ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপে এবার ওয়ার্নার-ঝড়

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৫ মার্চ ২০১৫

বিশ্বকাপে এবার ওয়ার্নার-ঝড়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগের দিন আফগান কোচ বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের সম্ভাবনা ফিফটি-ফিফটি! তার সাহস দেখে অবাক হয়েছেন অনেকে। বাস্তবতা হলো মাঠের পার্থক্য টের পেল আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশটি, পার্থক্য বোঝালেন মাইকেল ক্লার্করা! যেখানে ব্যাট হাতে আফগানিস্তান বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করলেন ডেভিড ওয়ার্নার। ক্যারিয়ারসেরা ১৭৮ রানের ইনিংসে দলকে পাহাড়ে চড়ালেন অসি ‘ড্যাশিং ওপেনার’। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৪১৭- বিশ্বকাপ ইতিহাসের দলীয় সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড এটিই। আগের ৪১৩/৫- ২০০৭ বিশ্বকাপে বারমুডার বিপক্ষে যা করেছিল ভারত। দলীয় ও ব্যক্তিগত রানবন্যায় ভাসছে এবারের বিশ্বকাপ। প্রতিনিয়ত হচ্ছে সেঞ্চুরি, ভাঙছে রেকর্ড। সে ধারা অব্যাহত থাকল কালকের ম্যাচেও। উদ্ভাসিত নৈপুণ্যে দুর্বল আফগান বোলারদের চোখের জল, নাকের জলে একাকার করে ছাড়লেন ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলরা। নেতৃত্বে থাকলেন ওয়ার্নার। ২০১৪ সালে টেস্টে ওয়ার্নারের ব্যাটিংয়ের কথা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি ক্রিকেটপ্রেমীরা। অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হবে। ‘ধরো পেরাক মারো হাতুর টাইপ’-এ যার ব্যাটিংয়ে কোন দর্শন নেই বলে সমালোচনা, সেই তিনিই সাদা পোশাকে রানের ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন। গত বছর ৯ ম্যাচে ৬ সেঞ্চুরি ও ৩ হাফ সেঞ্চুরির সমন্বয়ে করেছিলেন ১১৩৬ রান। গড় ৬৩.১১। ক্রিকেট বিশ্লেষক তো বটেই খোদ অস্ট্রেলীয় সমর্থকদেরও চোখ কপালে উঠে গিয়েছিল! তবে প্রশ্ন ছিল ওয়ানডের ধারাবাহিকতা নিয়ে। ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপ পুনরুদ্ধারে তার ব্যাট যে গুরুত্বপূর্ণ। কার্লটন মিড ত্রিদেশীয় সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৭ ও বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ১০৪ রানের দুরন্ত দুই সেঞ্চুরি ইনিংস খেলে দারুণ কিছুর ইঙ্গিতই দিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু মূল মঞ্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পাওয়ার দিনে ২২ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ভয়ঙ্কর ব্যাটিং-কোলাপসের ম্যাচে ৩৪ রানে সাজঘরে ফেরেন। এবি ডি ভিলিয়ার্স, ক্রিস গেইল, বিরাট কোহলিরা যেখানে আগেই মারদাঙ্গা ব্যাটিং উপহার দিয়েছেন, সেখানে তার কাছ থেকেও বড় কিছু পাওনা হয়ে গিয়েছিল। কাল সেটিই মেটালেন ২৮ বছরের অসি ‘ক্রেজি বয়’। ৫৭তম ওয়ানডেতে তুলে নিলেন ৪র্থ সেঞ্চুরি। শাপুর জাদরান-হামিদ হাসানের মতো আলোচিত পেসারদের পাড়ার বোলারে পরিণত করে খেললেন ক্যারিয়ারসেরা ১৭৮ রানের ইনিংস। ১৩৩ বলের ঝড়ে চার ১৯ ও ছক্কা ৫টি! তার আগের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ছিল ১৬৩, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১২ সালে। বিশ্বকাপে কোন অস্ট্রেলিয়ানের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এটি। আগে যা ছিল ম্যাথু হেইডের ১৫৮- ২০০৭ সালে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তবু একটা আফসোস থেকে যাবে ওয়ার্নারের। শাপুর জাদরানের বলে মোহাম্মদ নবির হাতে ক্যাচ দিয়ে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন সাজঘরে ফেরেন তখনও দলের ১৩ ওভার বাকি, আরেকটু সতর্ক হলে ক্রিস গেইলের পর বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরিটি পেয়ে যেতে পারতেন তিনি। তবে স্মিথ-ম্যাক্সওয়েলদের সঙ্গী করে ইতিহাস অদল-বদল করে দিয়েছেন ঠিকই। দ্বিতীয় উইকেটে স্মিথকে নিয়ে যোগ করেছেন ২৬০ রান- অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি। আগে যেটি ছিল রিকি পন্টিং ও শেন ওয়াটসনের- ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অবিচ্ছিন্ন ২৫২ রান করেছিলেন তারা।
×