ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অচলাবস্থার অবসান, চট্টগ্রাম আদালতে কর্মচাঞ্চল্য

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৫ মার্চ ২০১৫

অচলাবস্থার অবসান, চট্টগ্রাম আদালতে কর্মচাঞ্চল্য

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে। আইনজীবী সমিতির সিদ্ধান্তে বুধবার থেকে কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেছেন আইনজীবীরা। ফলে এদিন ছিল বিচারপ্রার্থী ও কৌঁসুলিদের পদচারণায় মুখরিত আদালত অঙ্গন। বিশেষ পরিস্থিতিতে ২৬ বছর আগে গৃহীত এক সিদ্ধান্তের ফলে হরতালে বিচার কার্যক্রম বন্ধ ছিল চট্টগ্রাম আদালতে। শেষ পর্যন্ত সরকারপন্থী এবং সাধারণ আইনজীবীদের দাবির মুখে সে সিদ্ধান্ত বাতিল হওয়ায় অচলাবস্থার অবসান ঘটল। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট মজিবুল হক সাংবাদিকদের জানান, গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত আইনজীবী সমিতির বৈঠকে হরতালের মধ্যেও বেলা ২টা থেকে আদালতের কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভবিষ্যতে যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন বা যে দলই হরতাল আহ্বান করুক না কেন আদালতের কার্যক্রম সচল থাকবে। বিচারপ্রার্থী জনগণ ও সাধারণ আইনজীবীদের স্বার্থের দিকটি বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকার আমলে বিশেষ পরিস্থিতিতে ১৯৮৯ সালে হরতালের দিনে আদালতের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৎকালীন আইনজীবী সমিতি। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হরতাল ঘোষিত হলেই আইনজীবীরা কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতেন। কিন্তু বর্তমানে যেভাবে লাগাতার হরতাল চলছে তাতে বিচার প্রার্থীদের ভোগান্তি বাড়ার পাশাপাশি আইনজীবীদেরও আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হরতালে কার্যক্রম চালানোর পক্ষে জনমত গড়ে ওঠে। তবে বিএনপি ও জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের বিরোধিতা ছিল। বিগত কয়েকদিন ধরে পাল্টাপাল্টি মিছিলও হয় আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবী এবং বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের। গত মঙ্গলবার দু’পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান ধাক্কাধাক্কির পর্যায়েও গড়ায়। কিন্তু সমিতির সিদ্ধান্ত হওয়ায় এ নিয়ে আর জটিলতা নেই। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নব নির্বাচিত সভাপতি আওয়ামী লীগ সমর্থক এবং সাধারণ সম্পাদক বিএনপি সমর্থক। বৈঠকের পর শীর্ষ এ দু’নেতাই জানিয়ে দেন যে, হরতালেও ২টার পর শুনানিতে অংশ নেবেন আইনজীবীরা। বুধবারের চট্টগ্রাম আদালতে চিত্র ছিল অত্যন্ত কর্মমুখর, যেন গত দু’মাস আগের চিত্রটিই ফিরে এসেছে। এ দিন বিচার প্রার্থীদেরও সমাগম দেখা যায়। আদালত ভবনের অলিগলিতে ছিল আইনজীবীদের পদচারণা। লাগাতার অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচীর কারণে গত ৬ জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম আদালতে অচলাবস্থা চলছিল। দেশের অন্যান্য আদালতে স্বাভাবিক কর্মকা- চললেও ব্যতিক্রম ছিল শুধুই চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল সাংবাদিকদের বলেন, রাজশাহী জেলা আইনজীবী সমিতিও তাদের ৩০ বছর আগের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে। হাইকোর্ট, সুপ্রীমকোর্টসহ দেশের সব আদালতেই হরতালে বিচার কার্যক্রম চলে। শুধুমাত্র একটি সিদ্ধান্তের কারণে চট্টগ্রামে বঞ্চিত হচ্ছিলেন বিচার প্রার্থীরা। এ সিদ্ধান্ত সাধারণ আইনজীবীদের স্বার্থেরও পরিপন্থী ছিল। এখন থেকে হরতালে আর সেই অচলাবস্থা থাকবে না।
×