ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মানুষ নিরাপত্তা চায়, সর্বোচ্চ শক্তিশালী সরকার চায়

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

মানুষ নিরাপত্তা চায়, সর্বোচ্চ শক্তিশালী সরকার চায়

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তখন জ্যোতি বসু। মমতা ব্যানার্জী কর্মসূচী দেন- তিনি জ্যোতি বসুকে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে ঢুকতে দেবেন না। রাইটার্স বিল্ডিংয়ের সামনে হাজার হাজার মানুষ নিয়ে বসে পড়েন। কেউবা শুয়ে পড়েন। কেউ মারমুখী বিক্ষোভ করতে থাকেন। তাঁরা কোনমতেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর গাড়ি ঢুকতে দেবেন না। জ্যোতি বসু অনড়, তিনি গাড়ি নিয়ে রওনা দিয়েছেন। তিনি ওই পথেই ঢুকবেন। এ সময়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশপ্রধান এসে সানুনয় অনুরোধ করেন জ্যোতি বসুকে, স্যার আপনি পেছনের দরজা দিয়ে গাড়ি নিয়ে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে যান। মৃদুভাষী জ্যোতি বসু তেজস্বী স্বরে বলেন, না, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সদর দরজা দিয়ে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে ঢুকবে। তুমি পথ পরিষ্কার করো। লাঠিচার্জ করে পারো আর গুলি চালিয়ে পারো, আমি পৌঁছানোর আগেই তুমি পথ পরিষ্কার করো। সেদিন ওই অবস্থান বিক্ষোভের ওপর গুলি চালানো হয়। দুই জন মারা যায়। জ্যোতি বসু তাঁর গাড়ি নিয়ে সদর দরজা দিয়ে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে ঢোকেন। তার এক বছর পরেই নির্বাচন ছিল। সে নির্বাচনেও যথারীতি বিপুল ভোটে তাঁর জোট জয়ী হয় ও পরবর্তী সরকার গঠন করেন জ্যোতি বসু। জ্যোতি বসু যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন বামফ্রন্ট সরকার পশ্চিমবঙ্গে এমন শক্তিশালী সরকার চালিয়ে গেছেন। জ্যোতি বসুর মৃত্যুর পরে পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকার ক্রমেই কেন যেন দুর্বল সরকারের চরিত্র প্রকাশ করতে থাকে। মমতা ব্যানার্জী যখন তাঁর লোকজন নিয়ে দিনের পর দিন সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামে মানুষ হত্যা করছে। নন্দীগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে রাখছে রাস্তা কেটে। মাওবাদীদের সঙ্গে মিলে নানান স্থলে সন্ত্রাস করাচ্ছেন। এমনকি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের গাড়ি বহরেও বোমা ফাটছে। এ সময়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তাঁর বিরুদ্ধে কোন কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তিনি মনে করছেন, মমতার এই সন্ত্রাসে মানুষ বিরক্ত হবে এবং মমতা আরও বেশি অজনপ্রিয় হবে। তাঁর এই নীতির ফলে এক পর্যায়ে নন্দীগ্রামে পুলিশ হত্যা শুরু করে তৃণমূল ও আরও কিছু জঙ্গী সংগঠন মিলে- যাদের অবস্থান এখন বর্ধমানে, মুর্শিদাবাদে পাওয়া যাচ্ছে। নন্দীগ্রাম নিয়ে যখন চরম অবস্থানে চলে যান মমতা, দিনের পর দিন মানুষ হত্যা ও পুলিশ হত্যা চলতে থাকে তখনও খুব কঠোর এ্যাকশনে যাননি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের এই অবস্থান দেখে এক পর্যায়ে মনমোহন সিংয়ের মতো প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেন, আপনি কঠোর এ্যাকশনে যান। গুলি চালিয়ে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেন। প্রয়োজনে সেন্ট্রাল ফোর্সের সহায়তা নিন। দেশে এ অরাজকতা চলতে পারে না। মনমোহন সিংয়ের সে পরামর্শ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য শোনেননি। যার ফলে টাটা তাদের ন্যানোর কারখানা নন্দীগ্রাম থেকে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তারপরের ইতিহাস তো সকলের জানা। টাটাকে মুহূর্তের মধ্যে ডেকে নেন নরেন্দ্র মোদি। ব্যবসা-বাণিজ্যের নিরাপত্তা দেয়ার সুনামের কারণেই গোটা ভারত পরবর্তীতে মোদিকে গ্রহণ করে। মোদি আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে মানুষের নিরাপত্তা দিতে, ব্যবসা-বাণিজ্যের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ না হোক কঠোর না হওয়ার ফলে মানুষ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও তাঁর দলকে ভোটের মাধ্যমে ‘না’ বলে এবং কোন বিকল্প না থাকায় যারা সন্ত্রাস করেছিল তাদেরকেই ক্ষমতায় বসায়। পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ও জ্যোতি বসুর দুটো সিদ্ধান্ত ও তার ফল পাশাপাশি এনে বিশ্লেষণ করলে এটা স্পষ্ট বোঝা যায়, মানুষ সব সময়ে শক্তিশালী সরকার চায়। যে সরকার তার সব কিছুর নিরাপত্তা দিতে পারবে সেই সরকারই মানুষ পছন্দ করে। মানুষ কখনই দুর্বল বা কমজোরি সরকার পছন্দ করে না। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে কিন্তু প্রশ্ন একটাই- সরকার সর্বোচ্চ কঠোর হবে, না সরকার ধীর গতিতে পরিস্থিতির উন্নতির পথে যাবে? সরকার কোন্ পথে যাচ্ছে সেটা কোন সাংবাদিক কেন, সরকারী দলের অনেক নেতারও জানার কোন উপায় নেই। বিষয়টি অনেক উচ্চ পর্যায়ের। তবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তো নন, জ্যোতি বসুর থেকেও শেখ হাসিনা অনেক বেশি শক্তিশালী নেতা। ব্রিটিশ চলে যাওয়ার পরে এ উপমহাদেশে এ যাবত দুই জন শক্তিশালী সরকারপ্রধান দেখা গেছে। একজন মিসেস ইন্দিরা গান্ধী, অন্যজন শেখ হাসিনা। ভবিষ্যত ইতিহাস বিচার করবে কে বেশি শক্তিশালী সরকারপ্রধান। কারণ শেখ হাসিনা এখনও ম্যান ইন দি মেকিং। তার চূড়ান্ত বিচারের সময় এখনও আসেনি। তবে ইতোমধ্যেই তিনি ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তুলনীয়। তিনি আরো এগিয়ে যাবেন। তাই শেখ হাসিনা যে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পথ নেবেন না এ বিষয়ে অনেকটা নিশ্চিত বলা যায়। কিন্তু বাংলাদেশে ইতোমধ্যে কী ঘটছে এবং ঘটতে যাচ্ছে? এই লেখা যখন লিখছি তখন পর্যন্ত খালেদার নির্দেশে ৫৩ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। আইএস গত মঙ্গলবার এক বন্দীকে পুড়িয়ে হত্যার ভিডিও প্রকাশ করেছে। এই ভিডিও প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অন্তত আধ ঘণ্টা ধরে বিবিসি, সিএনএন ছাড়া ইউরোপের বিভিন্ন অন লাইন মিডিয়া লক্ষ্য করি। কী তীব্র প্রতিবাদ সর্বত্র! অথচ বাংলাদেশে এ যাবত খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জঙ্গীরা ৫৩ নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে- এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় কিন্তু কোন তোলপাড় নেই। কেন বাংলাদেশে জঙ্গীদের এই বর্বরতা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় গুরুত্ব পাচ্ছে না, এ ব্যর্থতা সরকারকে খুঁজতে হবে। ফরেন মিনিস্ট্রি ও ইনফরমেশন মিনিস্ট্রি এ দায় এড়াতে পারে না। তাদের মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ এক জটিল সময় পার করছে। এখন স্বাভাবিক নিয়মে কাজ করার সময় নয়। এখন যুদ্ধাবস্থার মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে। অন্যদিকে সরকার যে কঠোরতার পথ নিয়েছে মানুষ তাতে সন্তুষ্ট নয়। কারণ, প্রতিটি পরিবার এখন উদ্বিগ্ন, তাদের পরিবার থেকে যে রাস্তায় যাচ্ছে সে নিরাপদে ফিরবে না পেট্রোলবোমায় পুড়ে মরবে এ চিন্তা প্রতি মুহূর্তে বিদীর্ণ করছে মানুষকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে দেখা যাচ্ছে বন্ধু বা স্বজনদেরকে জানিয়ে দিচ্ছে, আমি নিরাপদে ঘরে ফিরেছি। অন্যদিকে ব্যবসা-বাণিজ্য-শিল্প যে নানানভাবে বিঘœ হচ্ছে এই সত্য অস্বীকার করারও কোন কারণ নেই। এছাড়া এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে যা ঘটছে তা সবাই দেখছেন। এ নিয়ে লেখার কী থাকতে পারে! নিন্দার সব ভাষা শেষ হয়ে যায় এ ঘটনার পর। তবে আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী এ নিয়ে যে ভাষায় যার নির্দেশে পেট্রোলবোমায় মানুষ পুড়িয়ে মারা হচ্ছে সেই খালেদার প্রতি যে অনুনয় বিনয় করছেন এটা শুধু দৃষ্টিকটু নয়, সরকারের দুর্বলতারও প্রকাশ। আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর মনে রাখা দরকার, উনি হারমোনিয়াম পার্টি থেকে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল ও পরিচালনা করতে পারে এমন একটি দলে যোগ দিয়েছেন। তাই যে পেট্রোল মারছে তার প্রতি ফুল ছোড়ার ভাষা ব্যবহারের সময় এখন নয়। তিনি অনেক ভালো মানুষ। কিন্তু তাদের অনেক ভালোমানুষি এ দেশের অনেক ক্ষতি করেছে। ১৫ দলীয় জোটে থেকে ‘দুই নেত্রী’ এই কথা বলা শুরু করেন কিন্তু তারই নেতা সাইফুদ্দিন মানিক। একজন জঙ্গী নেত্রী ও শেখ হাসিনাকে এক পাল্লায় তুলে এ দেশে কত বড় ক্ষতি হয়েছে তা ভবিষ্যতের ইতিহাস আরো স্পষ্ট করবে। যাহোক, সরকার যদি সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের ভাষা বুঝতে পারে তাহলে সরকার বুঝবে, মানুষ এখন সরকারের কাছে নিরাপত্তা চায়। মানুষ ওই তথাকথিত মিডিয়ার স্বাধীনতার নামে বদিউল আলম মজুমদাররা কৌশলে পেট্রোলবোমায় মানুষ হত্যাকে রাজনীতি বলবে এই সব শয়তানি শুনতে চায় না। গণতন্ত্রে এবং রাষ্ট্রে এই তথাকথিত মিডিয়ার স্বাধীনতার থেকে একজন মানুষের জীবন রক্ষার দায় সরকারের জন্যে অনেক বেশি। যারা এভাবে নিরীহ মানুষ হত্যা করছে তাদের জন্যে মানবাধিকার পৃথিবীর কোথাও দেখানো হয় না। দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনই রাষ্ট্রের ধর্ম। শিষ্টকে পালন করার জন্যে যা যা করার দরকার সেটাই মানবাধিকার রক্ষা। আইনমন্ত্রী কয়েকদিন হলো বলছেন, যারা পেট্রোলবোমা মারছে তাদের জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন করা হবে। এর পরে দশদিনের বেশি সংসদ চলছে। কেন দেশের মানুষ এখনও সে আইন পাচ্ছে না? কেন একজন পেট্রোলবোমা ছুড়তে আসা জঙ্গীকে ধরে ভ্রাম্যমাণ আদালত এক বছরের কারাদণ্ড দেবে? সাধারণ আইনেও তো হত্যার চেষ্টার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন। কেন এই ছেলেখেলা চলছে? তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিলেন, এটা দমন করার জন্যে যা যা করার প্রয়োজন তাই করুন। দায় নেবেন তিনি। তারপরেও অবস্থার উন্নতির সেই গতি নেই কেন? দেশজুড়ে এটা ঘটছে না, ঘটছে কয়েকটি জেলায়। এই জেলাগুলো ছাড়া আর কোথায় কোথায় সর্ষের ভেতর ভূত আছে সেটা সরকারের প্রতিটি পর্যায় থেকে যাচাই করতে হবে। নাশকতার অভিযোগে একটি জেলায় জামায়াতের প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারিকে গ্রেফতার করার পরে তাদের ছাড়ানোর জন্যে দুই আওয়ামী লীগ নেতা সারাদিন থানায় তদ্বির করে। পত্রিকায় সে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এরপরে ওই আওয়ামী লীগ নেতাদের গ্রেফতার করা হয়নি কেন? এসব সাধারণ মানুষেরই প্রশ্ন। এ প্রশ্নগুলো সরকারকে এখনই মাথায় নিতে হবে। সরকারের সামনে এ মুহূর্তে মানুষের নিরাপত্তা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের নিরাপত্তার জন্যে যা যা করা দরকার তাই ছাড়া অন্য কোন কিছুর গুরুত্ব দেয়ার সুযোগ নেই। আর কাদের গুরুত্ব দেবে সরকার! ড. কামাল হোসেন, বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মান্না- এদেরকে! যাঁরা সারাদিন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন আবার কোকোর মতো স্বীকৃত, সাজাপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজের শোক বইতে স্বাক্ষর করেন তাঁরা কী বললেন এটা দেশের মানুষ শুনতে চায় না। কারণ, দেশের মানুষ জানে বাদলের খুনী মোস্তফা মহসিন মন্টুকে নিয়ে ড. কামাল রাজনৈতিক দল করেন। দেশের মানুষ জানে মান্না ’৭১ এর আগে কোন ছাত্রসংঘ করতেন। তারা জানে তাঁর ইসলামী ব্যাংকের প্রজেক্টের কথা। আর বদরুদ্দোজা চৌধুরী যখন গণতন্ত্রের কথা বলেন, ওনার কী জিয়াউর রহমানের কালো চশমার কথা মনে পড়ে না? তাই এ ধরনের ব্যক্তিরা কে কী বলছে এটা বর্তমান সরকার বিশেষ করে শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্বের জন্যে বড় কথা নয়। তাঁর দায়িত্ব দেশের মানুষের নিরাপত্তা দেয়া। দেশের মানুষ জানে তাঁর আন্তরিকতার ও সাহসিকতার কোন অভাব নেই। কিন্তু তাঁর দল সব জায়গায় ঠিকমতো কাজ করছে না। তাঁর দল অতন্দ্র প্রহরী হয়ে দেশের মানুষকে পাহারা দিচ্ছে না। শ্রদ্ধেয় গাফ্ফার চৌধুরী আরও কঠোরভাবে সত্য কথা লিখেছেন, তাঁর দলের কেন্দ্র থেকে জেলা পর্যায়ে অনেক নেতা জামায়াত-বিএনপির টাকার কাছে আপোস করছে, না হয় তাদের সঙ্গে তাদের ছেলেমেয়েদের ব্যবসা আছে। এ কারণে শেখ হাসিনার আন্তরিকতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু এসব কিছু অতিক্রম করে অবিলম্বে মানুষের নিরাপত্তা দিতে শেখ হাসিনার সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে। মানুষ সেই কঠোর সরকারের কাজ দেখতে চায়। অন্যদিকে সামাজিক শক্তি ও তরুণ প্রজন্ম ইতোমধ্যে এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। কিন্তু তারা অনেক বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে। তাদের সবাইকে অবিলম্বে একটি পতাকাতলে আসতে হবে। তাদের সম্মুখভাগের সেনানী হিসেবে নামতে হবে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোকে। তাদের আর এক মুহূর্ত বসে থাকার সময় নেই। এর ভেতর কেউ যদি নামতে না চায় তারা যদি এখনও খালেদাকে জঙ্গী নেত্রী হিসেবে চিহ্নিত করতে ভুল করে, তাহলে ভবিষ্যতের ইতিহাসে তারা হারিয়ে যাবে। তাদের নিয়ে মাথাব্যথার কোন কারণ নেই। কয়েকজনের জন্যে সমগ্র তরুণ সমাজ বসে থাকলে ভুল করবে। এই কয়দিনে দেশের সঙ্কটের চরিত্র তাদের বোঝা উচিত। তাদের বোঝা উচিত বাংলাদেশ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। পৃথিবীর সকল মুসলিম অধ্যুষিত দেশকে সন্ত্রাসকবলিত দেশ করার একটি চেষ্টা চলছে। ‘মুসলিম’ এবং ‘সন্ত্রাসী’ সমার্থক করার চেষ্টা চলছে। কারা এ কাজ করছে তা সকলে জানে। তাদের এই উপমহাদেশের সন্ত্রাস পরিচালনার মুখ পাকিস্তান তাও সকলের জানা। সেই পাকিস্তানের বাংলাদেশস্থ দূতাবাসে বসে এ কাজ করছে সে ঘটনাও পত্র-পত্রিকায় এসে গেছে। এর পরে যদি দেশের সচেতন নাগরিক ও তরুণ সমাজ এই পেট্রোলবোমা হামলাকারীদের ও তাদের নেত্রী কোথাকার নেত্রী সেটা বুঝতে ভুল করেন তাহলে তার জন্যে জাতিকে অনেক বড় মাসুল দিতে হবে। ১৯৭১-এ এরা ও এদের পূর্বপুরুষ ছিল রাজাকার আলবদর। এখন তারা পাকিস্তান ও পাকিস্তানী জঙ্গীমদদদাতাদের পরিচালিত জঙ্গী। এই জঙ্গীর উত্থান খালেদার নেতৃত্বে বাংলাদেশে তারা ঘটাতে পেরেছে। শুরুতে এদের প্রতিরোধ ও ধ্বংস করতে না পারলে এরা আল-কায়েদা, বোকো হারাম বা আইএস’র মত হবে। আর এই অন্ধকার টানেলে যদি বাংলাদেশকে একবার ঠেলে দিতে পারে তাহলে ভবিষ্যত খুবই জটিল। কারণ এই টানেলের যেমন শেষ নেই তেমনি এর শেষে কোন আলোও নেই। এ নিয়ে ভুল করার, বিভ্রান্ত হবার সময় আর নেই। সকল বিভেদ ভুলে সারাদেশের শহীদ মিনারকে ঘিরে জেগে উঠতে হবে তরুণ সমাজ ও সচেতন নাগরিকদের। এ মাস শহীদ মিনারের মাস, সবাইকে জেগে উঠতে হবে শহীদ মিনার ঘিরে। সারাদেশকে করতে হবে শহীদ মিনারের বেদীতলের মত শক্তিশালী। [email protected]
×