ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বার্ষিক আয় এক লাখ টাকার নিচে হলে সন্তানরা এ সুবিধা পাবে ;###;লক্ষ্য গরিব পরিবারের শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া রোধ

উচ্চ মাধ্যমিকেও চালু হচ্ছে উপবৃত্তি

প্রকাশিত: ০৫:১০, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

উচ্চ মাধ্যমিকেও চালু হচ্ছে উপবৃত্তি

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ পিতা বা অভিভাবকের বার্ষিক আয় ১ লাখ টাকার নিচে হলে সন্তানরা শিক্ষা চালানোর জন্য পাবে আর্থিক সহায়তা। এ জন্য চালু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক উপবৃত্তি প্রকল্প। শুরুতে এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১২ কোটি ৭৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ৪০ শতাংশ ছাত্রী এবং প্রথমবারের মতো ১০ শতাংশ ছাত্র আসছে উপবৃত্তির আওতায়। ফলে গরিব পরিবার হতে আগত শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া এবারই প্রথম প্রথাগত ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে অনলাইন পদ্ধতির মাধ্যমে (মোবাইল, বিকাশ বা অন্য কোন সহজ পদ্ধতি) সরাসরি শিক্ষার্থীদের কাছে অর্থ পৌঁছানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে। অনুমোদন পেলে ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শেষ করবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য হুমায়ুন খালিদ কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে জানান, এ প্রকল্পের মাধ্যমে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা অর্জন সহজ হবে। নারীশিক্ষা অর্জনে সহায়ক হবে। শিক্ষার্থী ভর্তির হার বৃদ্ধি পাবে। তাই এ প্রকল্পটি জাতীয় শিক্ষানীতি ও চলমান ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এসব বিবেচনায় প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নারীশিক্ষাকে উৎসাহিত করা, ছেলে-মেয়ের মধ্যে শিক্ষার বৈষম্য দূরীকরণ, মেয়েদের শিক্ষার হার বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, পরীক্ষার পাসের হার বাড়ানোসহ বিভিন্ন উদ্দেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় দেশব্যাপী ষষ্ঠ থেকে স্নাতক পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি কার্যক্রম চালু করা হয়। বর্তমানে সারাদেশে ৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে ষষ্ঠ থেকে স্নাতক (পাস) পর্যন্ত উপবৃত্তি চালু রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। তাছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান (চতুর্থ পর্যায়) প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে এবং স্নাতক পাস ও সমমানের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান শীর্ষক একটি প্রকল্পের মাধ্যমে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি কার্যক্রম চালু রয়েছে। উপবৃত্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় কার্যক্রম হচ্ছে, এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০ একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী পর্যায়ে ৪০ শতাংশ গরীব ছাত্রী ও ১০ শতাংশ ছাত্রকে টিউশন ফি ও পরীক্ষার ফি প্রদান, বই ক্রয় এবং আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতে অর্থ প্রদান করা হবে। এ প্রকল্পে যুক্ত হয়ে উপবৃত্তি প্রাপ্তির শর্তগুলো হচ্ছে, পিতামাতা বা অভিভাবকের জমির পরিমাণ ৭৫ ডেসিমেলের নিচে হবে, পিতামাতা বা অভিভাবকের বার্ষিক আয় ১ লাখ টাকার নিচে, দুস্থ ও অসহায় গোষ্ঠী (যেমন এতিম ও অনাথ) অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, উপার্জনে অসামর্থ্য (যেমন পঙ্গু, অন্ধ, বোবা ইত্যাদি) পিতামাতার সন্তান। নদী ভাঙ্গন কবলিত-বাস্তুহারা অসচ্ছল পরিবারের সন্তান, নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী (যেমন রিক্সাচালক, দিনমজুর ইত্যাদি), সকল চরম প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী এবং শিক্ষা বর্ষে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে।
×