ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শান্তিরক্ষী চাইলেন পোরোশেঙ্কো

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

শান্তিরক্ষী চাইলেন পোরোশেঙ্কো

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো বুধবার যুদ্ধ বিদীর্ণ পূর্বাঞ্চলে একটি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী মিশন মোতায়েনের আহ্বান জানিয়েছেন। রণাঙ্গনে একটি বড় ধরনের পরাজয় বরণের পর তাঁর দেশ যে আর রুশপন্থী বিদ্রোহীদের প্রতিহত করতে পারছে না, এটি তারই কঠিন স্বীকৃতি। এদিকে, যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন সতর্ক করে দিয়েছেন যে, ন্যাটো জোটের পূর্ব পাশের বল্টিক দেশগুলোর স্থিতিশীলতা বিপন্ন করে তুলতে ভøাদিমির পুতিনের গোপন হামলা পরিচালনার ‘প্রকৃত ও উপস্থিত বিপদ’ রয়েছে। রুশপন্থী বিদ্রোহীদের প্রচ- আক্রমণ অবরুদ্ধ শহর দেবালৎসেভ থেকে বুধবার ইউক্রেনীয় বাহিনী সরে আসার পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী একথা বলেন। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট, টেলিগ্রাফ ও বিবিসির। মাইকেল ফ্যালন বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ক্রিমিয়া ও পূর্ব ইউক্রেনে একই ধরনের ক্রেমলিন সমর্থিত নাশকতার দ্বারা ন্যাটোর দৃঢ় সঙ্কল্পের পরীক্ষা নিতে পারেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনের লড়াইয়ের প্রথমদিকে যেরকম নোংরা অনুপ্রবেশ, প্রচারণা, গুপ্ত বাহিনী প্রেরণ এবং সাইবার হামলা পরিচালনা করা হয়েছিল, এস্তোনিয়া, লিথুয়ানিয়া কিংবা লাতভিয়ায় জাতিগত উত্তেজনায় ইন্ধন যোগাতেও তা ব্যবহার করা হতে পারে। ইউক্রেনের ভূমিতে কোন আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন রণাঙ্গনের পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে, যা ইউক্রেনকে আপাতত দেশ পুনরেকত্রীকরণের প্রচেষ্টাকে পরিত্যাগ করতে বাধ্য করবে। তবে, এই উদ্যোগ রুশ সমর্থিত বিদ্রোহীদের কিয়েভের দিকে অগ্রগমনও থামিয়ে দেবে। অবরুদ্ধ রেলওয়ে জংশন দেবালৎসেভ থেকে হাজার হাজার সৈন্য পালিয়ে যাওয়ার পর পোরোশেঙ্কো ওই আহ্বান জানান। রবিবার থেকে একটি অস্ত্রবিরতি বলবত হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে লড়াই তীব্রতর হয়। রাশিয়ার ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখলের প্রায় এক বছর পর এই নতুন পরাজয়ের ক্ষতি ইউক্রেনের পাশ্চাত্যপন্থী প্রেসিডেন্টের জন্য কঠিন রাজনৈতিক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। এ প্রশ্নও উঠবে যে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তার সৈন্যরা কিভাবে ঘেরাও হয়ে পড়েছিল। সৈন্যরা দুই দিক দিয়ে গোলাবর্ষণের মধ্যে পূর্ব ইউক্রেনের হিমশীতল তৃণভূমি থেকে বিশৃঙ্খল রাত্রিকালীন পশ্চাদপসরণের কাহিনী বর্ণনা করেছে। তবে, এই মুহূর্তে ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী মিশন মোতায়েনের সম্ভাবনার বিষয়টি পরিষ্কার নয়। এ ব্যাপারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের যে কোন প্রস্তাবে রাশিয়া ভেটো প্রদান করতে পারে। পোরোশেঙ্কো বলেন, তিনি একটি ইউরোপীয় পুলিশ মিশন মোতায়েন করা হবে বলে আশা করেন। যদিও এ ধরনের পরিকল্পনা যুদ্ধক্ষেত্রে কি ফল বয়ে আনবে তা পরিষ্কার নয়। ইইউর যে কোন একক পরিকল্পনা রাশিয়া সম্ভবত প্রত্যাখ্যান করবে। রাশিয়া বলেছে, দেশটি তার সীমান্তে ন্যাটোর অবৈধ প্রবেশকে তার নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে। পোরোশেঙ্কো বুধবার রাতে তাঁর শীর্ষ নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, ‘একটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে আলোচনা করার জন্য আমি আপনাদের অনুরোধ জানাচ্ছি।’ ইউক্রেনের অব্যাহত সহিংসতা দেশটির সামরিক বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহের জন্য প্রেসিডেন্ট ওবামার ওপর চাপ বৃদ্ধি করতে পারে। ওবামা ইতোপূর্বে বলেন, শান্তি প্রচেষ্টা গ্রহণের পরই পরই তিনি এই মর্মে সিদ্ধান্ত নেবেন। ইতোমধ্যে ইইউ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও অর্থনৈতিক অবরোধের বিষয় বিবেচনা করবেন।
×