ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে দর্শকের ঢল

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে দর্শকের ঢল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। আর ফুটবলের প্রাণ কী বলুন তো? দর্শক। একটি খেলা দেখতে গ্যালারিতে দর্শকদের ঢল নামবে, টিকেট কালোবাজারি হবে, লাইন ধরে গ্যালারিতে ঢুকতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি হবে, হুড়োহুড়ি হবে, চেঁচামেচি হবে, পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করবে ... তবেই না হবে ফুটবল দেখার আসল মজা। বহুবছর ধরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এমনটি দেখা যায় না। অথচ একসময় আন্তর্জাতিক ম্যাচ তো বটেই, ক্লাব পর্যায়েই হরহামেশা দেখা যেত এই দৃশ্য। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় ফুটবলের জোয়ারে পরিলক্ষিত হয় ভাটা। দর্শকরা হয়ে পড়েন স্টেডিয়ামবিমুখ। অবস্থা এমনই দাঁড়ায় যে, বিনা টাকায় খেলা দেখার ঘোষণা দিয়েও দর্শক আনা যায় না মাঠে! এর কারণ একটাইÑ জাতীয় দলের নিম্নগামী পারফর্মেন্স। এমনিতেই তারা খুব বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়। যাও খেলে অল্পবিস্তর, সেগুলোতেও হতাশাজনক ফল। তবে ধীরে ধীরে সে সমস্যা কাটিয়ে উঠছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। ২০১৪ সালে বেশকিছু আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে তারা। কিছু জয়ও পেয়েছে। চলমান ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ’-এ দুর্দান্ত খেলে সেমিফাইনালে নাম লিখিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ফলে ফুটবলপ্রেমী-দর্শকরা আবারও মজেছেন বাংলাদেশের ফুটবল দল নিয়ে। এদেশের ফুটবলকে ভালবাসছেন নতুন করে। বহুদিন পর শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আবারও দেখা গেল নব্বই দশকের মতো সেই দর্শক জোয়ার এবং টিকেট কালোবাজারির সুখকর দৃশ্য। কথা হয় বেশ কজন তরুণ ফুটবলপ্রেমীর সঙ্গে। এদেরই একজন আবু সালেহ নাইম। এসেছেন সুদূর চাঁদপুর থেকে। ক্লান্তিকর চার ঘণ্টা বাস ভ্রমণ করে ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে ঢাকায় এসে পৌঁছান। এসেছেন একাই। ঢাকা থেকেও তার কিছু বন্ধু আসবে ম্যাচ দেখতে। নাইম বলেন, ‘ফুটবলের প্রতি প্রচ- ভালবাসার কারণেই এত কষ্ট করে ঢাকায় এসেছি। জাতীয় দলকে সবসময়ই সমর্থন করি। তাদের সাফল্য কামনা করি।’ নাইমের প্রিয় খেলোয়াড় বাংলাদেশ দলের ফরোয়ার্ড সোহেল রানা। সে নিজেও ভাল ফুটবল খেলে বলে জানায়। এই প্রথমবার সে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফুটবল ম্যাচ দেখতে এলো। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মাঠ, গ্যালারি, পরিবেশÑ সবকিছু দেখে সে অসম্ভব বিমুগ্ধ। ‘ভবিষ্যতে আবারও বাংলাদেশের খেলা দেখতে আসতে চাই এখানে।’ নাইমের আশাবাদ। যশোরের মিরাজ, মাগুরার হাসিব, চাঁদপুরের রাজীব। এরা সবাই বাসে পেট্রোলবোমা হামলা হতে পারে জেনেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় এসেছেন। উদ্দেশ্য একটাইÑ লাল-সবুজ বাহিনীকে অকুণ্ঠ সমর্থন জোগানো। তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ দল জিতলেও তাদের সঙ্গে আছি। হারলেও সঙ্গে থাকব।’ তাদের স্বপ্নÑ বাংলাদেশ একসময় ফিফা বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলবে। যদিও তারা জানেন, এ স্বপ্ন পূরণ করা অনেক কঠিন। তারপরও তারা আশায় বুক বাঁধতে চান। তারা চান ক্রিকেটের মতো বাংলাদেশের ফুটবলও আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছে যাক।
×