ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রিয়াল মাদ্রিদের শালকে পরীক্ষা আজ রাতে

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

রিয়াল মাদ্রিদের শালকে পরীক্ষা আজ রাতে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শিরোপা ধরে রাখার দৌড়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের গ্রুপ পর্বে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স প্রদর্শন করে রিয়াল মাদ্রিদ। ‘বি’ গ্রুপ থেকে রেকর্ড গড়ে ছয়টি ম্যাচই জিতে নেয় আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এরপর মাস দুয়েকেরও বেশি সময় বিরতির পর ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ফের মাঠে নামছে গ্যালাক্টিকোরা। আসরের শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচে আজ রাতে স্বাগতিক জার্মান ক্লাব শালকে জিরো ফোরের বিরুদ্ধে খেলবে অতিথি স্প্যানিশ পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদ। প্রি কোয়ার্টার ফাইনালের আরও একটি ম্যাচ হবে আজ। এতে লড়বে পর্তুগালের এফসি পোর্তো ও সুইজারল্যান্ডের এফসি বাসেল। এই চার দলের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ হবে আগামী ১০ মার্চ। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে দাপুটে অবস্থায় থাকলেও সেটা দুই মাসে আগে। এর পরের অনেক অধঃপতন হয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দলের। রেকর্ড জয় তো থেমেছেই। চলছে পারফর্মেন্সের উত্থান পতন। লা লিগায় এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে ৪-০ গোলে হারের পর ডিপোর্টিভোর বিরুদ্ধে ২-০ গোলের ঘাম ঝরানো জয় পেয়েছে রিয়াল। সবচেয়ে বড় কথা, দলের প্রধান তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ভুগছেন ফর্মহীনতায়। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর বেশ কয়েকটি ম্যাচে তাকে জার্সি দেখে চিনতে হয়েছে। পাশাপাশি ইনজুরি সমস্যা তো আছেই। আজকের ম্যাচে একঝাঁক তারকা রিয়ালের হয়ে খেলতে পারছেন না। এদের মধ্যে অন্যতম সার্জিও রামোস, লুকা মডরিচ, জেমস রড্রিগুয়েজ, সামি খেদিরা ও ফ্যাবিও কোয়েন্ট্রাও। পেপের খেলা নিয়েও সংশয় আছে। এমন অবস্থার মধ্যেই জার্মানিতে অবস্থান করছে রিয়াল। মজার বিষয় হচ্ছে, এই ম্যাচে রিয়ালের হয়ে স্বদেশী ক্লাবের বিরুদ্ধে খেলবেন জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী মিডফিফল্ডার টনি ক্রুস। সম্প্রতি রিয়াল ও রোনাল্ডো ধুঁকলেও চ্যাম্পিয়ন্স লীগের পারফর্মেন্স কিন্তু অপ্রতিরোধ্য। বুলগেরিয়ার ক্লাব লুডোগোরেটস রাজগার্ডের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ৪-০ গোলের জয় পায় রিয়াল। গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত ম্যাচটির আগে রিয়াল ও রোনাল্ডো দু’জনেরই সামনে হাতছানি দিচ্ছিল অনন্য রেকর্ড। নিরাশ হতে হয়নি কাউকেই। বুলগেরিয়ান ক্লাবকে হারিয়ে টানা জয়ের নতুন রেকর্ড গড়ে কার্লো আনচেলত্তির দল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়ালের টানা জয় হয় ১৯টি। এক্ষেত্রে তারা ছাড়িয়ে যায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনার টানা ১৮ জয়ের রেকর্ড। ২০০৫-০৬ মৌসুমে কিংবদন্তি ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডের হাত ধরে রেকর্ডটি গড়েছিল কাতালানরা। ম্যাচটির আগেই সেরা ষোলো খেলা নিশ্চিত করেছিল রিয়াল। এ কারণে আক্ষরিক অর্থেই ম্যাচটি ছিল রেকর্ডের পথে হাঁটা ও নকআউট পর্বের আগে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়া। টানা জয়ের রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি আরও একটি গৌরবময় রেকর্ড গড়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে প্রথম ক্লাব হিসেবে দুইবার গ্রুপ পর্বের ছয়টি ম্যাচেই জয় পায় রিয়াল। অর্থাৎ শতভাগ সাফল্য সঙ্গী করে নকআউট পর্বে উঠেছে স্পানিশ পরাশক্তিরা। এবারের আগে ২০১১-১২ মৌসুমেও গ্রুপ পর্বে সব ম্যাচ জিতেছিল গ্যালাক্টিকোরা। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে মাত্র পাঁচটি ক্লাবের আছে গ্রুপ পর্বে শতভাগ জয়ের রেকর্ড। আরও একটি দারুণ রেকর্ডের কাছাকাছি রিয়াল। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে আর মাত্র এক জয় পেলেই নিজেদের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সর্বাধিক জয়ের রেকর্ড গড়বে দলটি। এক্ষেত্রে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের টানা ১২ জয়ে ভাগ বসাবে স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। শেষ ষোলোর লড়াইয়েই এই সুযোগ পাচ্ছে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। যে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১০ মার্চ। ম্যানইউ ২০০৬-০৮ সাল পর্যন্ত ওল্ডট্রাফোর্ডে টানা ১২ ম্যাচ জিতে রেকর্ডটি নিজেদের করে রেখেছে। সর্বশেষ ম্যাচে রোনাল্ডো মাইলফলক পেরোন। পেনাল্টি থেকে এক গোল করে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার কৃতিত্ব দেখান তিনি। বর্তমানে রোনাল্ডোর গোলসংখ্যা ৭২টি। এক্ষেত্রে তিনি পেছনে ফেলেছেন ৭১ গোল করা রাউল গঞ্জালেসকে। ৭৪ গোল করে লীগের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা বার্সিলোনা জাদুকর লিওনেল মেসি। মৌসুমের শুরুতে কিন্তু সর্বোচ্চ গোলের দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন সি আর সেভেনই। কিন্তু বার্সা ডায়মন্ড হ্যাটট্রিক করে অনেকটা আকস্মিকভাবেই সবার উপরে চলে যান। তবে রাউলকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় এখন শীর্ষ গোলদাতার লড়াইটি দারুণভাবে জমে উঠেছে মেসি ও রোনাল্ডোর মধ্যে। নানাবিধ দুঃসময় পেরিয়ে আজ কি ঝলসে উঠতে পারবেন রোনাল্ডো? দেখা যাক কি হয়!
×