ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মধ্য আয়ের দেশ গড়ার লক্ষ্যে ১১ আর্থিক কৌশল নিচ্ছে সরকার

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

মধ্য আয়ের দেশ গড়ার লক্ষ্যে ১১ আর্থিক কৌশল নিচ্ছে সরকার

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে নিয়ে যেতে আগামী পাঁচ বছরে ১১টি আর্থিক কৌশল নেয়া হচ্ছে। ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এ সব বিষয় স্থান পাচ্ছে। এর মধ্য দিয়েই কাক্সিক্ষত অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই অর্থনীতিবিদ প্যানেলের সভায় বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে। চলমান ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অগ্রাধিকারগুলো পর্যালোচনা করে নতুন এসব অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৩০ জুন এ পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় উপস্থাপন করা হবে। ওই সভায় অনুমোদন পেলে জুলাই থেকে তা বাস্তবায়নে যাবে। সে লক্ষ্যেই কাজ করছে পরিকল্পনা কমিশন। এ বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সরকারের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্য প্রতিফলিত হবে, আর তা অর্জনের জন্য বিকল্প কী কী কৌশল অনুসরণ করা হবে, তা উল্লেখ থাকবে। এতে লক্ষ্য অর্জনের জন্য কী ধরনের সঞ্চয় ও বিনিয়োগ, সরকারী ব্যয়, সরকারী-বেসরকারী খাতের ভূমিকা এবং প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো প্রয়োজন হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনাও থাকবে। এ পরিকল্পনা প্রণয়নে পরিকল্পনা কমিশনকে দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য অর্থনীতিবিদদের সমন্বয়ে প্রফেসর ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে কাজ করছে প্যানেল অব ইকোনমিস্ট। সূত্র জানায়, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আগামী পাঁচ বছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৮ শতাংশ। অর্থবছর ভিত্তিক ২০১৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য হচ্ছে ছয় দশমিক ছয় শতাংশ, ২০১৭ অর্থবছরে ছয় দশমিক আট শতাংশ, ২০১৮ অর্থবছরে সাত দশমিক দুই শতাংশ, ২০১৯ অর্থবছরে সাত দশমিক ছয় শতাংশ এবং পরিকল্পনা বছর শেষে ২০২০ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে আট শতাংশে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আগামী পাঁচ বছরে দেশের মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ছয় দশমিক দুই শতাংশ। অর্থবছরভিত্তিক এ লক্ষ্য হচ্ছে ২০১৬ অর্থবছরে ছয় শতাংশ, ২০১৭ অর্থবছরে ছয় শতাংশ, ২০১৮ অর্থবছরে ছয় শতাংশ, ২০১৯ অর্থবছরে ছয় দশমিক দুই এবং ২০২০ অর্থবছরে ছয় দশমিক দুই শতাংশ। সূত্র জানায়, খাতভিত্তিক অগ্রগতি অর্জনের জন্য যেসব বিষয় গুরুত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেগুলো হচ্ছে, অতিদরিদ্রতা দূরীকরণের বাস্তবসম্মত উপায় গ্রহণ, দীর্ঘ ও টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের ওপর জোর দেয়া, দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, কৃষিতে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ, শস্য বহুমুখীকরণের ওপর জোর দেয়া, অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কর্মকা- চিহ্নিত করা, অবকাঠামো উন্নয়নে বেসরকারী বিনিয়োগকে অধিক গুরুত্ব দেয়া, সেবা খাতে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা এবং কারিগরি শিক্ষা প্রদান করে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা, রফতানি বহুমুখীকরণে অধিক গুরুত্ব দেয়া।
×