ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এমআর মাহবুব

ফিরে দেখা ভাষা আন্দোলন

প্রকাশিত: ০৩:০৬, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ফিরে দেখা ভাষা আন্দোলন

প্রথম শহীদ মিনার শহীদ মিনার আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। শহীদ মিনার সকল গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের আশ্রয় ও উৎসস্থল হিসেবে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করে আসছে। শহীদ মিনার আমাদের জাতীয় জীবনের প্রতিটি হাসি-কান্নার ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী, আমাদের অস্তিত্বের প্রহরী। শহীদ মিনার আমাদের জাতীয় জীবনের প্রতীক । ভাষাশহীদের স্মৃতিতে অমর করে রাখার জন্যে শহীদ মিনার নির্মাণের কথা চিন্তা করা হয়। ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের এক রাতের শ্রমে নির্মিত হয় প্রথম শহীদ মিনার শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। শহীদ ‘স্মৃতিস্তম্ভ’ অর্থাৎ প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণের নির্মাণের পরিকল্পনা, স্থান নির্বাচন এবং প্রাথমিক উদ্যোগ পুরোটাই ঢাকা ছিল মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রদের সমন্বিত প্রয়াস। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের তৎকালীন ভিপি গোলাম মাওলা ও জিএম শরফুদ্দিনের অনুরোধে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নামের প্রথম শহীদ মিনারের নকশা অঙ্কন করেছিলেন ডাঃ বদরুল আলম। শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে, শেষ হয় ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে। প্রথম শহীদ মিনার তৈরির উপকরণ সংগ্রহ করা হয় মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে। কলেজ সম্প্রসারণের জন্য সংরক্ষিত ইট, বালু ব্যবহার করা হয় এবং সিমেন্ট সংগ্রহ করা হয় মোতাবেক ও পিয়ারু সর্দারের সিমেন্ট গুদাম থেকে। শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রথম উদ্বোধন করা হয় ২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ তারিখে। উদ্বোধন করেন শহীদ শফিউর রহমানের পিতা পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার নিবাসী অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা মাহবুব রহমান। ২৬ তারিখ আবারও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন একুশের হত্যাকা-ের প্রতিবাদে প্রথম আইন পরিষদ থেকে পদত্যাগকারী সদস্য, আজাদ সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দিন। প্রথম শহীদ মিনারে হাজারো মানুষ সমবেত হতে থাকে। এরপর থেকে শহীদ মিনার প্রতিবাদ ও প্রতিবারের ঘাঁটিতে পরিণত হয়। ২৬ তারিখ সরকার শহীদ মিনার ভেঙ্গে দেয়। বর্তমানে এখানে গড়ে উঠেছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ডিসপেনসারি।
×