ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিরোধ বাড়ছে নেতানিয়াহুর সঙ্গে

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২২ মার্চ ২০১৫

বিরোধ বাড়ছে নেতানিয়াহুর সঙ্গে

হোয়াইট হাউস চলতি সপ্তাহের নির্বাচনে বিজয় সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বিরোধের মাত্রা ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছে। এতে এই আভাস পাওয়া যায় যে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্কের নজিরবিহীন ফাটল অচিরেই জোড়া দিতে ওবামা প্রশাসনের তাড়া নেই। কড়া কড়া কথাবার্তায় এই ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, ওবামা প্রশাসন হয়ত মধ্যপ্রাচ্যে তাদের ঘনিষ্ঠতম মিত্রের সঙ্গে সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়ন ঘটাচ্ছে। ইসরাইলী নির্বাচনী প্রচারাভিযানের শেষের দিনগুলোতে নেতানিয়াহু একটি ফিলিস্তিনী রাষ্ট্র এবং ইরানের সঙ্গে একটি পরমাণু চুক্তি প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে তীব্র মতানৈক্যের বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরায় প্রশাসন তাঁর প্রতি ধৈর্য হারিয়ে ফেলে। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের। ইসরাইল ও মিসরে নিযুক্ত এক সময়কার মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল সি কর্টিজার বলেন, ‘পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সাড়ে ৬ বছরের পুঞ্জীভূত হতাশার এটি বহির্প্রকাশ, যাতে আছে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত মর্যাদা এবং প্রেসিডেন্ট পদের প্রতি কিছু সরাসরি আঘাত।’ এই আক্রমণাত্মক অবস্থান ওবামার এ ধারণাকে স্পষ্টত তুলে ধরে যে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচীর লাগাম টেনে ধরতে দেশটির সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি নেতানিয়াহুর একগুঁয়ে বিরোধিতা সত্ত্বেও নাগালের মধ্যে আছে এবং তাঁর (নেতানিয়াহু) প্রতি অধিক সম্প্রীতির মনোভাব দেখিয়ে তেমন লাভ নেই। অভ্যন্তরীণভাবে প্রশাসন আবার গুরুত্বপূর্ণ ডেমোক্র্যাটিক নির্বাচনী এলাকার ইহুদি ভোটারদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলার ঝুঁকি নিচ্ছে, অংশত এই বাস্তবতার ওপর ভরসা করে যে, তাদের অনেকেই নেতানিয়াহুর ওপর বিরক্ত। ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান প্রশাসনের সাবেক মধ্যপ্রাচ্য সংক্রান্ত উপদেষ্টা আরন ডেভিড মিলার বলেন, ‘এক দিক দিয়ে প্রশাসন ইতোমধ্যে জয়ী হয়েছে।’ মার্চের শেষ নাগাদ যদি একটি চুক্তি (ইরানের সঙ্গে) সম্পাদন করা যায়, তবে তা হবে ঐতিহাসিক প্রকৃতির। এতে এটাও দেখানো যাবে যে, প্রশাসন কংগ্রেসে রিপাবলিকান বিরোধিতার মুখে অনমনীয় অবস্থান নিতে এবং সংশয়ের মধ্যে থাকা তাঁর নিজের দলের সদস্যদের সামলাতে প্রস্তুত আছে। সেই সঙ্গে তারা ইসরাইলী চাপও সাফল্যের সঙ্গে প্রতিহত করেছে। ওবামা দু’দিন অপেক্ষার পর বৃহস্পতিবার অভিনন্দনমূলক এক টেলিফোন কলে তিনি (নেতানিয়াহু) থাকতে কোন ফিলিস্তিনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে দেয়া হবে না এই মর্মে তার প্রাক নির্বাচনী ঘোষণার জন্য ভর্ৎসনা করেন। যদিও নেতানিয়াহু তার সেসব মন্তব্য থেকে সরে আসার চেষ্টা চালালেও ওবামা বলেন, নেতানিয়াহুর বক্তব্য তাঁর প্রশাসনকে ইসরাইলের প্রতি নীতির কিছু দিক পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য করেছে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন টেলিফোন কলের বিস্তারিত জানান। পরপর দ্বিতীয় দিনের মতো শুক্রবার হোয়াইট হাউস প্রকাশ্যে ইসরাইলী-ফিলিস্তিনী শান্তি প্রক্রিয়ার ব্যাপারে নেতানিয়াহুর আন্তরিকতায় সন্দেহ ব্যক্ত করে। এতে ইঙ্গিত করা হয় যে, ওবামা ফিলিস্তিনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করার ব্যাপারে নেতানিয়াহুকে বিশ্বাস করেন না। একটি ফিলিস্তিনী রাষ্ট্রই মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির কেন্দ্রীয় উপাদান। দুই নেতার টেলিফোন সংলাপে প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী দিবসের এই মন্তব্য নিয়েও আলোচনা করেন যেখানে তিনি ‘দলে দলে’ ইসরাইলী আরবদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। ওই মন্তব্যকে ব্যাপকভাবে আরবদের ভোটের প্রভাব খর্ব করার প্রচেষ্টা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয় এবং ওবামা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিশ্বজুড়ে ওই মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ জানানো হয়।
×