ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফিঞ্চের চোখে ‘অনন্য’ অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ফিঞ্চের চোখে ‘অনন্য’ অস্ট্রেলিয়া

জিএম মোস্তফা ॥ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ২০০৭ সালে একমাত্র দল হিসেবে টানা হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের রেকর্ডও গড়েছিলেন তারা। কিন্তু গত বিশ্বকাপে ভাল করতে পারেনি অসিরা। বিশ্বকাপের একাদশতম আসরে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজক অস্ট্রেলিয়া। শুরুটাও করেছে দুর্দান্ত। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়েছে জর্জ বেইলির দল। দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এ্যারন ফিঞ্চ। বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরির (১৩৫) মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। আর প্রথম ম্যাচের নায়ক এই এ্যারন ফিঞ্চই মনে করছেন এবারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলটি অনন্য। শুধু ব্যাটে কিংবা বোলিংয়ে নয়। সব দিক দিয়েই পরিপূর্ণ একটি দল অস্ট্রেলিয়া। এ বিষয়ে এ্যারন ফিঞ্চ বলেন, ‘আপনি যখন আমাদের দলটির দিকে লক্ষ্য করবেন তখন বলবেন আসলেই শক্তিশালী একটি দল। কেননা আমাদের দলটিতে এমন খেলোয়াড় রয়েছে যারা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন ভূমিকায় খেলতে পারে। আপনি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নারের দিকে তাকান। সে প্রতিটি বলেরই নিয়ন্ত্রক হতে পারে। সেই সঙ্গে জ্বলেও উঠতে পারে।’ ওপেনিংয়ের পর মিডলঅর্ডারও সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে সাজানো। এ বিষয়ে ফিঞ্চ বলেন, ‘আপনি যদি মিডলঅর্ডারের দিকে তাকান, দেখেন.. জর্জ বেইলি, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মিচ (মিচেল) মার্শ এবং ব্র্যাড হাডিন। তাদের প্রত্যেকেই বিভিন্ন ভূমিকায় খেলতে পারেন। আর এটা যে কোন দলের জন্যই সন্তুষ্টির খবর। যে কোন মুহূর্তেই দলের ওপর আপনি আত্মবিশ্বাসী হতে পারেন। কারণ দলের খেলোয়াড়কে আপনি যে কোন দৃশ্যেই দেখতে পারেন। প্রকৃতপক্ষে আমরা খুবই ভাল ক্রিকেট খেলছি। আর এ জন্যই আমাদের সামর্থ্য নিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। আপনি যদি গত কয়েক সপ্তাহে প্রত্যেকের রেকর্ড, সবার অবদানের কথা চিন্তা করেন। দেখবেন এই বিশ্বাসটা অনেক বেড়ে যাবে।’ শনিবার বিশ্বকাপের প্রথম দিনেই সেঞ্চুরির দেখা পান এ্যারন ফিঞ্চ। বিশ্বকাপে এটা তার প্রথম। আর ওয়ানডেতে ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকেই সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। তার আগে অভিষেক বিশ্বকাপেই শতরান করা অস্ট্রেলিয়ান হলেনÑ ট্রেভর চ্যাপেল, জিওফ মার্শ এবং এ্যান্ড্রু সাইমন্ডস। আর সামগ্রিকভাবে বিশ্বের ১৪তম ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকেই সেঞ্চুরির দেখা পান ফিঞ্চ। তার আগে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন ভারতের তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। ২০১১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে শতরানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এবারের বিশ্বকাপেও ভারতের বড় ভরসার নাম এই বিরাট কোহলি। রবিবার পাকিস্তানের বিপক্ষেও সেঞ্চুরি দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছেন কোহলি। নিজেদের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে শতকের দেখা পান ফিঞ্চ। তার আগে ঘরের মাঠের সমর্থকদের সামনে সেঞ্চুরি করেছিলেন ডেভিড বুন। ১৯৯২ বিশ্বকাপে এই মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শতরান করেছিলেন তিনি। মেলবোর্নে ইংলিশদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে গর্বিত এ্যারন ফিঞ্চও। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং নিজেদের সমর্থকদের সামনে তাও আবার হোম অব ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। এটা সত্যিই বিশেষ কিছু। এটা এমন কিছু যা আমার সঙ্গে দীর্ঘদিন থাকবে।’ অভিষেকে বিশ্বকাপেই সেঞ্চুরি করে দলকে বড় জয় উপহার দিয়েছেন ফিঞ্চ। তার পারফর্মেন্সে সন্তুষ্ট দলীয় অধিনায়ক জর্জ বেইলিও। এ বিষয়ে জর্জ বেইলি বলেন, ‘এ্যারন ফিঞ্চ মাঝে মাঝেই জ্বলে উঠেন। এ কারণেই তাকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠাই আমরা। আমরা সবসময়ই চাই সে বড় একটি ইনিংস খেলুক। দলকে জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখুক। আর সে তা দারুণভাবেই করতে সক্ষম হয়েছে।’ এ্যারন ফিঞ্চের পাশাপাশি মিচেল মার্শের ভূমিকাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আর অস্ট্রেলিয়ার প্রতিভাবান অধিনায়ক জর্জ বেইলি মার্শকেও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন।
×