স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জের সন্ত্রাসী জনপদ বাঘরায় গত চার দশকে সব ইউপি চেয়ারম্যানসহ খুন হয়েছে শতাধিক। সর্বশেষ মঙ্গলবার শাহিন খুন হওয়ার আগে আরেকটি খুন হয়েছে। সাত দিনেও এই খুনের মামলা হয়নি। মো. আকাশ ওরফে আশিক (২১) খুন হয় ১৮ ফেব্রুয়ারি। ১৬ ফেব্রুয়ারি অপহরণের পর নির্মমভাবে নির্যাতনকালে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছিল। ভয়ে পরিবারটি বিচার পর্যন্ত চাইতে পারছে না। আশিকের সঙ্গে প্রহৃত শাকিল (২৩) এখনও মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে ঢাকা মিডফোর্ড হাসপাতালে। সন্ত্রাসী জনপদ বাঘরা বিগত ইতিহাস রক্তাক্ত। ২০০১ সালে পুলিশের হ্যান্ডকাপসহ বাঘরার সাবেক চেয়ারম্যানসহ ফাইফ মার্ডারে ঘটনা এখনও দেশে আলোচিত। পরে এই মামলার প্রধান সাক্ষী সাবেক চেয়ারম্যান ইউপি সাহাবুদ্দিন মাস্টারকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করা হয়। স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিবদমান গ্রুপগুলোর দ্বন্দ্বের কারণে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ছাড়া বাঘরার সব চেয়ারম্যানই নিহত হয়েছেন। আর একজন খুনের দায়ে ফাঁসির আদেশ নিয়ে আয়ুব আলী কারাগারে অন্তরীণ রয়েছেন। এই সময়ে খুন হয়েছে শতাধিক। কিন্তু প্রবল দাবির পরও পদ্মা তীরের প্রত্যন্ত এই বাঘরায় পুলিশ ফাঁড়ি হচ্ছে না।
জানা গেছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মাওয়া পুরনো ফেরিঘাট এলাকা থেকে আশিক ও শাকিলকে অপহরণ করে বাঘরার সন্ত্রাসী আলম ও তার লোকজন। পরে বাঘরা গ্রামের একটি বাড়িতে এনে নির্মম নির্যাতন চালাতে থাকে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি জানতে পেরে বিকেলে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশের অবস্থান টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ তাদের মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীনগর ও পরে ঢাকা মিডফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করে। দু’দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি মধ্য রাতে আশিক মারা যায়। পরে হাসপাতাল থেকে এক আত্মীয় লাশ নিয়ে কোনক্রমে দাফন করেন। কিন্তু মামলা করতে পরিবারটি সাহস পাচ্ছে না। শাকিল একরম এতিম। বাবা মারা গেছেন। মা দুলি বেগম বিয়ে করে অন্যত্র সংসার করছেন। এই অবস্থায় শাকিলের বিচার যাওয়ারও যেন নেই কেউ। এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানার ওসি শেখ মাহবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কেউ মামলা করতে আসেনি।