ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের লক্ষ্য সেমিফাইনাল

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ১৩ মার্চ ২০১৫

বাংলাদেশের লক্ষ্য সেমিফাইনাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগামী ২০-২৫ এপ্রিল ২০১৫ পর্যন্ত এএফসি অনুর্ধ-১৪ গার্লস রিজিওনাল চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা নেপালের কাঠমা-ুতে অনুষ্ঠিত হবে। ‘সাউথ এ্যান্ড সেন্ট্রাল জোন’-এ পড়েছে বাংলাদেশ। গ্রুপ ‘বি’ তে বাংলাদেশের সঙ্গে আছে ভারত ও ভুটান। গ্রুপ ‘এ’তে আছে ইরান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা এবং নেপাল। এ আসরে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বাফুফে ভবনে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আবাসিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্প শুরু হয়। এ আবাসিক ক্যাম্প উপলক্ষে ৩৯ কিশোরী ফুটবলারকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়। কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন পরে এখান থেকে ১২ জনকে বাদ দিলে তাদের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৭-এ। ‘এএফসির নিয়মানুযায়ী চূড়ান্ত দল হবে ১৮ জনের।’ বৃহস্পতিবার বাফুফে ভবনে জনকণ্ঠকে এমনটাই জানান ছোটন। তিনি আরও জানান, ‘এই টুর্নামেন্টে সাতটি দেশ দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। প্রতি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল খেলবে সেমিতে। আমার প্রাথমিক লক্ষ্য এই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলা।’ সেক্ষেত্রে গ্রুপের একটি ম্যাচ জিতলেই শেষ চারে খেলাটা নিশ্চিত হবে বলে জানান কৃতী এই কোচ। সেমিতে খেলার এই আত্মবিশ্বাসের উৎস কোথায়? ‘দলের খেলোয়াড়দের মান দেখেই আমি ভরসা পাচ্ছি। তাছাড়া অনুর্ধ-১৬ দলের ১৩/১৩ খেলোয়াড় এই দলে আছে। বাকি যারা আছে, তাদের ফুটবল বেসিক খুব ভাল। বাকিদের প্ল্যান অনুর্ধ-১৫-এর ট্যালেন্ট হান্ট এবং দেশজুড়ে জাতীয় মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বাছাই হয়ে।’ ভারতকেও হারানোর মতো শক্তি আর মনোবল বাংলাদেশের মেয়েদের আছে বলে দাবি করেন ছোটন। কারণটাও ব্যাখ্যা করেন, ‘কয়েক মাস আগে অনুর্ধ-১৬ টুর্নামেন্টে ভারতকে তো আমরা হারিয়েই দিচ্ছিলাম। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান রেফারি মার্গারেটের বিতর্কিত রেফারিংয়ের কারণে আমরা অল্পের জন্য হেরে যাই।’ উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে এই শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টের গত আসরে ‘ফেয়ার প্লে’ ট্রফি জিতেছিল বাংলাদেশ। সেবার ভারত ও ইরানের কাছে ৫ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। ‘এবার সেরকম কিছু ঘটবে না। আমরা তুমুল লড়াই করব এবং জেতার চেষ্টা করব।’ ইতোমধ্যেই নারায়ণগঞ্জ জেলা দলের সঙ্গে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে ছোটনের মেয়েরা। ম্যাচের স্কোরলাইন ছিল ৬-৪। পরাজিত দলে জাতীয় বা সিনিয়র দলের একাধিক খেলোয়াড় (ইতি, বীথি, রূপা, আয়েশা, সুরভী) ছিল বলে জানান ছোটন। অনুর্ধ-১৬ দলের যে ১৩/১৪ খেলোয়াড় অনুর্ধ-১৪ দলে আছেÑ তাদের কয়েকজনের নামও বললেন ছোটন, ‘সানজিদা, মৌসুমী, রাজিয়া, শিউলি, নার্গিস, কল্পনা, রতœা, রোকসানা, সাতুইমা, জোসনা...।’ নারায়ণগঞ্জ জেলা দলের সঙ্গে আরেকটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ছোটনের দল আগামী শনিবার। তবে দলের একটি সমস্যাও আছে। কী সেটা? ‘অনুর্ধ-১৬ দলের যেসব খেলোয়াড় এই দলে আছে, তারা দীর্ঘ পাঁচ মাস বাড়িতে থাকায় এবং কোন অনুশীলনের মধ্যে না থাকায় তাদের ভেতর আগের যে লড়াকু ভাব ও ফিটনেস ছিল সেটা অনেক কমে গেছে। প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে কিছু খেলোয়াড়দের পারফর্মেন্সের অধোগতিতে সেটাই ধরা পড়েছে। তবে গত কয়েকদিনের অনুশীলনে সেটার অনেক উন্নতি ঘটেছে, আরও উন্নতি হবে বলে আশা করি।’ ছোটনের ভাষ্য। সেই সঙ্গে ছোটন আশার বাণীও শোনালেন, ‘বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলের সুখবর হচ্ছেÑ এখন আর বয়সভিত্তিক কোন পর্যায়েই খেলোয়াড় সঙ্কট নেই এবং যারা আসছে, তারা ফুটবল শিখেই আসছে। ফলে তাদের জাতীয় বয়সভিত্তিক দলগুলোতে কোচিং করানো অনেক সহজ হয়ে যায়। কিছুদিন আগে আমাদের সানজিদার এশিয়ার সেরা ৭ ফুটবলারের একজন নির্বাচিত হওয়া এবং সাবিনার মালদ্বীপ পুলিশ ক্লাবের হয়ে টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়া এটাই প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের মহিলা ফুটবল সঠিক পথেই আছে এবং দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সানজিদা-সাবিনার এই কৃতিত্ব অন্য নারী ফুটবলারকে প্রচ-ভাবে অনুপ্রেরণা যোগাবে ভাল ফুটবল খেলতে।’ ছোটনের ছোট মেয়েরা যদি এএফসি অনুর্ধ-১৪ বালিকা আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে উদ্ভাসিত নৈপুণ্য দেখাতে পারে, তাহলে বাংলাদেশের মহিলা ফুটবল উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে আরও একধাপ। সে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারবে তো ছোটনের ছোট মেয়েরা?
×