ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইতিহাস নিজেই দায় মোচন করছে

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১৯ মার্চ ২০১৫

ইতিহাস নিজেই দায় মোচন করছে

বাংলাদেশ এখন ইতিহাসের এক দায় মোচনের ক্রান্তিকালে এসে দাঁড়িয়েছে। যার এক দিকে দেখা যাচ্ছে নতুন সূর্য, অন্য দিকে গভীর অন্ধকার। অর্থাৎ বাংলাদেশের রাজনীতিতে আগামী তিন থেকে চার বছরে একটি আধুনিক পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা এখন উজ্জ্বল। অন্যদিকে বাংলাদেশ একটি জঙ্গীকবলিত ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়ে যেতে পারে। ঘটনাপ্রবাহ এখন যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে তাতে শেষেরটি ঘটার সম্ভাবনা কম। আধুনিক পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। যদিও ভবিষ্যত কেউ বলতে পারে না, তারপরেও ঘটনাপ্রবাহ বলে শতভাগ সম্ভাবনা একটি আধুনিক পরিবর্তনের দিকে যাওয়ার। বাংলাদেশে এই যে পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে, এ পরিবর্তনের আসল নায়ক হিসেবে অবশ্যই দেশের সাধারণ জনগণকেই ধরতে হবে। তবে জনগণ সব সময়ই তার ইচ্ছার প্রকাশ ঘটায় আপন আপন অবস্থানে থেকে। কাউকে না কাউকে নেতৃত্ব দিতে হয়। যখনই কোন জাতিতে বা জনগোষ্ঠীতে কোন সত্যিকার নেতা জন্মান তখনই ওই নেতার হাত ধরে পরিবর্তন আসে। বাংলাদেশে এই যে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে, এর একমাত্র কারণ শেখ হাসিনার নেতৃত্ব। শেখ হাসিনার বজ্রকঠিন নেতৃত্ব ছাড়া এই পরিবর্তন সম্ভব ছিল না। নেতা হিসেবে, রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শেখ হাসিনা এখন অনেক উচ্চে। যদিও মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে এই কলামে লিখেছি, তিনি ম্যান ইন দি মেকিং, তাঁকে নিয়ে সর্বশেষ মন্তব্য করার সময় এখনও আসেনি। তারপরেও বলছি, তিনি যে অবধি পৌঁছেছেন তাই বিশাল। যা হোক, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নিয়ে লিখতে গেলে অনেক পরিসর দরকার, যা এই কলামে সম্ভব নয়। তবে এখন লেখার সময় হয়েছে দেশের স্বার্থে। দেশের মানুষের স্বার্থে। যা হোক, শেখ হাসিনার মতো লৌহকঠিন রাষ্ট্রনায়ক থাকার ফলে বাংলাদেশ জঙ্গীকবলিত ব্যর্থ রাষ্ট্র থেকে উদ্ধারের আলো দেখতে পাচ্ছে। খালেদা জিয়া, তারেক, জামায়াত এবং তাদের শতাধিক জঙ্গী সংগঠন মিলে বাংলাদেশকে যেখানে নিয়ে যেতে চেয়েছিল তারা আপাতত ব্যর্থ হয়েছে। আন্তর্জাতিক ইসলামিক জঙ্গী গোষ্ঠী ও পাকিস্তানী সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় তারা যে নিষ্ঠুর যুদ্ধ বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে শুরু করেছিল- শেখ হাসিনা তা প্রায় দমন করে নিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশে বর্তমান জীবিত নেতাদের ভেতর একমাত্র শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কেউ হলে দেশকে এত দ্রুত ওই ভয়াবহ বিপদ থেকে মুক্ত করার পথে নিয়ে যেতে পারতেন না। মাত্র এক মাস আগেও বাংলাদেশের প্রতিটি সন্ধ্যা, প্রতিটি রাত ছিল বিভীষিকা। মৃত্যুর নিস্তব্ধতা, মৃতপথ যাত্রীর আর্তনাদ, আর নীরবে চোখের জল ফেলা এই যেন হয়ে দাঁড়িয়েছিল আমাদের অনিবার্য নিয়তি। কিন্তু অবিচল শেখ হাসিনা তা মোকাবেলা করেছেন। কতটা কঠিন পথ তাঁকে পাড়ি দিতে হয়েছে তা কল্পনাতীত। দেশের অধিকাংশ মিডিয়া জঙ্গী সন্ত্রাসকে রাজনৈতিক সমস্যা বলে অভিহিত করার নির্লজ্জ চেষ্টা করেছে। দেশের এক শ্রেণীর সুশীল সমাজও নির্লজ্জভাবে একই কাজ করেছে। এমনকি স্বনামধন্য এক শ্রেণীর সম্পাদকরাও একই কাজ করেছে লজ্জাহীন স্বাভাবিক মুখে। তথাকথিত কমিউনিস্ট নেতারাও কথার দিক থেকে নেমে গিয়েছিলেন জঙ্গীদের সমান্তরালে। পৃথিবীর কোন দেশের সভ্য ও শিক্ষিত শ্রেণীর এভাবে নির্লজ্জ সমর্থন জঙ্গীরা কখনই পায়নি। এমনকি পাকিস্তানেও পায় না। বাংলাদেশে তাই ঘটেছিল। এই বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে শেখ হাসিনা এখন দেশকে একটি ইতিহাসের নতুন বাঁকে নিয়ে এসেছেন। ইতিহাসের এই বাঁকটি হলো, বাংলাদেশ ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পরে এই প্রথম সুযোগ পেতে যাচ্ছে একটি প্রকৃত আধুনিক গণতান্ত্রিক সমাজে প্রবেশ করার। বাংলাদেশ সেখানে প্রবেশ করবেই। তবে তার আগে, জঙ্গীরা তাদের শেষ চেষ্টা হিসেবে আরও কিছু কঠিন আঘাত করার চেষ্টা করবে। যে আঘাতকে প্রতিহত করার জন্য শেখ হাসিনাকে প্রতি মুহূর্তে সজাগ থাকতে হবে। জঙ্গীদের শেষ নিষ্ঠুর আঘাতগুলো যদি শেখ হাসিনা গত দুই মাসের বেশি সময় যেভাবে সফল পথে মোকাবেলা করেছেন সেভাবে করতে পারেন তাহলে বাংলাদেশ রাহুমুক্ত হবে। প্রবেশ করবে আধুনিক গণতান্ত্রিক পরিবেশে। গত দুই মাসের বেশি সময়ে বাংলাদেশ যে কতকগুলো রাহুমুক্ত হয়েছে তা এখন স্পষ্ট। খালেদা নামক একটি দুষ্ট গ্রহের হাতে বাংলাদেশ অনেকদিন ধরে জিম্মি। যাকে এক শ্রেণীর মিডিয়া ও তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা শেখ হাসিনার কাতারে নিয়ে দুই নেত্রী বানিয়েছিল এদেশে। বাংলাদেশ বাস্তব অর্থে ওই দুষ্ট গ্রহের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে। রাজনীতি থেকে খালেদার বিদায় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। যেমন সরকার খুবই ভাল কাজ করেছে খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার না করে। কারণ, এই মামলায় গ্রেফতার করলে তিনি জামিন পাবেন। এখন খালেদাকে গ্রেফতার করে জামিন দেয়া মানে তাঁকে একটা লাইফ লাইন দেয়া। যার কোন প্রয়োজন নেই। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্যে খালেদাকে গ্রেফতার করতে হবে, তাঁর বিচার করতে হবে, সাজা দিতে হবে। কিন্তু তা ওই জামিনযোগ্য কোন মামলায় নয়। তিনি গত দুই মাস দেশে যে গণহত্যা চালিয়েছেন, এই গণহত্যার সুপ্রীম রেসপনসিবিলিটি তাঁর। তাই এই গণহত্যার কেসগুলোর তদন্ত করে, তার চার্জশীট অনুযায়ী তাঁকে গ্রেফতার করে- দ্রুত বিচার আইনে বিচার করতে হবে। তিনি দুই মাস যে কাজ করেছেন তা দেশদ্রোহিতা। দেশদ্রোহিতার অপরাধেও তাঁর বিচার করতে হবে। এছাড়া কয়েক ঘণ্টার জন্যে তাঁকে গ্রেফতার করে মৃত সন্ত্রাসীকে রাজনীতিক হিসেবে লাইফ লাইন দেবার কোন প্রয়োজন নেই। এখানে শেখ হাসিনা তাঁর রাজনৈতিক নেতৃত্বের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। খালেদার মতো তারেক রহমানও সন্ত্রাসী হিসেবে বিচারের কাঠগড়ায় যাবেন। পাশাপাশি দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলার অভিযোগ থেকেও তিনি মুক্তি পেতে পারেন না। তবে গত কয়েক মাসে একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীদের মামলা নিয়ে আদালতে একটা ঢিমেতাল চলছে। কোথায় যেন একটি ধীর গতি। সুপ্রীমকোর্ট দেশের অন্যতম সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। তবে পার্লামেন্টও দেশের আইন প্রণয়নের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। যদিও পার্লামেন্টের বেধে দেয়া ৬০ দিনের ভেতর যুদ্ধাপরাধীদের মামলা সুপ্রীমকোর্ট নিষ্পত্তি করতে বাধ্য নয়। তবে পার্লামেন্টকে ন্যূনতম সম্মান না দেখালে আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে কি সঠিক সম্মান করা হয়? কামারুজ্জামানের রিভিউর শুনানি যে কারণে পিছিয়ে দেয়া হলো তা কতটা গ্রহণযোগ্য? একজন আইনজীবী তাঁর সমিতির নির্বাচন করবেন এই অজুহাতে এত বড় গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলার শুনানি পিছিয়ে দিতে হবে এটা কি ঠিক হলো? সুপ্রীমকোর্টও মুক্তিযুদ্ধের ফসল। তাই যে মামলার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ জড়িত তার থেকে সমিতির নির্বাচন বড় হয় কোন্্ বিচারে? তাছাড়া যখন বাংলাদেশে কেউ কোন বড় পদে বসেন অথচ তাঁর শরীরে কোন না কোনভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার একটি গন্ধ থাকে তখন কিন্তু তাঁকে সঠিক দায়িত্ব পালনের জন্য কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়। কারণ, মানুষ প্রতি মুহূর্তে তাঁর মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আনুগত্যহীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। সন্দিহান থাকবে তাঁর প্রতি। আলী আহসান মুজাহিদের মামলার শুনানি হচ্ছে না। কামারুজ্জামানের মামলার শুনানি তুচ্ছ কারণে পিছিয়ে দেয়া হলো। মানুষের এই সন্দেহ, প্রশ্ন এখন দূর করা খুবই জরুরী। কারণ সকলেই আমরা মুক্তিযুদ্ধের কাছে দায়বদ্ধ। যে সংবিধান দ্বারা আমরা সকলে প্রতিষ্ঠিত ও বলীয়ান ওই সংবিধানের মাতৃকোষ কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্র। তাই আমাদের কারও কোন কাজে যদি মুক্তিযুদ্ধের প্রতি দায়বদ্ধতায় অবহেলা বা কোন প্রশ্নের উদ্রেক হয় সাধারণ মানুষের মনে তা কিন্তু অনেক বড় বিষয়। পক্ষান্তরে দায়বদ্ধতায় অবহেলা গিয়ে পড়ে সংবিধানের প্রতি। বাংলাদেশের যে যেখানে যে পদেই থাকুন না কেন, দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রবাহিত করার দায় তাঁর ওপর বর্তায়। তা না হলে তিনি সেই পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেন। বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় প্রবাহিত করার জন্যে ও আন্তর্জাতিক জঙ্গী চক্র থেকে বের করার জন্যে এখন খুবই জরুরী হলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও তাদের সাজা বাস্তবায়ন যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা। কারণ, এখন বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় প্রবাহিত করা কথাটির অর্থ কোন আবেগের ভেতর প্রবাহিত করা নয়। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মকে সঠিক কাজে লাগিয়ে একটি উন্নত দেশ গড়া। যার জন্যে অনিবার্য প্রয়োজন দেশকে জঙ্গীমুক্ত করা, যুদ্ধাপরাধীসহ সকল বড় অপরাধীর বিচার করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা ও দেশে সামরিক সরকারের আনুকূল্যে যে সব তথাকথিত রাজনৈতিক শক্তি গড়ে উঠেছে তার বদলে মানুষের ভেতর থেকে ভিন্ন ভিন্ন চিন্তার আধুনিক রাজনৈতিক শক্তি গড়ে ওঠা। এই কাজগুলো একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। একটি ঘটলে আরেকটি ঘটা সহজ হবে। যেমন শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে দেশের জঙ্গী দমনে সফলতা দেখিয়েছেন। দেশের মানুষের জন্যে মোটামুটি স্বাভাবিক পরিবেশ তিনি ইতোমধ্যে নিশ্চিত করতে পেরেছেন। ঘটনাপ্রবাহ বলছে, আগামী তিন-চার মাসের ভেতর বাংলাদেশ জঙ্গী দমনে শতভাগ সফল না হলেও নব্বই ভাগ সফল হবে। বাকি দশভাগ ধীরে ধীরে সামাজিক পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে করতে হবে। এখন আইনের শাসনের অবস্থান দৃঢ় করার জন্য প্রয়োজন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি বাস্তবায়ন এবং জঙ্গীদের দ্রুত আইনে দ্রুত বিচার ও শাস্তি বাস্তবায়ন। এই কাজ দুটি কোনরূপ অবহেলা বা ঢিমেতালে নয়, দেশের প্রতি, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কমিটমেন্টের সঙ্গে দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিতে হবে। দেশের বাস্তবতায় আগামী ’১৬ সালের মার্চের ভেতর সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও শাস্তি কার্যকর করার কাজ শেষ করা প্রয়োজন। আন্তরিকতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলে এ সময়ের ভেতর এ কাজ করা কোন কঠিন কিছু নয়। পাশাপাশি এই সময়ের ভেতর সকল জঙ্গীর বিচার, পেট্রোল বোমা মেরে নরহত্যাকারী ও তাদের নেতাদের বিচারও শেষ করতে হবে। ১৬ সালের মার্চের ভেতর এই কাজগুলো শেষ হলে, ’১৬র মার্চ থেকে ’১৯-এর ডিসেম্বর অর্থাৎ আড়াই বছরের কিছু বেশি বা পৌনে তিন বছর মতো একটা নতুন বাংলাদেশ পাবে দেশের মানুষ। ওই বাংলাদেশের আলো হাওয়ায় পুষ্ট বীজের অঙ্কুরোদ্্গম ও পত্র-পল্লব শোভিত হওয়া হবে একটি স্বাভাবিক ঘটনা। খালেদা, তারেক ও জামায়াত মাইনাসের পর ওই বাংলাদেশে তখন মাটি থেকে জন্ম নিতে পারবে অনেক মতের অনেক রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশের অন্যতম একটি বড় দুর্ভাগ্য হলো একমাত্র ১৯০৬ সালে সরকারের আনুকূল্য ব্যতীত দক্ষিণপন্থী দল হিসেবে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা ছাড়া আজ পর্যন্ত কোন ডানপন্থী দলের প্রতিষ্ঠা স্বাভাবিক পথে হয়নি। সবই হয়েছে সামরিক সরকারের আনুকূল্যে। কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখা দরকার, প্রতিটি সমাজেই রক্ষণশীল মানুষের সংখ্যা প্রচুর। উদারনৈতিক মানুষের থেকে তাদের সংখ্যা কম নয়। তাই যে কোন রাষ্ট্রে স্বাভাবিক ও সুস্থ রাজনীতির জন্যে সমাজের ভেতর থেকে, মানুষের ভেতর থেকে এক বা একাধিক রক্ষণশীল রাজনৈতিক দল গড়ে ওঠা প্রয়োজন। কোন সরকারের এজেন্সির আনুকূল্যে নয়, আবার বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা বা জঙ্গী টাকায় নয়। ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির মতে, আমেরিকার রিপাবলিকানদের মতো সুস্থ রক্ষণশীল রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে সমাজের ভেতর থেকে গড়ে ওঠা প্রয়োজন। ’১৬র মার্চের ভেতর ওপরে উল্লিখিত কাজগুলো শেষ হলে যদি সমাজ ও রাষ্ট্র ২০১৯-এর নির্বাচনের আগ অবধি একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থা পায় তাহলে তখন অনেক নতুন কিছু ঘটবে। তারেক, খালেদা ও জামায়াতমুক্ত বাংলাদেশে এক বা একাধিক প্রকৃত রক্ষণশীল রাজনৈতিক দল গড়ে উঠবে। তা সামরিক গোয়েন্দা প্রধান মহব্বতজান চৌধুরীর গড়ে দেয়া বিএনপি বা আরেক প্রধানের গড়ে দেয়া জাতীয় পার্টির মতো নয়। সমাজ থেকেই গড়ে উঠবে। পাশাপাশি ওই সুস্থ সময়ে শুধু ডানপন্থী রাজনৈতিক দল গড়ে উঠবে না, উদার রাজনৈতিক দলও গড়ে উঠবে। কারণ আওয়ামী লীগ শতভাগ উদারতা ধারণ করে না। তাদের ভেতর অনেক সামন্ততান্ত্রিকতা আছে। কমিউনিস্ট পার্টি বা তথাকথিত বামরা আরেক ধরনের মৌলবাদী। তাই উদার চিন্তার আধুনিক অর্থনীতিনির্ভর আরও রাজনৈতিক দল ওই সুস্থ পরিবেশে গড়ে উঠবে। তখন যদি আওয়ামী লীগ মনে করে এরা আওয়ামী লীগের জন্যে হুমকি, এদের অঙ্কুরে বিনাশ করো, তাহলে কিন্তু ইতিহাস আবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে এখানে আস্থা রাখা যায় শেখ হাসিনার ওপর। কারণ তাঁর নেতৃত্ব যে অবস্থানে উঠে গেছে তাতে তাঁকে তো কেউ চ্যালেঞ্জ করছে না। তাই তিনি অতি সহজে ইতিহাসের এই স্রোতকে প্রবাহিত হতে দেবেন। আর তখন ডান, বাম, মধ্যপন্থী, উদারপন্থী সকলেই আস্থাবান থাকবেন বাংলাদেশ, দেশের সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির ইতিহাসের প্রতি। আর সেদিনই ঘটবে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর প্রকৃত অর্থে ইতিহাসের দায়মোচন। [email protected]
×