ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২৩ মার্চ ২০১৫

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়

পূর্ব প্রকাশের পর ঘটনা ২-: তদানীন্তন পাকিস্তানের বিভক্তি নিয়ে দাদা-নাতী গল্প করছিল। দাদা তার নাতী শফিকুলকে বললেন, তার বাবা রশিদ খান জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। তাদের দল জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে বিপুল ভোটে জয়ী ওয়া সত্ত্বেও শাসক গোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে অনীহা দেখাচ্ছিল। ক) কতজনের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা দায়ের করা হয়? খ) ৬ দফাকে বাংলার মানুষের মুক্তির দলিল বলা হয় কেন? গ) ঘটনা-১ : তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের কোন ঘটনার ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা করো। ঘ) ঘটনা -২: ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী দলকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার প্রতিচ্ছবি মূল্যায়ন করো। ক) মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা দায়ের করা হয়। খ) পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠী নানাভাবে পূর্ব পাকিস্তানিদের অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিল। বাঙালি জাতি, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রভৃতি নানা অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। বাঙালি জাতির এসব অধিকার আদায়ের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে ছয় দফা দাবি পেশ করেন। এই দাবি ছিল বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা ও স্বায়ত্তশাসনের দাবি। তাই ছয় দফাকে বাঙালির মুক্তির সনদ বা দলিল বলা হয়। গ) ঘটনা-১ : তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা আন্দোলনের ইঙ্গিত বহন করে। বিজয়নগরে শাসক গোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষাকে উপেক্ষা করে। তদানীন্তন পাকিস্তান সরকার ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা নির্ধারণে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষাকে উপেক্ষা করে। পাকিস্তানের শতকরা ৫৬ জনের ভাষা বাংলার হওয়া সত্ত্বেও মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করেন। বাঙালিরা ঐ ঘোষণা মেনে না নিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিবাদ করে। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র জনতার আন্দোলন তীব্রতর হয়। এদিনে ছাত্রদের মিছিলে পুলিশ গুলি করে ফলে রফিক জব্বার শফিকসহ নাম না জানা অনেকে শহিদ হন। বাঙালির প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলা ভাষাকে শেষ পর্যন্ত পশ্চিমা শাসকরা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে বাধ্য হয়। উপরোক্ত ঘটনার ইঙ্গিতে উদ্দীপকের ঘটনা ১ এ লক্ষ্য করা যায়Ñ ঘ) ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালি বিজয় অর্জন করা সত্ত্বেও পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে। তারা অযথা সময় ক্ষেপণ করতে থাকতে। ঘটনা-২ এর শফিকুল ও তার দাদার কথার ধ্যে দিয়ে এ বিষয়টি ফুটে উঠেছে। ইয়াহিয়া ক্ষমতায় এসে ১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচন দেয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছয় দফাভিত্তিক কর্মসূচি ঘোঘণা করে এবং এরই প্রেক্ষিতে বিজয় লাভ করে। ১৯৭০ সালের ৭ই ডিসেম্বর জাতীয় পরিষদের এবং ১৭ই ডিসেম্বর প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় পরিষদে পূর্ব পাকিস্তানের ৩১৩টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। প্রাদেশিক পরিষদেও আওয়ামী লীগ একইভাবে সফল হয়। এখানে ৩১০টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসল লাভ করে বিজয় অর্জন করে। এভাবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সত্ত্বেও পশ্চিমা শাসকেরা ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে টালবাহানা শুরু করে। এই ষড়যন্ত্রের রেশ ধরেই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে বিশ্বের মানচিত্রে বাঙালি প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের। তাই বলা যায় যে ঘটনা ২ এর মাধ্যমে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী দলকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে। বহুনির্বাচনী প্রশ্ন : ১. দ্বিজাতিতত্ত্বের প্রবক্তা কে ছিলেন? ক) মহাত্মা গান্ধী খ) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ গ) জওহর লাল নেহেরু ঘ) আল্লামা ইকবাল ২. ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা দেয়ার সময় খাজা নাজিমুদ্দীন খান কোন দায়িত্ব প্রাপ্ত ছিলেন?
×