ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বুধবার দিবাগত রাত (বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা) বাংলাদেশ-স্কটল্যান্ড লড়াই

স্কটিশদের হারাতে প্রস্তুত টাইগাররা

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৪ মার্চ ২০১৫

স্কটিশদের হারাতে প্রস্তুত টাইগাররা

মিথুন আশরাফ ॥ মাঝখানে একটিমাত্র দিন বাকি। আজকের দিনটি শেষ হওয়ার অপেক্ষা শুধু। রাত গড়িয়ে ভোর হওয়ার আগেই দিবাগত রাত ৪টায় শুরু হয়ে যাবে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আরেকটি ম্যাচ। যে ম্যাচে সবল বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ এবার দুর্বল স্কটল্যান্ড। স্কটল্যান্ড দুর্বল দল হলেও, এ দলের বিপক্ষে কঠিন লড়াইয়েই নামতে হবে বাংলাদেশকে। অস্ট্রেলিয়ায় এতদিন খেলে এখন নিউজিল্যান্ডে আছে দল। নেলসনের সেক্সটন ওভালে হবে খেলা। এ খেলায় নামার আগে বাংলাদেশ দল তিন দিন মাত্র অনুশীলন করার সুযোগ পাচ্ছে অথচ স্কটল্যান্ড বিশ্বকাপের শুরু থেকেই খেলছে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে! তবে বাংলাদেশের ভরসা একটি জায়গাতেই। প্রতিপক্ষ দলটি এ বিশ্বকাপেরই সবচেয়ে দুর্বল দল। এখন পর্যন্ত একাধিক বিশ্বকাপে খেলেও কোন বিশ্বকাপেই জয় পায়নি। এবারও না। বাংলাদেশ এরই মধ্যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় পেয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ায় ১ পয়েন্ট পেয়েছে। এবার যখন বাংলাদেশ দল খেলতে নামবে সেখানেও নতুন মাঠেই খেলতে হবে বাংলাদেশকে। নেলসনের সেক্সটন ওভালে কখনই খেলেনি বাংলাদেশ। স্কটল্যান্ডও এ মাঠে খেলায় অভ্যস্ত না থাকলেও বিশ্বকাপের শুরু থেকেই নিউজিল্যান্ডে খেলায় এ কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। যে কাজটি করতে বাংলাদেশকে বেগ পেতেই হবে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এক এক করে তিনটি ম্যাচ খেলেছে। প্রথমটিতে ক্যানবেরার মানুকা ওভালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১০৫ রানে জিতেছে। দ্বিতীয়টিতে ব্রিসবেনের গাব্বায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়েছে। তৃতীয় ম্যাচটি বাংলাদেশ খেলেছে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরেছে ৯২ রানের বড় ব্যবধানে। এবার স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামতে হবে। যে লড়াইয়ে জেতার আশা সবাই করছে। এবার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত স্কটল্যান্ড তিনটি ম্যাচ খেলেছে। একটিতেও জিততে পারেনি। এর আগে ১৯৯৯ সালে (৫টি ম্যাচ) ও ২০০৭ সালে (৩টি ম্যাচ) বিশ্বকাপ খেলে কোন জয়ই তুলে নিতে পারেনি স্কটল্যান্ড। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত মোট ১১ টি ম্যাচ খেলে কোন জয় নেই। বাংলাদেশ সেই তুলনায় অনেক বড় দলই। ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭ ও ২০১১ সালে খেলেছে। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ছাড়া প্রতিবারই টেস্ট খেলুড়ে দলকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৭ সালে তো দ্বিতীয় রাউন্ডেই উঠে গেছে। এবার নিয়ে পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ খেলা কিংবা ম্যাচ খেলা; সব দিকেই অভিজ্ঞ বাংলাদেশ। সেই অভিজ্ঞতা এখন কাজে লাগাতে পারলেই হয়। জয় তুলে নিতে পারলেই হয়। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এর আগে বাংলাদেশও যে চারটি ম্যাচ খেলেছে, একটি পরিত্যক্ত হয়েছে; তিনটিতেই জিতেছে। জয়গুলো খুব সহজভাবেই মিলেছে। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথমবার খেলে। প্রথমবারেই ২২ রানের জয় পায়। এরপর ২০০৬ সালে দেশের মাটিতে পরপর দুই ম্যাচে ৬ উইকেট ও ১৪৬ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। অবশ্য শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ শিবিরে ফিল্ডিং চিন্তা ভর করেছে। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে যদি ফিল্ডিং এমন নড়বড়ে হয়, তাহলে স্কটিশরা বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে বসতে পারে। তাই ক্রিকেটাররাও সতর্ক। কিন্তু স্কটল্যান্ডও যেন হুঙ্কারই সুরে কথা বলতে শুরু করে দিয়েছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারের পরও বিশ্বকাপে একটি জয় খুঁজে বেড়াচ্ছে। সেই জয়টি যে বাংলাদেশের বিপক্ষেই চায় তারা! স্কটল্যান্ড অধিনায়ক প্রেসটন মোমসেনই বলেছেন, ‘কন্ডিশন আমাদের পক্ষে যেতে পারে। একটি জয় পুরো দলের, দলের ক্রিকেটারদের, স্টাফদের রূপই বদলে দিতে পারে। যখন দেশে ফিরব, তখন অন্যরকম আনন্দ নিয়ে ফিরতে পারব। জয়টি স্কটল্যান্ডের ক্রিকেটের জন্যও অনেক কাজে দেবে। আমরা দেশের হয়ে খেলতে গর্ববোধ করি। প্রথম জয়টি মিললে সত্যিই অন্যরকম আবহ তৈরি হয়ে যাবে। সেই সুযোগটি আছে।’ এখন স্কটল্যান্ড সেই সুযোগটি বাংলাদেশের বিপক্ষেই খুঁজছে। স্কটল্যান্ডের জন্য একটা ইতিবাচক দিকও আছে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াতেই খেলেছে। নিউজিল্যান্ডে খেলেনি। এবার স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে খেলবে। শনিবার রাতে নেলসনে পৌঁছে রবিবার জিম করেছে বাংলাদেশ দল। সোমবার থেকে শুরু করেছে অনুশীলন। এর মধ্যেই কন্ডিশন জয়, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের স্মৃতি ভোলা, উইকেটের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার কাজটি করে নিতে হবে। সঙ্গে নিজেদের গুছিয়ে নেয়ার ব্যাপারটিও থাকছেই। বিশ্বকাপে এবার বাংলাদেশ অন্তত দুটি ম্যাচ জিতবেই। এ ভরসা সবারই আছে। সেই দুটি দল হচ্ছে, আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ড। একটি জয় মিলেছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে। আরেকটি জয়ের উৎসবের অপেক্ষা এখন। সেই জয়টি আসতে হবে দুর্বল স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেই। সেই দুর্বল দলটি এবার সবল বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে। আজকের দিনটি শেষে দিবাগত রাতেই সেই ম্যাচ।
×