ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিলেন নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১০ মার্চ ২০১৫

মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিলেন নাসিম

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেছেন, যতই হুমকিধমকি দেন না কেন, ২০১৯ সালের নির্ধাারিত সময়ের একদিন আগেও কোন নির্বাচন নয়। আর সে নির্বাচন হবে সংবিধান মেনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অধীনে। সেই নির্বাচনেও জনগণের রায় নিয়ে আবারও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দল সরকার গঠন করবে। তিনি সংলাপ প্রসঙ্গে বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে নির্বাচনকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি (বেগম জিয়া) তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন; সংলাপ এবং নির্বাচনে অংশ নেননি। তিনি ভুল করেছিলেন। নির্বাচন ছাড়া কোন দল টিকে থাকতে পারে না। কিন্তু এখন তিনি সংলাপ ও মধ্যবর্তী নির্বাচনের জন্য আন্দোলনের নামে জ্বালাওপোড়াও শুরু করেছেন। পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যাসহ যানবাহনে আগুন দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দল প্রতিটি জেলা, পাড়া-মহল্লায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য বিরোধী প্রতিরোধ কমিটি গঠন করে খালেদা জিয়ার অগণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে নাশকতা প্রতিহত করার আহ্বান জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোমবার বিকেলে রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা হাজী ওয়াহেদ মরিয়ম ডিগ্রী কলেজ মাঠে স্থানীয় ১৪ দল আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন। এর আগে তিনি বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপারে কড্ডায় সিরাজগঞ্জ জেলা ১৪ দল আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে বক্তৃতা দেন। কেন্দ্রীয় ১৪ দল ঘোষিত তিন দিনব্যাপী উত্তরবঙ্গ অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচীর অংশ হিসেবে প্রথমদিন সিরাজগঞ্জে পৃথক দু’টি জনসভা ও জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জনসভা ও সমাবেশে প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায় থেকে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলভুক্ত জাসদ, বাসদ এবং ওয়ার্কার্স পার্টিসহ অন্যান্য দলের নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুনসহকারে মিছিল নিয়ে জনসভায় যোগ দেন। তবে এ সময় উত্তরবঙ্গ মহাসড়ক ও বঙ্গবন্ধু সেতুর সংযোগ সড়কে অন্যান্য দিনের মতো যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। মোহাম্মদ নাসিম জনসভায় উপস্থিত হলে হাজারো মুখে সেøাগান ওঠে ‘হরতাল-অবরোধ মানি না, মানব না। শেখ হাসিনার দু’নয়ন, বাংলাদেশের উন্নয়ন।’ চান্দাইকোনা হাজী ওয়াহেদ মরিয়ম কলেজ মাঠের জনসভায় সভাপতিত্ব করেন রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাদী আলমাজী জিন্নাহ এবং কড্ডার জনসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। জেলা ১৪ দলের সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল খানের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রী সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, অধ্যাপক হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি, আব্দুল মজিদ ম-ল এমপি, সেলিনা বেগম স্বপ্না এমপি, জাসদের রেজাউল করিম তানসেন এমপি, বাসদের রেজাউর রশীদ খান, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ওয়াজেদ আলী খান, গণতন্ত্রী পার্টির রেজাউল করিম সূর্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, আবু ইউসুফ সূর্য, কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট, রিয়াজ উদ্দিন ও জান্নাত আরা তালুকদার হেনরিসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। জনসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম সরকারের উন্নয়ন ও আওয়ামী লীগের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭১সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। তথাকথিত গণতন্ত্রের নামে স্বৈরতন্ত্র কায়েমকারীদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আন্দোলন করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আওয়ামী লীগের সিনিয়র এ নেতা বলেন, খালেদা জিয়ার ডাকা অবরোধ, হরতাল প্রত্যাখ্যান করে মানুষ স্বাভাবিক কাজকর্ম করে যাচ্ছেন। এতেও তাদের মোহভঙ্গ হয়নি। জনগণের দেয়া ম্যান্ডেট অনুযায়ী বর্তমান সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবে। তাই সাংবিধানিকভাবেই ২০১৯ সালের আগে কোন নির্বাচন হবে না। বেগম খালেদা জিয়া সব হারিয়ে এখন সংলাপের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু জঙ্গীদের পৃষ্ঠপোষক-খুনীদের সঙ্গে কোন সংলাপ হবে না। বিরোধীদলের যে কোন নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন ও সমালোচনাকে সরকার সব সময় স্বাগত জানাবে। তবে আন্দোলনের নামে, জ্বালাওপোড়াও, বোমাবাজি, হত্যাসহ যে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা- কঠোর হাতে দমন করা হবে।
×