ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এফবিআইর ল্যাবে টেস্টের অনুমতি কোর্টের কাছে চাইবে ডিবি

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১০ মার্চ ২০১৫

এফবিআইর ল্যাবে টেস্টের অনুমতি কোর্টের কাছে চাইবে ডিবি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক ব্লগার অভিজিত রায় হত্যাকা-ের আলামত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতি চাইবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আদালতের অনুমতি পাওয়া গেলে হত্যাকা-ের আলামত পাঠানো হবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ল্যাবরেটরিতে। সোমবার গোয়েন্দা পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম। অভিজিত হত্যাকা-ে যেসব আলামত পরীক্ষার জন্য পাঠানো হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে পুলিশের সংগ্রহকৃত হামলাপরবর্তী টিএসসির ৫০ গজ উত্তরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা দুটি চাপাতি ও একটি ব্যাগ, ল্যাপটপের ওই ব্যাগে ভাঁজ করা কয়েকটি পত্রিকা, যা চাপাতিগুলো মোড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয়, একটি জিন্স প্যান্ট ও কয়েকটি প্যারাসিটামল ট্যাবলেটও পাওয়া যায় ব্যাগের ভেতরে, যা আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে এগুলো সবই আলামত হিসেবে নির্বাচন করা হতে পারে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে সঙ্গে নিয়ে একুশে বইমেলা থেকে বের হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়ের কাছে জঙ্গী কায়দায় হামলায় নিহত হন অভিজিত। চাপাতির আঘাতে স্ত্রী বন্যার একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী অভিজিত প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। হামলার ঘটনার দুদিন পর যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে আহত বন্যাকে। যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের প্রেক্ষিতে এফবিআইয়ের একটি দল ইতোমধ্যে ঢাকায় তদন্ত শুরু করেছে। এ দলের চার সদস্য গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং ছবি সংগ্রহ করেছে। অভিজিতের বাবা বিশিষ্ট পদার্থবিদ অধ্যাপক অজয় রায়ের সঙ্গেও কথা বলেছেন তারা। মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিতকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শফিউর রহমান ফারাবী নামে এক হিযবুত তাহরীর জঙ্গী নেতাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। পরে তাকে ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। ইন্টারনেটে লেখালেখির জন্য অভিজিতকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ফারাবী ছাড়া আর কারা অভিজিতকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল বা ফেসবুকে মন্তব্য করে হত্যায় উৎসাহ দিয়েছিল তাদের ১০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতরের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ফেসবুকে অভিজিতকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন, এমন ১০ জনের একটি তালিকার কথাও তিনি বলেছিলেন ডিএমপির মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম। তালিকা প্রসঙ্গে সোমবার ডিএমপির মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম বলেন, ফারাবীর ফেসবুক পাতায় যারা অভিজিত হত্যাকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন কমেন্ট করেছে তারা এ হত্যায় জড়িত থাকতে পারে, এমন সন্দেহ রয়েছে আমাদের যারা ফারাবীকে তারা গুরু মানে। ফারাবী এ হত্যাকা-ে সরাসরি অংশ নিয়েছেন, নাকি তার অনুসারীরা এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সেটা আমরা তদন্ত করে দেখব। প্রাথমিক অনুসন্ধানে হুমকিদাতাদের অধিকাংশই ছাত্র বলে আমরা জানতে পেরেছি। অভিজিত হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করতে গোয়েন্দা পুলিশ এফবিআইয়ের সঙ্গে তথ্য ও মতবিনিময় করেছে। হত্যাকা-ের তদন্তে আমাদের তৎপরতা নিয়ে এফবিআই প্রতিনিধিরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আমরাও তাদের কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পাচ্ছি। তদন্ত এগিয়ে চলেছে বলে জানান ডিএমপির মুখপাত্র।
×