ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফেনী-কক্সবাজারে র‌্যাবের ২ দল সক্রিয়

তথ্য চেয়ে হেলিকপ্টারে লিফলেট বিতরণ

প্রকাশিত: ০৪:৫৮, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

তথ্য চেয়ে হেলিকপ্টারে লিফলেট বিতরণ

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ‘মা কাঁদছে, জ্বলছে দেশ-ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ এমন স্লোগানকে কেন্দ্র করে নাশকতাপ্রবণ এলাকায় লিফলেট বিতরণের মধ্য দিয়ে পেট্রোলবোমাবাজদের নাশকতা ঠেকাতে র‌্যাবের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নাশকতাকারীদের ধরতে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জনসচেতনতামূলক লিফলেট দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় তথা যেসব এলাকা নাশকতাপ্রবণ ও অতীতে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে এমন এলাকাকে চিহ্নিত করেছে র‌্যাব। এ ধরনের অপরাধীদের ধরতে হেলিকপ্টার থেকে র‌্যাব-সেভেন ও হেড কোয়ার্টার্সের সদস্যরা এসব লিফলেট বিতরণ করেছেন বুধবার দুপুরে। এছাড়াও র‌্যাব সেভেনের আওতাধীন ফেনী থেকে চট্টগ্রাম শহর হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত সড়কগুলোতে টহল টিম বাড়ানো হয়েছে। প্রায় ২০টি মোবাইল টহল টিমে কাজ করছেন প্রায় ২শ’ সদস্য। র‌্যাব সেভেন সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক সহিংসতায় সারাদেশের নিরীহ জনসাধারণ নাশকতাকারীদের আগুনে পুড়ছে। ফলে র‌্যাব সদস্যরা অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছেন পুড়তে দেয়া হবে না আর কোন কিছু। সব কিছু রক্ষা করে নিরাপদ দেশ গড়ার লক্ষ্যে নাশকতাকারী, ককটেল নিক্ষেপকারী, পেট্রোলবোমা হামলাকারী এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করে যাচ্ছে র‌্যাব সদস্যরা। ফলে সচেতনতা বৃদ্ধি ও নাশকতাপূর্ণ এলাকা যেমন চট্টগ্রামের মীরসরাই, সীতাকু- ও হাটহাজারী, ফেনী, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজার এলাকায় নাশকতা কারীদের সম্পর্কে কোন তথ্য জানা থাকলে তা র‌্যাব সেভেনকে (মোবা. ০১৭৭৭৭১০৭০৩) নম্বরে অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী লিফলেট বিতরণের কাজ চালিয়েছে হেলিকপ্টারযোগে র‌্যাব সেভেনের সদস্যরা। এ ক্ষেত্রে প্রায় ৫ হাজার লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এর আগে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে র‌্যাব সেভেনের পক্ষ থেকে নাশকতা বন্ধে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও লিফলেটের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এ পর্যন্ত র‌্যাব সেভেন প্রায় পনেরো হাজার লিফলেট বিতরণ করেছে। র‌্যাব সেভেনের সহকারী পুলিশ সুপার ও সহকারী পরিচালক সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন, নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করা থেকে শুরু করে পাকড়াও করা পর্যন্ত সচেতনতা বৃদ্ধি করতেই লিফলেট বিতরণ কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও যারা মা, মাটি ও মানুষকে নাশকতার মুখে ঠেলে দিচ্ছে তাদের গ্রেফতারে র‌্যাব মহাসড়কসহ নগরী এমনকি কক্সবাজারেও নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করেছে। নাশকতাকারীদের ধরতে র‌্যাব সেভেনের পক্ষ থেকে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে গাড়িতে বোমা নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর ঘটনার ছবি মোবাইল অথবা ক্যামেরাতে ভিডিও চিত্র ধারণ করে র‌্যাবকে সরবরাহ করলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হবে। পেট্রোলবোমা নিক্ষেপকারী সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদানকারীকে ২০ হাজার টাকা, ককটেল নিক্ষেপকারীকে হাতেনাতে ধরিয়ে দিতে পারলে এমনকি টিভি চ্যানেলে দেখানো নাশকতাকারীদের গ্রেফতারে সাহায্য করলে ২৫ হাজার টাকা, ককটেল নিক্ষেপের পরিকল্পনাকারী ও সংগঠকদের তথ্য প্রদানে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপকারী ও পরিকল্পনাকারীদের হাতেনাতে ধরিয়ে দিতে পারলে একলাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও ফেনী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নাশকতাকারীদের ঠেকাতে র‌্যাবের পক্ষ থেকে ২০টি মোবাইল টিম ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এরমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৮টি টিম, চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় ৬টি, চট্টগ্রাম থেকে সাতকানিয়া পর্যন্ত ২টি, ফেনীতে ২টি এবং কক্সবাজার এলাকায় ২টি মোবাইল টিম কাজ করছে। প্রত্যেক টিমে সদস্য সংখ্যা ৮ থেকে ১০। এসব মোবাইল টিম পরিচালনা ও দিক নির্দেশনার দায়িত্বে রয়েছেন এএসপি মর্যাদার কর্মকর্তাগণ। পেট্রোল বোমায় নারী শিশু থেকে শুরু করে পথচারী এমনকি যাত্রী ও চালকরাও রেহাই পাচ্ছে না মরণ ছোবল থেকে।
×