ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

টার্গেট হতদরিদ্র তরুণ

চট্টগ্রামে নাশকতাকারী সংগ্রহে এজেন্ট নিয়োগ করছে বিএনপি

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

চট্টগ্রামে নাশকতাকারী সংগ্রহে এজেন্ট নিয়োগ করছে বিএনপি

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ দেশব্যাপী জীবনের তাগিদে রাস্তায় নেমে আসা সাধারণ মানুষের ওপর রাজনীতির আক্রোশ তুলে নেয়ার চেষ্টায় চলছে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপে জীবনহানির ঘটনা। নিরীহ মানুষদের পেট্রোলবোমায় জ্বালিয়ে দেয়ার নাশকতা অব্যাহত রাখতে কাজ করে যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। নাশকতা অব্যাহত রাখতে এজেন্ট নিয়োগ করছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির এক নেতা। তার নাম নবাব খান। সিএমপির বাকলিয়া থানা এলাকায় তার আবাস। হতদরিদ্র অথবা নি¤œআয়ের তরুণশ্রেণীকে বাগে আনতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১৯নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা নবাব খান এ অপতৎপরতা চালাচ্ছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া আসামিদের ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে তারা এ বিএনপি নেতার কথা স্বীকার করেছেন। তবে পুলিশের একশ্রেণীর জামায়াত-বিএনপি-ঘেঁষা সোর্সদের কারণে তাকে গ্রেফতার অভিযান ব্যর্থ হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, মাত্র ৫শ’ থেকে হাজার টাকায় পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ, মানুষসহ গাড়ি জ্বালিয়ে দিতে পারলে এ অর্থের পরিমাণ দ্বিগুণ হবে এমন প্রলোভন দেখানো হচ্ছে হতদরিদ্র ও খেটে খাওয়া তরুণ সমাজকে। ককটেল ও পেট্রোলবোমাসহ দাহ্য পদার্থ বহনে ১শ’ থেকে ৩শ’ টাকা প্রদানের অঙ্গীকার দিয়ে নিক্ষেপকারীদের জড়ো করা হচ্ছে। তাদের হাতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে নাশকতার দ্রব্যসমূহ। অভাবগ্রস্ত তরুণ সমাজকে বাগে আনতে বিএনপি নেতা নবাব খানের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল বাকলিয়ার চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ এলাকায় সদস্য কালেকশনে নেমেছে। তাদের মাধ্যমেই নাশকতা চালিয়ে আসছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। জানা গেছে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি কোতোয়ালি থানাধীন আলমাস সিনেমা হলের মোড় এলাকায় দুটি রঙের কৌটা থেকে ১৮টি ককটেল উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় মজিবুর রহমান নামের একজনকে গ্রেফতার করে। পেশায় সে সিএনজি চালক। এর আগে বাকলিয়া থানার ইছাকের পোল এলাকায় গত ১৮ জানুয়ারি সোহেল ও কবির নামের দুজনকে পেট্রোলবোমা, পেট্রোলভর্তি বোতল এবং গ্যাসলাইটসহ গ্রেফতার করে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ বিএনপি নেতা নবাবখানের এজেন্ট জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করে ১৯ জানুয়ারি। ৯ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সৈয়দ মুশফিকুল ইসলামের আদালতে সোহেল, কবির ও মজিবুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে ১৬৪ ধারায়। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে সোহেল ও কবির বিএনপির নবাব খানের এজেন্টদের কথা স্বীকার করেছে। নবাব খানের নেতৃত্বে থানা সফিক, ফারুক, জাহাঙ্গীর ও পেটকাটা বাবুর মাধ্যমে হতদরিদ্র শ্রেণীর শিশু ও তরুণদের জোগাড় করা হচ্ছে দাহ্য পদার্থ বহন ও নিক্ষেপের জন্য। সোহেল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে বলেছে, সে নগরীর বৌবাজার এলাকায় ঝুট ব্যবসা করে। বিএনপি নেতা নবাব খানের ডানহাত হিসেবে খ্যাত ফারুক তাকে ফোন করে চর চাক্তাই এলাকায় নিয়ে যায়। এ সময় সে তার বন্ধু কবিরকেও সঙ্গে নেয়। সেখানকার একটি স্কুল মাঠে ফারুক তাদের যেতে বলে। সেখানে যাওয়ার পর সফিক, জাহাঙ্গীর, বাবু ও ফিরোজসহ ৭-৮ জনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। এমনকি নাশকতার কাজে যদি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেল থেকে ছাড়াতেও নবাবখান সাহায্য করবে বলে আশ্বাস দেয়। এ ব্যাপারে বাকলিয়া থানার ওসি জানিয়েছেন, জনসচেতনতা বাড়াতে ঐ এলাকায় বাড়িবাড়ি পুলিশ যাচ্ছে। সচেতন করতে পারলে এ ধরনের অপরাধীদের আইনের হাতে সোপর্দ করা কঠিন নয়। সোহেল ও কবিরকে গ্রেফতারের পর বিএনপি নেতা নবাব খানসহ আরও অনেকের নাম জানতে পেরেছে পুলিশ।
×