ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দাউদ হায়দার

বার্লিন

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৯ মার্চ ২০১৫

বার্লিন

বাংলাদেশে উগ্রপন্থী মৌলবাদী, ইসলামী জঙ্গীগোষ্ঠী ইদানীং কতটা মারাত্মক, বেপরোয়া, বিশ্বব্যাপী ইসলামী জঙ্গী নেটওয়ার্কে জড়িত এবং হিংস্র, খুনী, দুনিয়ার নানা দেশের মিডিয়ায় গুরুত্বের সঙ্গে তা প্রকাশিত। জার্মান মিডিয়া সাধারণত বাংলাদেশের বা তৃতীয় বিশ্বের খবর গুরুত্ব দেয় না। গত দুই মাসে বাংলাদেশে হরতাল, অবরোধ, এক শ’ জনের বেশি হত্যার কোনও উল্লেখ নেই রেডিও, টিভি, সংবাদপত্রে। রাজনৈতিক অচলাবস্থায় আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘের মহাসচিব মহাচিন্তিতÑ এই খবর বাংলাদেশের মিডিয়ায় নিত্যদিনই ফলাও করে বেরোচ্ছে। বিশ্বের অন্য কোনও প্রচারমাধ্যমে চোখে পড়বে না। তবে বড়রকমের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মানবাধিকার ওলট পালট হলে খবর নিশ্চয়ই প্রকাশিত হয়। ব্লগার, লেখক অভিজিৎ রায়ের হত্যাকা- নিছকই হত্যা নয়, মুক্তচিন্তার বুদ্ধিজীবী যে পরিকল্পিত হত্যা, দেশকে মেধাশূন্য, সেক্যুলার দেশকে সাম্প্রদায়িক করার দীর্ঘমেয়াদী ষড়যন্ত্র, ইসলামের নামে জঙ্গীবাদ করার আটঘাট । অভিজিতের হত্যাকা- নিয়ে ব্রিটেনের টাইমস, টেলিগ্রাফ, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট হাফ কলাম খবর প্রকাশ করেছে। তবে দ্য গার্ডিয়ানের ইন্টারন্যাশনাল সেকশনে সংবাদ। সঙ্গে হাফ পৃষ্ঠাজুড়ে ছবি। মশাল হাতে নারীদের ঢাকায় মিছিল। ছবি তুলেছেন মনিরুজ্জামান। ছবির ক্যাপশন : Fightback for freedom. Hundreds took part in a tourchlit procession in Dhaka yesterday to protest about bloger Avijit Roy’s murder. আরও দুটি ছবি। অভিজিৎ এবং স্ত্রী রাফিয়া আহমেদ বন্যা একসঙ্গে। রাফিয়া হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। পৃষ্ঠাজুড়ে দুটি রিপোর্ট। প্রথম রিপোর্টের শিরোনাম : Anger in Dhaka at secular bloger’s killing. শিরোনামের নিচে সাব-হেডলাইন : Islamist group claims responsibility for cleaver attack in street on liberal US-Bangladeshi writer and wife (International. The Guardian/Saturday 28 February 2015) ও রিপোর্টার দু’জন, সাদ হামাদি এবং মার্ক ট্রান। দ্বিতীয় রিপোর্টের শিরোনাম : ‘He wasn′ : a hardliner. He was a getle guy who wanted to promote science.′ লেখক : মার্ক ট্রান ও শুভজিত ব্যানার্জী। দুই রিপোর্টেই বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গীগোষ্ঠীর নেটওয়ার্ক কতটা বিস্তৃত, তা বলা হয়েছে। এত লোকের সামনে, ভিড়ের মধ্যে অভিজিৎকে কিভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হলো, পুলিশ পাহারা সত্ত্বেও, বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে। লেখক হুমায়ুন আজাদ, ব্লগার রাজীব হায়দারকে একই কায়দায় খুন করেছে, অথচ এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। দ্বিতীয় রিপোর্টে অভিজিতের বাবা শিক্ষাবিদ, বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক অজয় রায়কে কোট করে বলা হয়েছে- তীব্র নিন্দা করেছেন পুলিশের ভূমিকা, ′The police for falling to act despite being allegedly only metres away from the scene. দ্বিতীয় রিপোর্টে মার্ক ট্রান এবং শুভজিত ব্যানার্জী ব্লগার-লেখক অভিজিতের কয়েকটি লেখার অংশবিশেষও উদ্ধৃতি দিয়েছেন (ইংরেজী অনুবাদ করে)। উদ্ধৃতির কোনও লেখায় ইসলাম বিষয়ে সমালোচনা বা কটূক্তি নেই। আছে ইসলাম এবং বিজ্ঞান নিয়ে তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত ভাবনা-চেতনা।
×