালের প্রভাব থাকলেও এখন তেমন প্রভাব নেই। হরতাল-অবরোধেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে গেছে, ক্লাস চলছে। এখন হরতাল-অবরোধ নেই, রাস্তাঘাটে গাড়ি-ঘোড়া চলছে। এসএসসি পরীক্ষা শুক্র-শনিবার নেয়ায় অনেকে বলেছেন এভাবে কত দিন চলবে? আমরা শুধু বলব সূচী অনুযায়ী এইচএসসি পরীক্ষা নেব। এর মধ্যে হরতাল-অবরোধ বিবেচনায় নিতে চাই না। পরীক্ষার্থীদের বলব, তারা যেন দুঃশ্চিন্তা না করে সূচী অনুযায়ী পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়। এইচএসসিতে ১ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ২৮৫টি তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩-২২ জুনের মধ্যে শেষ করতে হবে। হরতাল-অবরোধ করে বিএনপির কোন ‘লাভ’ হচ্ছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা শিক্ষার্থী ও পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে। এটা কারও কাম্য নয়, এটা হতে দেয়া যায় না। যদি তারা মানুষের কথা চিন্তা করে হরতাল অবরোধ চালিয়ে যায় তবে তার মধ্যেই পরীক্ষা নেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত। কেবল মন্ত্রী নন, দেশের স্বার্থের সেøাগান দিয়ে মুখে ফুলঝুড়ি ফোটালেও দেশের শিক্ষা এমনকি পাবলিক পরীক্ষার কথা বিবেচনায় না নিয়ে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচীর চালানোয় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে ভুক্তভোগী শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে। তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, এভাবে পরীক্ষার মধ্যে হরতাল ডাকা যুক্তিহীন, দায়িত্বহীন, জ্ঞানহীন ও অবিবেচকের কাজ। ব্যাপক রাজনৈতিক সঙ্কটেও ইতোপূর্বে পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে হরতাল, অবরোধ কর্মসূচী দিয়েছে বিভিন্ন দল। কিন্তু এই সংস্কৃতিকে নষ্ট করছে দুটি দল। বিএনপি-জামায়াতের শিক্ষাবিরোধী লাগাতার অপরাজনীতির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন দেশের ছাত্রছাত্রী। জিম্মি হয়ে পড়েছে তাদের শিক্ষকসহ পুরো পরিবার।
×