ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বর্বরতাকে অতিক্রম করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে উঠবেই ॥ ইনু

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বর্বরতাকে অতিক্রম করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে উঠবেই ॥ ইনু

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিদ্যুত সরবরাহ ও দেশকে ডিজিটালাইজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুু। এ সময় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, উনি (খালেদা জিয়া) দেশকে অন্ধকারে রেখে গিয়েছিলেন। আর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে বলেছিলেন ‘হারিকেন দিয়ে কম্পিউটার চালাবেন।’ খালেদা জিয়ার সেই উক্তি আজ ভুল প্রমাণিত হয়েছে। আমরা বিদ্যুত দিয়েছি, কম্পিউটারও দিয়েছি। সোমবার তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। আয়োজনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বেসিসের সভাপতি শামীম আহসান। তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া এমন হীন কাজ নেই যে তিনি করছেন না। তিনি দেশে আজ নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা চালাচ্ছেন। তার এই নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতাকে অতিক্রম করে গণতন্ত্রের পথে ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যাত্রা অব্যাহত থাকবে। তার এই নিষ্ঠুরতা কঠিনভাবে মোকাবেলা করব। লিখিত বক্তব্যে ইনু বলেন, আপনারা অনেকে ইতোমধ্যেই জেনে থাকবেন, আগামী ৯-১২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫।’ অন্যবারের মতো এবারও এই সম্মেলনের উদ্বোধন করতে ভিশন ২০২১-এর স্বপ্নদ্রষ্টা জননেত্রী শেখ হাসিনা সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা, সজীব ওয়াজেদ জয় বিভিন্ন সেমিনার, কর্মশালায় উপস্থিত থাকতে সদয় সম্মতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর জননেত্রী শেখ হাসিনা তার ‘ভিশন-২০২১’এ যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেন, তখন অনেকে ঠাট্টা-মস্করা করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘হারিকেনের আলোয় কম্পিউটার চালাতে হবে।’ কিন্তু বাস্তবে বেগম জিয়ার রেখে যাওয়া অন্ধকার বাংলাদেশ বিদ্যুতের আলো এবং কম্পিউটার দুটোই পেয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে আলোর পথে যাত্রা ভেস্তে দিতে বেগম খালেদা জিয়া এমন হীন কাজ নেই, যা করছেন না। তা সত্ত্বেও সরকার গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার থেকে চুল পরিমাণ বিচ্যুত হয়নি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করছি। খালেদা জিয়ার নিষ্ঠুরতা-বর্বরতা অতিক্রম করে ডিজিটাল বাংলাদেশের কাজ এগোবে। তিনি বলেন, এবারের ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫’-এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো, প্রথমবারের মতো আমরা ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সংযোজন করেছি। টেলিকমিউনিকেশন সেক্টরে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ প্ল্যাটফর্ম, আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন সংস্থার (আইটিইউ) সম্মানিত সেক্রেটারি জেনারেল হাওলিন মন্ত্রী পর্যায়ের এই বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে কি-নোট স্পীকার হিসেবে উপস্থিত থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয় আপনাদের সঙ্গে তাঁর স্বপ্ন এবং ভাবনা বিনিময় করবেন এবং মালদ্বীপ ও ভুটানের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীসহ সার্কভুক্ত কয়েকটি দেশের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীগণ উপস্থিত থাকবেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫কে আকর্ষণীয় ও অর্থবহ করতে আমরা আইসিটি খাতের আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এ পর্যন্ত ১৯টি দেশের ৮১ বিদেশী বক্তা তাঁদের আগমন এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করছেন। তাঁরা আমাদের কর্মশালা ও সেমিনারসমূহে অংশগ্রহণ করে বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে মূল্যবান পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের এগিয়ে যাওয়া, অর্জন ও সামগ্রিক কার্যক্রম স্বচক্ষে পর্যবেক্ষণ করবেন। এতে এবার ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডকে আমরা আরও বড় পরিসরে নিয়ে যেতে সক্ষম হব। এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে সফট এক্সপো, ই-গবর্ন্যান্স এক্সপো, মোবাইল ইনোভেশন এক্সপো, ই-কমার্স এক্সপো ও বিজনেস প্রসেস ম্যানেজমেন্ট কনফারেন্স নিয়ে মোট ৫টি প্রদর্শনী, সেমিনার, কর্মশালা ছাড়াও আইটি জব ফেয়ার, সিইও নাইট এবং এ্যাওয়ার্ড নাইট অনুষ্ঠিত হবে। এবারের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আমরা সারাদেশের ৭টি বিভাগ থেকে ৭টি হাসপাতাল, ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৭টি জেলা প্রশাসন, ৭টি উপজেলা প্রশাসন, ৭টি পুলিশস্টেশন, ৭টি পৌরসভাসহ একটি বিশ্ববিদ্যালয়, একটি সিটি কর্পোরেশন, পাবলিক সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে একটি প্রতিষ্ঠানসহ সর্বমোট ৬৯টি প্রতিষ্ঠানকে তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ ও সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য যথাক্রমে ৭টি বেস্ট ডিজিটাল হাসপাতাল, ৭টি বেস্ট ডিজিটাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৭টি বেস্ট ডিজিটাল জেলা প্রশাসন, ৭টি বেস্ট ডিজিটাল উপজেলা প্রশাসন, ৭টি বেস্ট ডিজিটাল পুলিশ স্টেশন, ৭টি বেস্ট ডিজিটাল পৌরসভা, একটি বেস্ট ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, একটি বেস্ট ডিজিটাল সিটি কর্পোরেশন, পাবলিক সার্ভিস প্রদানকারী সংস্থাসমূহ হতে ১টি বেস্ট সিটিজেন সার্ভিস এ্যাওয়ার্ড প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। পুরস্কারের জন্য সিটিজেন সার্ভিস এ্যাওয়ার্ড ব্যতীত সকল প্রতিষ্ঠানের মনোনয়ন দেবে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় বা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা। সিটিজেন সার্ভিস এ্যাওয়ার্ডের ক্ষেত্রে মনোনয়ন দেবে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ও বেসিসের জুরিবোর্ড।
×