ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আলোকিত বাউফল

দিন বদলে গেছে- এখন আর সেই দৃশ্য চোখে পড়ে না...

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২ মার্চ ২০১৫

দিন বদলে গেছে- এখন আর সেই দৃশ্য চোখে পড়ে না...

কামরুজ্জামান বাচ্চু ॥ বিশ-পঁচিশ বছর আগের কথা। পটুয়াখালীর বাউফল শহরের মানুষ ঘর থেকে বাইরে বের হলে জুতা কিংবা স্যান্ডেল হাতে নিয়ে বের হতো। এখন আর সে দৃশ্য চোখে পড়ে না। ঘর থেকে কেউ স্যান্ডেল হাতে নিয়ে বের হয় না। আওয়ামী লীগ সরকার পৌরশহরে একটি ঘরের জন্য একটি পাকা রাস্তা করে দিয়েছে। বর্তমান সরকারের গত দুই বছরের এ উন্নয়ন হয়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতির কারণে শহরের মানুষের জীবনজীবিকার মান পরিবর্তন হয়েছে। কাদামাটি পথ হেঁটে যেতে হয় না। ঘর থেকে বের হলেই পাকা রাস্তা। স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করছে। পরিবহন সুবিধা বেড়েছে। মোটরবাইক কিংবা রিক্সা নিয়ে বাড়িতে যেতে পারেন। বাউফল পৌরশহরের গত দুই বছরে ৫শ’ ৩০টি বাড়ি ও ঘরের সামনের সংযোগ রাস্তা পাকা করা হয়েছে। ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সংযোগ রাস্তাগুলো পাকা করা হয়েছে। দ্রুতগতিতে নির্মাণ কাজ চলছে বাকি রাস্তাগুলোর। এ ছাড়াও শহরটি এখন আলোকিত করা হয়েছে। দুই কিলোমিটার সড়কের পাশে ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে স্ট্রীটলাইট দেয়া হয়েছে। ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে আড়াই কিলোমিটার ড্রেন। শহরের ১ ও ২ নং ওয়ার্ডের খালের পারে প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ইকো-পার্কের নির্মাণ কাজ চলছে। ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুই কিলোমিটার সিসি ও সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭ কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং করা হয়েছে। পানীয়জলের সুবিধার জন্য ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে এক শ’ গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। দ্রুত এগিয়ে চলছে কয়েকটি প্রকল্পের কাজ। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থাপনা নির্মিত হওয়ায় সৌন্দর্য বর্ধন করা হচ্ছে শহরের। পৌরশহরের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল হোসেন (৫০) বলেন, বাপ-দাদার সময় থেকেই আমরা এ শহরে বসবাস করছি। ২০-২৫ বছর আগেও এলাকার বাড়ি-ঘরের পাশে ঝোপঝাড় ছিল। সন্ধ্যা হলেই শৃগালের ডাক শোনা যেত। ওই সময় এই শহরের একটি মাত্র রাস্তা পাকা ছিল। আর সব রাস্তাই ছিল কাঁচা। বর্ষার সময় কাদাপানি ভেঙ্গে যাতায়াত করতে হতো। এখন শহরের সব রাস্তাঘাট পাকা। ঘর থেকে স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে বাইরে বের হতে পারি। অল্প সময়ে এই পরিবর্তন আমাকে বিমোহিত করেছে। ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রাণকৃষ্ণ (৬০) বলেন, কয়েক বছর আগের কথা, আমার বাড়ির সামনের বড় রাস্তাটি ছিল কাঁচা। তাই ঘর থেকে স্যান্ডেল হাতে নিয়ে বের হতাম। তারপর শহরে গিয়ে পা ধুয়ে স্যান্ডেল পরতাম। এখন সেই রাস্তা পাকা হয়েছে। ঘর থেকে স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে শহরে যেতে পারছি। মাসতিনেক আগে আমার ঘর থেকে সেই রাস্তা পর্যন্ত পাকা করা হয়েছে। বাউফল শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বাউফল বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এ ওয়াই এম কামরুজ্জামান বলেন, মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে এ শহরের ব্যাপক উন্নয়ন দেখে আমি বিস্মিত। এক সময় পথঘাট ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন। চলাচল করতে অসুবিধা হতো। এখন পথঘাট আলোকিত। সড়কবাতি বসানো হয়েছে। পথচারীর চলাচলে আর অসুবিধা হয় না। এ ব্যাপারে বাউফল পৌরসভার মেয়র ও পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নে বিশ্বাস করেন বলেই মাত্র দুই বছরের মধ্যে এ শহরের ব্যাপক পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে। জনগণ বর্তমান সরকারের পক্ষে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাউফল শহরকে একটি আলোকিত শহরে পরিণত করা সম্ভব হবে।
×