ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উবাচ

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২০ মার্চ ২০১৫

উবাচ

সদা সত্য কথা বলব- স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘সত্য কথা বলব- সাহস নিয়ে চলব’। ছোট্ট বেলার কবিতার কথা হয়ত অনেকেই ভুলে গেছেন। হয়ত বাস্তবতার কারণেই শিকড়ের দিকে নজর নেই। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সমাজে সাহস করে সত্য বলার অভ্যাস কম জনেরই আছে। সত্য মানেই অপ্রিয়। শত্রু তৈরি করে। তাই জ্ঞানবশত সত্যকে এড়িয়ে চলেন অনেকে। তবুও সত্যের জয়- সত্য অবিনশ্বর। রাজনীতিতে সত্য কথা বলা ও চর্চার অভ্যাস শুরু মানেই সমাজ বদলের নতুন মাত্রা। আর এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারলে তো কথাই নেই। তাই তো সাহস করে সত্য বলে আলোচনায় এসেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কারও ভাল লাগুক আর না লাগুক দলের পক্ষ থেকে একজন হলেও কথিত নেতাদের বিরুদ্ধে শক্ত কথা বলেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, রাস্তায় বঙ্গবন্ধুর ছবির পাশে চাঁদাবাজ, টাউট-বাটপাড়, ভূমিদস্যু ও লুটেরাদের ছবিসংবলিত ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড দেখে তিনি ব্যথিত হন। তাই তো এসব ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড ছিঁড়ে ফেলার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, চাঁদাবাজ-টাউট-বাটপাড়দের ছবি বঙ্গবন্ধুর পাশে দেখতে চাই না। মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে এক ধরনের মানুষ এ অপকর্ম করে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে কোন আপোস নেই, নিবৃত্ত করতে হবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যেখানেই বঙ্গবন্ধুর পাশে চাঁদাবাজ, টাউট-বাটপাড়, ভূমিদস্যু ও লুটেরাদের ছবিসংবলিত ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড দেখবেন, সেগুলো ছিঁড়ে ফেলবেন। তাতেই বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে। আর একাজ যাঁরা করবেন, তাঁরাই হবেন বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের আদর্শের অনুসারী। যাঁদের কারণে মন্ত্রী এই অপ্রিয় সত্য কথা বলেছেন, তাঁদের অনেকেই তখন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আমরা তো পরাজয় মেনে নিতে পারি না স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোট হয়ত ভেবেছিল কঠোর কর্মসূচী দিলেই সরকারের পতন নিশ্চিত। সঙ্গে দেশজুড়ে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের সহিংসতা তো আছেই। এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসবে তারা। দেশ চালাবে। স্বপ্ন। কিন্তু বিধি বাম। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে মানুষ। হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচী প্রত্যাখ্যান করেছেন সবাই। ভয় উপেক্ষা করে ঘর থেকে বেরিয়ে আসছেন মানুষ। স্বাধীনতার পর হরতাল অবরোধের এমন করুণ চিত্র আর কেউ দেখেনি। তেমনি দীর্ঘ এ রকম রাজনৈতিক কর্মসূচী ও সহিংসতা, সন্ত্রাসসহ পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যার চিত্র এর আগে কেউ দেখেনি। বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠীর পক্ষেই হয়ত এটা সম্ভব! দুই মাসের বেশি সময়ের চলমান আন্দোলনের ফলাফল হলো- রাজপথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট। আন্দোলন বলতে কিছু নেই। মাঠে নেই নিজ দলের বা জোটের নেতাকর্মীরাও। আত্মগোপনে থেকে বার্তা আসে হরতাল বাড়ানোর! এরচেয়ে হাস্যকর আর কি হতে পারে। এমন বাস্তবতায় আন্দোলনকারীরাও বেশ টের পেয়েছে নিশ্চয়ই; তাদের উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে। এখন পালাবার পথ নেই। তবে সুযোগের অপেক্ষায় বিএনপি। তাই তো আন্দোলন নিয়ে কৌশলী বক্তব্য দিচ্ছেন খোদ শীর্ষ নেতারাই। এর আগেও বিএনপির একাধিক নেতা আন্দোলন কেন? এমন প্রশ্ন তুলেছেন। সর্বশেষ বিএনপির শীর্ষ নেতা সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা তো পরাজয় মেনে নিতে পারি না।’ তিনি হরতাল-অবরোধ অব্যাহত রাখার পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়েই এটা বলেছেন। হয়ত পালানোর পথ নেই বলেই এ কথা বলছেন সাবেক এই সেনাপ্রধান। তাহলে কে পরাজয় মেনে নেবে? এর জবাব হয়ত তিনিই ভাল দিতে পারবেন। পড়ন্ত বেলায় বোধোদয়! স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার গণমাধ্যম ও সর্বোপরি সংবাদকর্মীদের পক্ষে কথা বললেন এরশাদ। আজ শুক্রবার সাবেক এই রাষ্ট্রপতির ৮৬তম জন্মদিন সামনে রেখেই এমন কথা বলেছেন। এ জন্য তাঁকে অভিনন্দন। দীর্ঘদিন পর হলেও শক্ত কথা বলছেন তিনি। হয়ত আপাতত জেলের কোন ভয় নেই! সকলের প্রত্যাশা শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের পক্ষে আমৃত্যু কথা বলে যাবেন তিনি। যা বলবেন বুঝে শুনে। বারবার মত পাল্টাবেন না। যেন নিজ দলের নেতাকর্মীরা তাকে ফের ভুল না বোঝে। রাজনৈতিক জীবনের পড়ন্ত বেলায় তাঁকে ছেড়ে কেউ চলে না যায়, অর্থাৎ দল থেকে পদত্যাগ না করে। কাগজপত্রে সাবেক এই সেনাপ্রধান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত হলেও কাজে কর্মে নেই। দূত হিসেবে তাঁর ওপর অর্পিত কোন দায়িত্বও যেমন নেই, তেমনি নিজে থেকেও কিছু করতে দেখা যায়নি তাঁকে। বিরোধী দল হলেও গায়ে সরকারী গন্ধ। এমন বদনাম নিজ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেও। তাতে কি। সত্য কথাই বলতে হবে। তাই হয়ত সরকারের সমালোচনাও হরদম করে যাচ্ছেন তিনি। বিএনপিকে নিয়েও কঠিন কথা বলতে শোনা গেছে এরশাদকে। চলতি সপ্তাহে একটি অনুষ্ঠানে এইচএম এরশাদ বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধে মরিয়া হয়ে থাকে। তা কখনো দেশের জন্য সুখকর নয়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এজন্য দেশে শক্তিশালী গণমাধ্যম দরকার। সোমবার রাতে রংপুর নগরীর দর্শনা এলাকায় পল্লীনিবাসে রংপুর সিটি প্রেসক্লাবের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদমাধ্যমের পক্ষে কথা বলার পেছনে হয়ত যৌক্তিক কারণও আছে। জাতীয় পার্টির অধিকাংশ শীর্ষ নেতাই মনে করেন, সংবাদমাধ্যম বিরোধিতা করার কারণেই তাঁকে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল তীব্র গণআন্দোলনের মুখে। আন্দোলনের জনমত তৈরি করেছিল সংবাদকর্মীরা। ক্ষমতা ছাড়ার পরও তাঁর পেছনে লেগেই ছিল সাংবাদিকরা। তাঁকে নিয়ে মুখরোচক লেখনী কম হয়নি। তাই দলের অবস্থাও হয় সঙ্গিন। এক পর্যায়ে জাপা নেতারা বুঝতে পারেন সংবাদ কর্মীদের সঙ্গে সুসস্পর্ক না রাখলে রাজনীতির মাঠে টেকা দায়। দেশের সংবাদমাধ্যমে পক্ষে থাকলে তিনি যে বেশ উপকৃত হবেন, রাজনীতি করে টিকে থাকতে পারবেন- তা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন চতুর এই রাজনীতিবিদ। এজন্যই হয়ত তিনি সাংবাদিকদের পক্ষে বলছেন।
×