ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

তথাকথিত সংবাদকর্মী

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১৯ মার্চ ২০১৫

তথাকথিত সংবাদকর্মী

বিস্মিত হওয়ার মতোই যে, দেশজুড়ে বিদ্যমান নাশকতায় একদল তথাকথিত সংবাদকর্মীও জড়িত। এরা পেশাদার সাংবাদিক নয়, বরং জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের অনুসারী। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম, যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গী তৎপরতার প্রচার ও প্রসারের সমর্থক, তারাই এদের নিয়োগদাতা। সাংবাদিক সাইনবোর্ডের আড়ালে এরা সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের সহযোগী হিসেবে নাশকতায় সহায়তা করে আসছে । সবই করা হচ্ছে অর্থের বিনিময়ে। এদের নিয়োগদাতারা যেহেতু নাশকতার পক্ষে, তাই তারা নির্বিঘেœ সে সব প্রচারও করছে। শুধু তাই নয়, নিজ মিডিয়ায় প্রচারের আগে নাশকতার চিত্র তুলে তা সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রক রাজনৈতিক দলকে সরবরাহ করে আসছে। প্রায় আড়াই মাস ধরে বিএনপি-জামায়াত জোট যে নাশকতা অব্যাহত রেখেছে, তার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি সহায়ক শক্তি হিসেবে এই সংবাদকর্মীরা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। কোথায় বোমাবাজি হবে এরা আগে জানে এবং যথাসময়ে ঘটনাস্থলে থেকে চিত্র গ্রহণ করে আসছে। পুলিশ শনাক্ত করেছে প্রাথমিক পর্যায়ে ১০ থেকে ১২ জনকে। কিন্তু এদের মদদদাতা, পৃষ্ঠপোষক এবং অর্থ যোগানদাতাদের এখনও শনাক্ত করতে পারেনি। তবে বিএনপি-জামায়াতসমর্থিত এসব মিডিয়া আকারে ইঙ্গিতেও জঙ্গীবাদের প্রচার করে আসছে। পুলিশ এ ধরনের মিডিয়াকেও চিহ্নিত করেছে বলে দাবি করলেও কার্যকর ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ যে নিতে পেরেছে, তা নয়। ২০১৩ সালেও দেখা গেছে, মিডিয়ার একাংশ সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদীদের নাশকতামূলক তৎপরতাকে জোরালো করায় ইন্ধন ও উস্কানি অব্যাহত রাখে। ধ্বংসাত্মক তৎপরতাকে সমর্থন করে বক্তব্য প্রচারও করছিল। দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিল সেদিন কর্তৃপক্ষ। তাই নাশকতা ও সহিংসতাকে দমন করা গিয়েছিল। মিডিয়ার পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমগুলোতে উগ্র মৌলবাদী ধর্মান্ধদের অপপ্রচার ও জঙ্গী তৎপরতার উস্কানি এবং ইন্ধনমূলক নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে। ফেসবুক, টুইটারে মুক্তমনা মানুষকে হত্যার নির্দেশ দিয়ে তা কার্যকরও করা হচ্ছে। ফেসবুকে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর, আপত্তিকর তথ্যচিত্র প্রচার করা হচ্ছে। জামায়াত-শিবির পরিচালিত ‘বাঁশেরকেল্লা’ পেজটি অপপ্রচার ও নাশকতার কাজে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে। এদের অপপ্রচার রোধে বিটিআরসি পেজটি বন্ধ করে দিলেও তারা বিদেশ থেকে ‘বাঁশেরকেল্লা’ নামে একাধিক পেজ চালু করে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারে ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে। ফেসবুকে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্যচিত্র প্রচারের জন্য বাঁশেরকেল্লায় ৩০ জন নিয়োজিত আছে। জামায়াত-শিবিরের এই কর্মীদের ২০ জন সার্বক্ষণিক এবং বাকিরা বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি এই কাজ করে আসছে। সম্প্রতি আটক বাঁশেরকেল্লার এ্যাডমিন ও চীফ এডিটরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের পর যে তথ্য মিলেছে তাতে নাশকতা ও মুক্তমনাদের হত্যায় ইন্ধনের সঙ্গে জড়িত রাজনীতিকদের নামও পাওয়া গেছে। বিটিআরসির দুর্বলতার সুযোগে এরা বিভিন্ন নামে পেজ চালু করে অব্যাহত অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। সিএনএন-এর এক খবরে ফেসবুকে বাংলাদেশে কিভাবে ধর্মকে অপব্যবহার করে সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে তার উল্লেখও করেছে। এসব কারণে বিটিআরসির দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তারা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে এসব স্বাধীনতাবিরোধী ও জঙ্গী সমর্থক পেজগুলো চালু থাকতে পারে না। অবিলম্বে এগুলো বন্ধ করে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে।
×