ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দেশের ইমেজ নষ্টের জন্য এ জঙ্গীবাদ ॥ সংসদে তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৮:১৫, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

দেশের ইমেজ নষ্টের জন্য এ জঙ্গীবাদ ॥ সংসদে তোফায়েল

সংসদ রিপোর্টার ॥ বিএনপি-জামায়াত জোট টানা অযৌক্তিক হরতাল-অবরোধের নামে সহিংসতা-নাশকতা ও জঙ্গীবাদী তৎপরতা চালিয়েও দেশের রফতানিখাত বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশের ইমেজ ক্ষুণেœর চেষ্টা করছে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন দলটি। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ের হরতাল, অবরোধ ও সহিংসতার মধ্যেও তৈরি পোশাক পণ্য রফতানি ইতিবাচক। বর্তমানে তৈরি পোশাক সেক্টরে কোন শ্রম অসন্তোষ নেই। তিনি জানান, তৈরি পোশাক আমদানিকারকগণ কমমূল্যে মানসম্মত পণ্য আমদানি করে থাকেন। পোশাকের মান, প্রতিযোগিতামূলক শ্রমবাজার, আন্তর্জাতিক মানের কমপ্লায়েন্স এবং বিশ্ব বাজারে সংহত অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প অগ্রবর্তী অবস্থানে রয়েছে। তাছাড়া গত দেড় বছরে সরকার দেশী-বিদেশী স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতায় তৈরি পোশাক কারখানার নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক কল্যাণে প্রভূত উন্নয়ন সাধন করেছে। আশা করা যায়, ক্রেতাগণ বাংলাদেশ হতে বর্ধিত হারে তৈরি পোশাক ক্রয় করবে। তিনি জানান, অবরোধ-হরতালের নাশকতা, বিশৃঙ্খলা ও জঙ্গীবাদী তৎপরতা সৃষ্টি করেও রফতানি তেমনভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশ্বে ইমেজ ক্ষুণœ করার চেষ্টা করছে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন দলটি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩৩ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করি, আমরা সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারব। আবদুল মান্নানের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে চিনি শিল্পকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। গত মেয়াদে আমরা পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে কোন বেসরকারি সংস্থাকে চিনি আমদানি করতে দেইনি। সরকারী দলের এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শত চেষ্টা করেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডিউটি-কোটা ফ্রি মার্কেট এক্সেস পাওয়া যায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শুল্ক প্রদানকারী দেশ। ১৬ শতাংশের বেশি শুল্ক দিতে হয়। বিশ্বের অনেক দেশকেই কমশুল্ক দিয়ে পণ্য বাজারে প্রবেশ করতে দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু আমাদের বেশি দিতে হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে আমরা বাধাগ্রস্ত হব না। তিনি জানান, একক দেশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সবচেয়ে বড় বাজার। ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি পণ্য সেদেশে রফতানি করে থাকি। আমরা তৈরি পোশাক খাতে কোন জিএসপি সুবিধা পেতাম না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছা করলেও আমাদের জিএসপি সুবিধা দিতে পারবে না। কারণ সেদেশে জিএসপি সুবিধা প্রদানের মেয়াদ গত বছরই উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ জানান, কোন রাজনৈতিক দল দেশের শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হয় এমন কর্মসূচী প্রদান করতে পারে না। বিনা ইস্যুতে অব্যাহত হরতাল, অবরোধ ও সহিংসতা কখনও কাক্সিক্ষত নয় এবং তা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য বাধা হিসেবে কাজ করে। বিদেশে সাড়ে ৫ হাজার বাংলাদেশী গ্রেফতার ॥ বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশী নাগরিকদের গ্রেফতার করেছে সেদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ৫৭৭ জন বাংলাদেশী নাগরিককে তারা গ্রেফতার করেছে। সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। মন্ত্রীর দেয়া তথ্যানুযায়ী গ্রেফতারকৃত বাংলাদেশীদের মধ্যে রয়েছে- মালয়েশিয়ায় ২ হাজার ১৩১ জন, সৌদি আরবে ৪৬৭ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১ হাজার ৫১ জন, কুয়েতে ৭৫ জন, বাহারাইনে ১৩ জন, ইরাকে ১২০ জন, দক্ষিণ কোরিয়ার ৫ জন, তুরস্কে ১৪ জন, লেবাননে ১০৪ জন, জাপানে ১৩ জন, মালদ্বীপে ৪০ জন, ওমানে ৫০১ জন, মিসরে ২০ জন, ইরানে ১৭ জন এবং বুলগেরিয়ায় ৬ জন। আটক হওয়া এসব কর্মীদের আইনগত সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে মুক্ত করে দেশে ফেরত আনা হচ্ছে। এছাড়া পাসপোর্ট জটিলতা সংক্রান্ত কর্মীদের আউট পাস প্রদানের মাধ্যমে দেশে ফেরত আনা হচ্ছে।
×